জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রভাব যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, পারানা নদীটির বর্তমান হালকে তার বড় উদাহরণ হিসেবে দেখাচ্ছেন গবেষকরা। সম্প্রতি খরার কারণে উত্তর আমেরিকার কলোরাডো নদীতে পানি প্রবাহ কমে যাওয়াও একই রকম উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।
ব্রাজিলীয় আদিবাসীদের ভাষায় পারানা মানে হল ‘সাগরের মতো’। নদীটির বিশালত্বই তাকে এই নাম দিয়েছিল, তা স্পষ্ট। কিন্তু এখন, নদীটিতে পানির ধারা হয়ে পড়েছে সংকীর্ণ। তীরজুড়ে তৈরি হয়েছে বালুচরা। ফলে বাণিজ্যিক নৌচলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম, মাছ কমে যাওয়ায় জেলেদের মধ্যে হাহাকার। আর ৪ কোটি মানুষ তাদের সুপেয় পানির উৎস নিয়েও পড়েছে দুঃশ্চিন্তায়। ব্রাজিল থেকে উৎপত্তির পর প্যারাগুয়ে হয়ে আর্জেন্টিনার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আটলন্টিক মহাসাগরে শেষ হয়েছে পারানা নদীটি। এর দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৪৮০ কিলোমিটার। মহাদেশটিতে এর চেয়ে দীর্ঘ নদী কেবল আমাজন, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার।
পারানা নদীতে প্রবাহ কমে যাওয়ায় এর সংলগ্ন খালগুলো এখন পানিশূন্য। ছবি: রয়টার্স
পরিবেশবিদরা বলছেন, বন ধ্বংস আর জলবায়ু পরিবর্তন নদীটিতে এই খরার কারণ। ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চল, যেখানে পারানা নদীর জন্ম, সেখানে এবার গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফল হিসেবে পারানাতে জলপ্রবাহ এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। পারানার এই খরা পরিস্থিতি ২০২২ সাল নাগাদ চলতে পারে বলে পরিবেশবিদরা আভাস দিয়েছে।
তিনটি দেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পারানা আর প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে নামে আরও দুটি নদীর সঙ্গে মিলে যে অববাহিকা তৈরি করেছে, তার নাম রিও দে লা প্লাতা। আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে দেশ তিনটি এই অববাহিকারই অংশ।