মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন

১৫ আগস্ট অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, আমাদের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না: সারজিস

রিপোর্টার / ১১ বার
আপডেট : শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের দিন ধানমন্ডি ৩২-সহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মানুষকে হেনস্তা করা বা মারপিটের যেসব ঘটনা ঘটেছে এগুলোকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ও ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, এসব ঘটনা ‘গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না’। আমরা কোনও অথরিটি না, আমরা হলাম প্রেশার গ্রুপ। আজ শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন তিনি।
সারজিস বলেন, ভিডিওতে দেখেছি আমার বাবার বয়সী একজনকে কান ধরে ওঠবস করানো হচ্ছে, একজনকে বিবস্ত্র করা হয়েছে। লোকজন যাচ্ছেতাই বলেছে। অসংখ্য মানুষের ফোন চেক করা হচ্ছে। আমার মায়ের বয়সী একজনের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। সাংবাদিক ভাইবোনদের ওপর হামলার বিভিন্ন ঘটনা এমন অসংখ্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আলোচনা করেছেন জানিয়ে সারজিস বলেন, তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এসব ঘটনার সঙ্গে কোনও সমন্বয়ক বা সহসমন্বয়কের যুক্ততা পাওয়া গেলে তাকে টিম থেকে বহিষ্কার করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যা করা প্রয়োজন সেটি করা হবে। আমাদের মধ্যে যদি কেউ এ কাজগুলো করে থাকে, তাদের বয়কট করা হোক।
সারজিস বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের কোনও কিছুকে প্রমোট করে না যে কেউ কোনও হোস্টেলে গিয়ে সার্চ করবে, কোনও আবাসিক হোটেলে যাবে, কোনও অধ্যাপককে জোর করে নামিয়ে দেবে। আমরা এগুলো সমর্থন করি না। আমরা কোনও অথরিটি নই, আমরা একটি প্রেশার গ্রুপ। দুর্নীতিবাজ বা ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের অপসারণের জন্য আমরা দাবি তুলতে পারি। কিন্তু এটি করতে বাধ্য করতে পারি না। আমরা পদত্যাগের দাবি তুলতে পারি, কিন্তু কাউকে অপসারণ করতে হবে তদন্তের ভিত্তিতে। তিনি বলেন, ১৬ বছরের নির্যাতন-নিপীড়ন, কথা বলার অধিকার হরণ, দুর্নীতি-নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধেই ছিল আমাদের অভ্যুত্থান। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চেয়েছি যেখানে সবাই কথা বলতে পারবে, মতপ্রকাশ করতে পারবে। গতকাল আমরা এমন বেশ কিছু চিত্র দেখেছি যেখানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল। আমরা জানি না ওই শিক্ষার্থীরা কোন মতাদর্শ ধারণ করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে কথা বললে যাদের অবদান একদম অনস্বীকার্য, যে যতটুকু সম্মান পাওয়ার যোগ্য তাকে ততটুকু সম্মান দিতে হবে। কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছোট করা যাবে না। শেখ মুজিবুর রহমানের যতটুকু সম্মান প্রাপ্য তা তাকে দিতে হবে, জিয়াউর রহমানের যে সম্মান প্রাপ্য তা তাকে দিতে হবে।
লংটার্মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারের কোনও সিদ্ধান্ত নেই বলেও জানান সারজিস। তিনি বলেন, তারা স্থিতিশীল অবস্থায় আসার জন্য অপেক্ষা করছেন। একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ‘ভুয়া সমন্বয়ক’ হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে সারজিস বলেন, এমনও খবর পেয়েছি যে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে নাকি একটি কমিটি হয়েছে যারা মসজিদে গিয়ে মসজিদ কমিটিকে পদত্যাগ করতে বলেছে৷ অথচ আমরা আমাদের জায়গা থেকে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক কমিটি দিয়েছিলাম৷ ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য এবং কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এই মানুষগুলো এমন কিছু কাজ করছে যা অপ্রত্যাশিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি স্থিতিশীল অবস্থায় আসার পর আমরা এই প্ল্যাটফর্মটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের স্পষ্ট বার্তা– যেখানে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টিম আসবে, তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ছাত্রসমাজকে সেখান থেকে সরে যেতে হবে। আপনাদের অবশ্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লাসে ফিরে যেতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর