সিরিজ হারলো বাংলাদেশ

সামান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারলো না। ব্যাটিং ইনিংসেই আসলে হার একরকম দেখা হয়ে গিয়েছিল। তারপরও ঘরের মাঠ ও মিরপুরের পিচ বলে অন্তত সহজে পাকিস্তান ছাড় পাবে না বলে একটু হলেও আশা দেখছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু কিছুই হলো না। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, সব বিভাগেই যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স মাহমুদউল্লাহদের। তাই ৮ উইকেটে হারের সঙ্গে পাকিস্তানের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজও হারলো বাংলাদেশ।
আজ (শনিবার) মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঘুরে দাঁড়ানোর সঙ্গে সিরিজ বাঁচানোর মিশন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু আরও খারাপ পরিণতি বরণ করতে হলো মাহমুদউল্লাহদের। ব্যাটিংয়েই সব শেষ করে রেখেছিল। পাকিস্তানি বোলারদের সামনে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে মাত্র ১০৮ রান করতে পারে। অল্প পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে দুর্দান্ত কিছুর প্রয়োজন পড়লেও আসেনি। এর সঙ্গে ক্যাচ মিসে সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। তাই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১১ বল আগে জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা। সমান্তরালে এক ম্যাচ হাতে রেখে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় পাকিস্তান।
ক্যাচ মিস করেছেন সাইফ হাসান ও তাসকিন আহমেদ। তাসকিনের হাত ফসকে যাওয়াটা একেবারে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে। তবে সাইফের ক্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। ফখর জামানের সহজ ক্যাচটি ছেড়ে বাউন্ডারি ‘উপহার’ দেন ব্যাটিংয়ে ‘গোল্ডেন ডাক’ মারা সাইফ। জীবন পাওয়া ফখর ৫১ বলে খেলেছেন হার না মানা ৫৭ রানের ইনিংস। ২ চার ও ৩ ছক্কায় ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি সাজিয়েছেন ফখর। ৩৯ রান এসেছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাট থেকে। জয় থেকে ১২ রান দূরে থাকতে আউট হওয়ার সময় এই ওপেনার ৪৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে খেলে যান ৩৯ রানের ইনিংস। হায়দার আলী ৮ বলে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
অথচ বোলিংয়ের শুরুটা কিন্তু দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। শুরুতেই আসে উইকেট। আগের ম্যাচে তাসকিন আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছিলেন বাবর আজম। বোলারের নাম পাল্টালেও আউট হলেন একইভাবে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যাটে রানের বৃষ্টি ঝরিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন বাবর। তবে মিরপুরে খেলা দুই ম্যাচেই ব্যর্থ এই ব্যাটার। তাসকিনের বলে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটে বল লাগিয়ে বোল্ড হয়েছিলেন। আজও ব্যাট দিয়ে বল টেনে স্টাম্পে লাগিয়েছেন। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৫ বলে মাত্র ১ রান করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
সাইফ ও তাসকিন দুজনই ক্যাচ ছেড়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই লেগ স্পিনার একটি উইকেট পেয়েছেন। ৪ ওভারে ৩০ রান খরচ করেছেন তিনি। পাকিস্তানের হারানোর অন্য উইকেটটি মোস্তাফিজের।
ব্যাটিংয়ে আরও অবনতি বাংলাদেশের
উন্নতি হবে কী, তা নয়, উল্টো আরও অবনতি! পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আবারও ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে তবু ১২৭ করতে পেরেছিল, আজ (শনিবার) ওই পর্যন্তও যাওয়া হয়নি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে করতে পেরেছে ১০৮ রান।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বোলারদের সামনে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে চাপ বাড়িয়েছে। দুই ওপেনারের ব্যর্থতার পরও বড় স্কোরের সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্ত ও আফিফ হোসেনের ব্যাটে। কিন্তু আফিফের বিদায়ের পর সব এলোমেলো। তাই মাত্র ১০৮ রানের বেশি স্কোরে ওঠেনি।
সর্বোচ্চ ৪০ রান শান্তর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেছেন আফিফ। মাহমুদউল্লাহ ১২ ও নুরুল হাসান সোহান ১১- এই হলো দুই অঙ্কের ঘরে যাওয়া স্কোরগুলো। এছাড়া পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন দুই ওপেনার নাঈম শেখ (২) ও সাইফ হাসান (০)।
পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার শাহীন আফ্রিদি। বাঁহাতি পেসার ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। তার সমান উইকেট নিতে শাদাব খানের খরচ ২২ রান। আর একটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম, হারিস রউফ ও মোহাম্মদ নওয়াজ।