শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৫ অপরাহ্ন

সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডের জন্য মালিকপক্ষ দায়ী

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ১১৯ বার
আপডেট : বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় মালিকপক্ষের অবহেলা ছিল। এ দুর্ঘটনার জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (৬ জুলাই) বিকালে বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। গত ৪ জুন রাতে দুর্ঘটনার পর ৫ জুন এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তদন্ত শেষে আমরা বুধবার বিকাল ৪টায় প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। বিএম কনটেইনার ডিপোতে কেন আগুন লেগেছিল, কেন বিস্ফোরণ হয়েছিল; এসব কারণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি। আগামীতে এ ধরনের দুর্ঘটনা যাতে রোধ করা যায়; সে জন্য প্রতিবেদনে ২০টি সুপারিশ করেছি আমরা। এসব বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানাবেন বিভাগীয় কমিশনার।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ জাতীয় দুর্ঘটনা রোধে ২০টি সুপারিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, কনটেইনার ডিপো বা অফডক নীতিমালাকে হালনাগাদ করতে হবে, কনটেইনার ডিপোগুলো পরিচালনায় ২৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়; এগুলো এক জায়গায় আনতে হবে। শিল্প এলাকায় আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের পৃথক প্রশিক্ষিত জনবল নিয়োগ করতে হবে।’

বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত ৯ সদস্যের কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন খান, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. আবু নুর রাশেদ, পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার পরিচালক মুফিদুল আলম, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের মেজর আবু হেনা মো. কাউসার জাহান, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম ও চট্টগ্রামের বিস্ফোরক পরিদফতরের পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছিল।

গত ৪ জুন রাতে বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। ঘটনার পরদিন ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও এক মাস পর প্রতিবেদন জমা দেয়।

এদিকে, এ ঘটনায় সরকারি বিভিন্ন সংস্থা আরও পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সম্প্রতি বন্দর কর্তৃপক্ষের করা কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। বন্দর টার্মিনালের ম্যানেজার কুদরত-ই-খুদার নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল।

এ তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের প্রতিবেদনটি ছিল ২৪ পৃষ্ঠার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাত সাড়ে ৮টায় ডিপোর কনটেইনারে ধোঁয়া দেখা গেলেও তখন পর্যন্ত আগুন লাগেনি। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারীদের সেখানে রাসায়নিক থাকার বিষয়টি জানানো হয়নি। ডিপোর নিরাপত্তা বজায় না রেখে সেখানে পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে বিপজ্জনক পণ্যসহ রাসায়নিক রাখা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে প্রতিবেদনে কি বলা হয়েছে, তা নিয়ে পরে কথা বলবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

কাতার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশি নারী খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার লক্ষ্য তাঁদের সক্ষমতা বাড়ানো এবং পেশাগত উন্নয়নে সহায়তা প্রদান। বাসস জানিয়েছে, কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখা হিন্দ বিনতে হামাদ আল থানি মঙ্গলবার দোহায় আর্থনা সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এমন প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন । বাংলাদেশের চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ— জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার, ফুটবলার শাহিদা আক্তার রিপা, ক্রিকেটার সুমাইয়া আকতার ও শারমিন সুলতানা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা ও বাংলাদেশে ক্রীড়া পেশায় পথচলার চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। কাতারের সাবেক শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়াবিদ ও আমিরের বোন শেখ হিন্দ তাঁদের গল্পে আবেগাপ্লুত হন এবং দৃঢ়চেতা মনোভাবের প্রশংসা করেন। নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য ডরমেটরি, জিম ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভাবের কথাও তুলে ধরা হয় বৈঠকে। এ সময় শেখ হিন্দ জানান, বাংলাদেশে নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য একটি বিশেষ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে কাতার ফাউন্ডেশন, যা খেলাধুলার আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম স্থাপন ও সুবিধা সম্প্রসারণ এবং ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখবে। অধ্যাপক ইউনূস জানান, এই ফাউন্ডেশন খুব শিগগিরই গঠিত হবে। তিনি কাতার ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে ডরমেটরি, প্রশিক্ষণ মাঠ, স্বাস্থ্যসেবা, সম্মেলন কক্ষ এবং আন্তর্জাতিক অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পূর্ণ সহায়তা চান। তিনি আরও বলেন, এই ফাউন্ডেশন সার্ক, বিমসটেক, আসিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্য এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চল থেকে আসা নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য স্বল্পমেয়াদি বিশেষ কোর্স পরিচালনায় সহায়তা করবে। অবসরপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস। এই প্রস্তাবকে শেখ হিন্দ স্বাগত জানান এবং সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর আগে অধ্যাপক ইউনূস কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও আমিরের মা শেখ মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সম্প্রসারণের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়। শেখ মোজা দ্রুত বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

এক ক্লিকে বিভাগের খবর