সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন

রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ৪৩ বার
আপডেট : বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০২৩

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন বিভ্রান্ত এবং ভুল তথ্যের শিকার না হয় সেজন্য রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সতর্ক থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছে অপপ্রচার সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করা। এটা করা হলে মিথ্যা রটনাকারীরা বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোনও সুযোগ পাবে না।’

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) ইতালির রোমে প্রধানমন্ত্রী তার আবাসস্থলে ইউরোপে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে এসব নির্দেশনা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা কখনোই দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেনি, এমন কিছু লোক এবং কিছু অপরাধী যারা অপরাধ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা দেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, তারা দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছে, তাই তারা হাজার কোটি টাকা দেশের বিরুদ্ধে ব্যয় করতে সক্ষম। তাদের কত আছে! তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি বলেন, এমনও কিছু মানুষ আছেন, যারা দুর্নীতি বা অপরাধ করার মতো নানা কারণে চাকরি হারিয়েছেন, এখন বিদেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি জানি না, তারা এত টাকা কোথায় পায়। কেউ খোঁজ করলে খুব পরিচিত কিছু মুখ দেখতে পাবেন এবং তারা সর্বত্র মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
অনেক সময় বিদেশিরা ভুল তথ্যের কারণে বিভ্রান্ত হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়, তা নিয়ে দু-একটি দেশ ব্যস্ত থাকে। তিনি আরও বলেন, এছাড়া, যারা খুনিদের আশ্রয় দেয় এবং অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত, তাদের কাছ থেকে আমাদের মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়। তিনি বলেন, যারা অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদের মানবাধিকার রক্ষায় তারা ব্যস্ত, কিন্তু নিহত, আত্মীয়-স্বজন বা যারা দগ্ধ হয়েছেন, তাদের কোনও পরোয়া করে না।
প্রধানমন্ত্রী র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, দুর্ভাগ্যবশত যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে নিয়োজিত, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর ফলে তারা আস্থা হারিয়ে ফেলে। এটি মানুষকে তাদের অপরাধপ্রবণতা বাড়াতে উৎসাহিত করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রতিরোধ করেছিল, তাদের উপরই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কিসের জন্য এটা করা হলো? তিনি বলেন, তারা একদিকে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলছেন, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে কথা বলছেন। এই দ্বিচারিতা চলছে বিশ্বময়। প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে তার সরকারের অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী মানবাধিকারের কথা বলতে গিয়ে বলেন, মানবাধিকার রক্ষা কেউ করলে, সেটা আওয়ামী লীগই করে, আর যারা মানবাধিকারের কথা বলে- তারা মানুষ হত্যা করে। দেশের নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা তার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের গুলি করে হত্যা করেছে, তারা এখনও সে দেশে পলাতক রয়েছে। তিনি বলেন, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা খুনিদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়নি। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের সুরক্ষা দেওয়া এবং যারা মানবাধিকার রক্ষা করে, তাদের বিরুদ্ধে যাওয়া— আমি এটিকে একটি খেলা হিসাবে দেখি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যদি মানবাধিকারে বিশ্বাস না করেন এবং তাদের মধ্যে যদি সেই মানবিক দিকগুলো না-ই থাকে, তাহলে কীভাবে তারা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। সূত্র: বাসস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর