বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন

হানিয়া হত্যাকাণ্ডে নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ১৮ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা ইরানের রাজধানী তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের নিন্দা করেছে। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধিরা এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইরানকে দায়ী করেছেন।
ইরানের অনুরোধে হানিয়া হত্যার বিষয়ে বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশন আহ্বান করা হয়। অধিবেশন আহ্বানের জন্য রাশিয়া, আলজেরিয়া এবং চীন সমর্থন জানিয়েছিল।
অধিবেশনে বক্তৃতাকালে চীনা রাষ্ট্রদূত ফু কং বলেন, চীন হানিয়াকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানায়। এই ঘটনাটিকে ‘শান্তি উদ্যেগকে নস্যাৎ করার একটি নির্মম প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করে কং জোর দিয়ে বলেন, চীন এই অঞ্চলে অভ্যুত্থানের তীব্রতা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত। কারণ ঘটনাটি এই অঞ্চলকে উত্তেজিত করতে পারে।
একইভাবে জাতিসংঘে আলজেরিয়ার দূত অমর বেন্দজামা বলেছেন, আমরা বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি’। ইসরায়েলের হামলা ছিল ‘সন্ত্রাসী কর্মকান্ড’ যা আন্তর্জাতিক আইন এবং ইরানের সার্বভৌমতক্বে লঙ্ঘন করেছে। তিনি বলেন, এটি নিছক একজন ব্যক্তির ওপর হামলা নয়। এটি কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের পবিত্রতা এবং আমাদের বৈশ্বিক ব্যবস্থার মূলনীতির ওপর একটি জঘন্য আক্রমণ।
বেন্দজামা ইসরায়েলি দখলদার শক্তি দ্বারা সংঘটিত সন্ত্রাসী কর্মকা-ের’ তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও নীরব না থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ‘যেহেতু নিরপরাধ ব্যক্তিদের রক্ত ঝরেছে এবং আন্তর্জাতিক আইন টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। অত্যন্ত জরুরিভাবে আমরা গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি এবং অমানবিক গাজা অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
আলজেরিয়ার সুর মিলিয়ে জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রথম উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি, হানিয়া হত্যাকাণ্ডে র জন্য তার দেশের নিন্দা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আক্রমণের পরিণতি সমগ্র অঞ্চলের জন্য ‘বিপজ্জনক।
পলিয়ানস্কি বলেছেন, হানিয়া হত্যাকাণ্ড একটি গুরুতর আঘাত। তিনি প্রাথমিকভাবে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনার জন্য গাজা উপত্যকায় একটি যুদ্ধবিরতির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বলেন, ইসমাইল হানিয়া এতে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ছিলেন। আমাদের সকলকে এটি বুঝতে হবে।
রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, এই হামলাটি ইরানকে ‘এই অঞ্চলে এমন একটি পরিবেশে টেনে আনার প্রচেষ্টা ছিল যা ইতোমধ্যে ফুটন্ত বিন্দুতে রয়েছে’। তিনি বলেন, উচ্চ-পর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যক্তিত্বদের হত্যার জঘন্য অনুশীলন মধ্যপ্রাচ্যকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।’
সমস্ত পক্ষকে পূর্ণ মাত্রার আঞ্চলিক যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে, পলিয়ানস্কি নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ১৭০১-এর পূর্ণ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রস্তাবটিতে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে শত্রুতা সম্পূর্ণ বন্ধ করার, লেবানন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করার জন্য লেবানন এবং ইউনিফিল বাহিনীকে দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন করা এবং হিজবুল্লাহসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘে মার্কিন উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি রবার্ট উড কাউন্সিলকে বলেছেন, ‘হিজবুল্লাহ এবং অন্যান্য সন্ত্রাসীদের আক্রমণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।
উড জোর দিয়ে বলেন, ইরানকে অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশনগুলো মেনে চলতে হবে এবং নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই ইরানের কর্মের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তিনি আরও বলেন, হানিয়ার মৃত্যুর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পর্ক নেই।
যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ডও জোর দিয়ে বলেন, সহিংসতা বৃদ্ধি কারও স্বার্থে নয়।
শান্ত এবং অবিলম্বে সংযমের আহ্বান জানিয়ে উডওয়ার্ড বলেন, বোমা এবং বুলেট দ্বারা দীর্ঘমেয়াদী শান্তি সুরক্ষিত হবে না। তিনি উল্লেখ করেছেন, হুথি গোষ্ঠী ইসরায়েলের উপর তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে এবং বলেছেন এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
তিনি ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাজ্যের দৃঢ় প্রতিশ্রুতির পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর