অ্যাডিলেডে আজ যে সেমিফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হলো, সেখানে সব খেলোয়াড় ও দর্শকের মধ্যে হেলস নিশ্চিতভাবেই এই মজাটা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেছেন। ভারতের দুর্দান্ত বোলিংয়ের বিপক্ষে ১৬৮ রান তাড়া করতে নেমে ২৪ বল হাতে রেখে ১০ উইকেটের জয়—সেখানে হেলসের একারই অবদান ৪৭ বলে অপরাজিত ৮৬। ৭ ছক্কা ও ৪ চারে সাজানো ইনিংসটি দিয়ে হেলস নিশ্চিতভাবেই ভারতের বোলারদের ‘দোজখ’ উপহার দিয়েছেন। মোহাম্মদ শামি-ভুবনেশ্বর কুমাররা তাতে যেমন পুড়েছেন, হেলসও তেমনি উপভোগ করেছেন। উপভোগ না বলে প্রত্যাবর্তনের সময়টা রাঙাচ্ছেন বলাই ভালো। ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হেলস যে বড় কিছু হবেন, সেটি বোঝা যায় পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালে ট্রেন্ট ব্রিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১২২ বলে ১৭১ রানের সেই ইনিংসে। কিন্তু সময় তো মানুষের এক রকম যায় না।

অথচ হেলসের সেই বিশ্বকাপের আগে বিনোদনমূলক ড্রাগ নেওয়ার ভুলটা করার কথা ছিল না। এমন ভুল যেন না করেন, সেই শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন ২০১৭ সালেই। ব্রিস্টলে এক পানশালার বাইরে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন, সঙ্গী ছিলেন তখন হেলসের বন্ধু বেন স্টোকস।
হেলস সে জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, জরিমানাও দিতে হয়েছিল। সেখান থেকে শিক্ষা নিতে পারতেন। কিন্তু প্রতিভাবানরা যেমন হয়ে থাকেন—আজ যেমন ভালো লেংথের বল ব্যাটে আসায় প্রায় সবই মেরে খেলেছেন—একটু অপরিণামদর্শী, নিজের সামর্থ্যের ওপর বিশ্বাস রাখায় কোনো বাছবিচার থাকে না, হেলসও বোধ হয় সেই অতি আত্মবিশ্বাস থেকে দ্বিতীয়বার ভুলটি করে বসেন।

কী কপাল! জনি বেয়ারস্টো চোটে পড়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে একেবারে শেষ মুহূর্তে জাতীয় দলের দরজা খুলে যায় হেলসের। অবশ্য এর আগে কি সে সময় ইংল্যান্ড দলের সব খেলোয়াড়ের কাছে ফোনে জানতে চেয়েছিলেন, হেলসকে দলে নেওয়া যায় কি না? কেউ তাঁর জন্য সেই দরজা খুলেছে বললে ভুল হয়, হেলস ব্যাটের পারফরম্যান্সে নিজেই সেই শিকল ছিঁড়ে ফিরেছেন। আর ফেরাটাও হলো কী দুর্দান্ত!

হেলসকেও দু-একজন ভালোবাসেন। ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার ডেভিড লয়েড যেমন টুইট করেছেন, ‘অ্যালেক্স হেলস…দায়মোচন…লেগে থাকলে যে বাজে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা যায়, এটাই তার প্রমাণ। হেলসকে দেখে শুধু ক্রিকেটাররা নয়, সাধারণ মানুষও শিক্ষা নিতে পারেন!