স্বামী নোবেলের সঙ্গে ফরহাদও সরাসরি শিমু হত্যায় অংশ নেয়: পুলিশ

চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হত্যায় তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেলের সঙ্গে এসএমওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদও সরাসরি অংশ নিয়েছিল। ফরহাদ নোবেলের বাল্যবন্ধু। তারা দুজনে মিলেই শিমুকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর।
এর আগে শুক্রবার সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবীর বাবুল জানান, আসামিদের রিমান্ড চলাকালেই গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ সময় আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন।
আগে জানানো হয়েছিল, দাম্পত্য কলহের জেরে শিমু স্বামী নোবেল তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে লাশ গুম করায় সহযোগিতা করেন এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ। তবে জিজ্ঞাসাবাদে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে উল্লেখ করে হুমায়ুন কবীর জানান, শিমুকে নোবেল একা শ্বাসরোধ করেননি। এ সময় ঘটনাস্থলে ফরহাদ উপস্থিত ছিলেন। তারা দুজনে মিলেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
ফরহাদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ফরহাদ নোবেলের বাল্যবন্ধু। তিনি ঢাকায় একটি মেসে থাকেন। তার তেমন উপার্জন নেই। তিনি মাঝেমধ্যেই নোবেলের বাসায় আসেন, তারা খুবই ঘনিষ্ট বন্ধু। তিনি সপ্তাহে অন্তত দু’তিন দিন সকাল বেলা নোবেলের বাসায় এসে আর্থিক সাহায্য নেন। ঘটনার দিনও তিনি সকালে নোবেলের বাসায় যান এবং পরে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নোবেল একসময় নেশায় আসক্ত ছিলেন। এখন তিনি কিডনি ও লিভারের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। ফলে শারীরিকভাবে তিনি অনেকটাই দুর্বল। রোববার সকালে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে শিমুকে একা কাবু করতে পারছিলেন না নোবেল। তখন ফরহাদ বন্ধুর পক্ষ নেন। এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে শিমুর মৃত্যু হয়।
পুলিশ বলছে, রবিবার সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে গ্রিনরোডের বাড়িতে শিমুকে হত্যা করা হয়। পরে নোবেল ও ফরহাদ দুটো বস্তায় শিমুর শরীরের দুপাশ মুড়িয়ে মাঝ বরাবর প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে সেলাই করেন। এরপর বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে, বাড়ির দারোয়ানকে নাস্তা আনতে বাইরে পাঠিয়ে বস্তাটি নিচে রাখা নোবেলের গাড়ির পেছনে রাখেন। ওইদিন সকালে তারা লাশ নিয়ে মিরপুরের দিকে যান। কিন্তু সেখানে লাশ ফেলার জায়গা না পেয়ে আবারও ফিরে আসেন। পরে তারা রাতে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ঝোপের ভেতরে ফেলে আসেন।
গত সোমবার দুপুরে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ৪১ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী সপরিবারে ঢাকার কলাবাগান থানাধীন গ্রিন রোড এলাকায় বসবাস করতেন। পরের দিন মঙ্গলবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার সংবাদ সম্মেলনে জানান, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হলেও তারা (খুনি) কিছু চিহ্ন রেখে যায়। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আলমতগুলো জব্দ করি এবং দুজনকে আটক করা হয়।