সোমবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরের উত্তরের লনের ইউএন গার্ডেনে সেই গাছটির পাশেই বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে তার বাণী সম্বলিত একটি বেঞ্চও উন্মুক্ত করেছেন তিনি। ‘হানি লোকাস্ট’ একটি শোভাবর্ধনকারী গাছ, যা বহু বছর বাঁচে এবং ভালো মানের কাঠ পাওয়া যায়। এ গাছের টিকে থাকার ক্ষমতা ভালো বলে উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন পার্কে এ গাছ লাগানো হয়। বঙ্গবন্ধুর নামে জাতিসংঘ সদরদপ্তরের বাগানে বৃক্ষরোপণ এবং বেঞ্চ উৎসর্গ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্বের সকল শহীদ শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
গাছটি লাগানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা একটা বিশেষ দিন। কারণ আমাদের যুদ্ধ বিজয়ের পর ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ১৭ সেপ্টেম্বর স্বীকৃতি পাওয়ার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে আসেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি (বঙ্গবন্ধু) ভাষণ দেন। সেই ভাষণটা তিনি দিয়েছিলেন বাংলা ভাষায়। এই সেপ্টেম্বর মাসে এত চমৎকার একটা জায়গায় চেয়ার উৎসর্গ করা হল এবং একটা বৃক্ষরোপণ করা হল। শতবর্ষের উপর এই বৃক্ষটা টিকে থাকবে এবং শান্তির বারতা বয়ে বেড়াবে।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা চেয়ার উৎসর্গ করা হল, একটা বৃক্ষরোপণ করা হল। বৃক্ষ এটা পরিবেশও রক্ষা করে, মানুষকে খাদ্য দেয়, মানুষকে ছায়া দেয়, মানুষের জীবনকে রক্ষা করে। আর চেয়ারটার এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়, মানুষ এখানে শান্তিতে বসবে, কিছুক্ষণ আরাম করবে, চিন্তা করবে। আর জাতিসংঘের এ জায়গা বসে থাকলে শুধু নিজের চিন্তা না, বিশ্বের মানুষের কথা চিন্তা করবে। সবচেয়ে বড় কথা জাতির পিতা সব সময় শান্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন, সংগ্রাম করেছেন দরিদ্র মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখের কথা যেমন ভেবেছেন, সারা বিশ্বের যারা ক্ষুধা দারিদ্র্যে জর্জরিত, শোষিত-বঞ্চিত মানুষ, তাদের কথাও তিনি বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার যে লক্ষ্য ছিল, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়। এটাই ছিল উনার জীবনের লক্ষ্য, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলা। কারণ তাতে শান্তি আসবে এবং শান্তির সন্ধানেই তিনি সব সময় ছিলেন, শান্তির জন্যই সংগ্রাম করেছেন। শান্তি ছাড়া কখনো কোনো দেশের উন্নতি হয় না। এটা আমরা নিজেরা খুব ভালো বুঝি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সব সময় উন্নতি হয়। খবর বিডিনিউজ