শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৭ অপরাহ্ন

‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগে বৈধ করদাতাদের অনীহা তৈরি হবে’

ভয়েস বংলা প্রতিবেদক / ২২ বার
আপডেট : শনিবার, ২২ জুন, ২০২৪

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বৈধ করদাতাদের কর প্রদানে অনীহা তৈরি হবে বলে মনে করছেন সরকার দলীয় এমপি প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি বলেন, বাজেটে সাদা ও কালোটাকা নিয়ে কথা হয়েছে। একজন করদাতা হিসেবে আমার ৩০ লাখ টাকা থাকলে ৩০ শতাংশের বেশি কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু যিনি গত বছর টাকা দেখাননি, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সেই অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধ করে নিচ্ছেন। এতে করে সঠিক করদাতারা কর দিতে অনিচ্ছা পোষণ করবেন।
শনিবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপরে আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন কুমিল্লা-৭ আসনের সরকার দলীয় এমপি।
প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, আমরা সবসময় কালো ও সাদা টাকা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু ইনফরমাল গ্রে-মানি (কর ফাঁকি সম্পর্কিত) অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি, যার ট্যাক্স দেওয়া হয় না। যাকে কোনও অবস্থানে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সেটা নিয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় কিছু বলেননি। গ্রে-মানি অপ্রদর্শিত আয়ের চেয়েও অনেক খারাপ। একে সংকুচিত না করা হলে অর্থপাচার বন্ধ করা যাবে না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) বলেন, ‘সবচেয়ে ব্যয়বহুল হচ্ছে স্বাস্থ্য খাত। যেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসা উপকরণের দাম আকাশচুম্বী। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ভাষায়— শিক্ষা ও চিকিৎসা থাকা উচিত সরকারি খাতে। একে বেসরকারিকরণ করা হলে শিক্ষা ও চিকিৎসার কোনও গুণগত মানের পরিবর্তন হয় না। তখন সেটা হয়ে যায় একটা পণ্য। এখন পৃথিবীজুড়ে এটা পণ্য হয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে আপনার টাকা আছে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে চিকিৎসা পাবেন না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য দেখার কিছু নেই।’
বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবা উন্নতির জন্য চিকিৎসকদের বেতন-ভাতার পাশাপাশি গবেষণা, আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন প্রাণ গোপাল দত্ত। মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের কারণে নতুন প্রজন্ম প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা করেন তিনি। প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, ‘কোনও একটা অ্যাপ তৈরি করে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে মোবাইল টাওয়ারগুলো নিষ্ক্রিয় করা যায় কিনা? অথবা সেই মোবাইল টাওয়ার যাতে ফ্রিল্যান্সিং বা বিদেশি মুদ্রা অর্জনের বিকল্প পথ ছাড়া অন্যান্য কোনও ক্ষেত্রে ব্যবহার না হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের নজর দেওয়া উচিত। না হয় আমার রোগীর সংখ্যা যেহারে বাড়ছে, ১০ বছর বয়সী থেকে শুরু করে সবার একটাই কথা— কান শোঁ শোঁ করে, ভোঁ ভোঁ করে। কানে শুনি না, লেখাপড়ায় মন দিতে পারি না। তাই এমন কোনও কিছু আবিষ্কার করা উচিত, যাতে করে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত আমাদের তরুণ প্রজন্ম এ প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকবে।’
কালো টাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনার জবাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে, কালো টাকা আমাদের মার্কেটে আছে। এ টাকা কীভাবে ব্যবহার করবেন, সেই উপায় কেউ বাতলায় না, সমালোচনা করে। দেখলাম, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমালোচনা করে বলছেন— এতে নাকি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু উনি বলেন না, ২০০৭ (২০০৬ হবে) সালে ওনার নেত্রী খালেদা জিয়া ৫ শতাংশ কর দিয়ে ১ কোটি ৩৩ লাখ ১৪ হাজার ৭১০ টাকা সাদা করেছেন। এটা বলেন না, এটা তাদের মনে থাকে না। এটা মনে রাখার জন্য বলবো।’
সংরক্ষিত মহিলা আসনে জাতীয় পার্টির এমপি নুরুন নাহার বেগম বলেন, বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকলো। এ সুযোগ নিয়ে অনেক অপরাধী দেশের বাইরে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি দেশে কালো টাকা সাদা করতে পারবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর