দুই বাংলার ঐতিহ্যের লড়াইয়ে নামছে আবাহনী-মোহনবাগান

দুই দলই বলছে ম্যাচটা প্রায় ফাইনালের মতো। জিতলে এগিয়ে যাবে, হারলে বিদায়! বলা হচ্ছে এএফসি কাপের প্লে-অফ পর্বের কথা। যেখানে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী লিমিটেড মুখোমুখি হচ্ছে ভারতের আরেক জায়ান্ট এটিকে মোহনবাগানের। ফলে দুই বাংলার দুই ঐতিহ্যবাহী দলের লড়াইয়ে মিশে আছে মর্যাদার বিষয়টিও। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টায় কলকাতার যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ম্যাচটি হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ-ভারতের কোনও ম্যাচ মানে অন্যরকম উন্মাদনা। ক্লাব ফুটবলেও তার ব্যতিক্রম নয়। এমনিতে দুই ক্লাব নিজ নিজ দেশে ভীষণ জনপ্রিয়। তাই ঐতিহ্যের পাশাপাশি এই ম্যাচটা নিজেদের শক্তিমত্তা নতুন করে দেখানোর সুযোগও। তাই এমন মাহেন্দ্রক্ষণ হাতছাড়া করতে চাইবে না কেউই।
আবাহনীর সৌভাগ্য যে, প্লে-অফ পর্বে আসতে মাঠে তাদের লড়াই করতে হয়নি। প্রিলিমিনারি রাউন্ডে মালদ্বীপের ভ্যালেন্সিয়া সিলেটে খেলতে না আসায় ওয়াকওভার পেয়ে যায় জীবন-কলিনদ্রেসরা। অন্যদিকে মোহনবাগান শ্রীলঙ্কার ব্লু স্টারকে নিজেদের মাঠে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েই এই ম্যাচ খেলতে এসেছে। ফলে প্রতিপক্ষ যে পরাক্রমশালী তা পরিসংখ্যানই বলে।
তাছাড়া আজকের ম্যাচে বার বার ঘুরে ফিরে আসছে ৫ বছর আগের স্মৃতি। এএফসি কাপে কলকাতার মাঠে এগিয়ে গিয়েও ৩-১ গোলে হারতে হয়েছিল আকাশি-নীল জার্সিধারীদের। আর ঢাকার ম্যাচটি শেষ হয়েছিল ১-১ ড্রয়ে। আজ অবশ্য অতীতের পুনরাবৃত্তি হতে দিতে চাইছেন না আবাহনীর কোচ থেকে শুরু করে খেলোয়াড়রা। ম্যাচটিতে পাখির চোখ রেখে নামার অপেক্ষা।
পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে মোহনবাগান এগিয়ে থাকলেও সাম্প্রতিক ঘরোয়া ফুটবলের পারফরম্যান্সে আবাহনীও ভালো অবস্থানে আছে কিছুটা। আইএসএলে গত মৌসুম ভালো কাটেনি তিনবারের চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগানের। তৃতীয় স্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থেকেছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সে তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে আবাহনী। প্রথম পর্ব লেমসের দল শেষ করেছে দ্বিতীয় স্থানে থেকে। এছাড়া ফেডারেশন কাপের পর স্বাধীনতা কাপও জিতেছে। তাই প্রতিপক্ষ কোচ হুয়ান ফের্নান্দোস সমীহ করছেন জীবন-জুয়েলদের।
দুই দলের বিদেশি সংগ্রহও বেশ উঁচুমানের। নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য সবাই মুখিয়ে আছে বলতে হবে। উভয়ের কিছুটা চোট ও অন্য সমস্যা আছে যদিও। তাতে দোরিয়েল্তন কিংবা রয় কৃষ্ণাদের মতো স্ট্রাইকারদের দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে অন্য যারা আছেন তারাও বা কম কীসে।
আর ডাগ আউটে পর্তুগিজ কোচ বনাম স্প্যানিশ কোচের মগজের লড়াইও থাকছে আলোচনায়। তাতে যেই দল জিতবে, তারাই আগামী মে মাসে ‘ডি’ গ্রুপে বসুন্ধরা কিংস, গোকুলাম কেরালা, মাঝিয়া স্পোর্টস এন্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের সঙ্গে যোগ দেবে। এখন লেমস কিংবা ফের্নাদোসরো নিশ্চয়ই সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না।