সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে পরের দুই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে হতাশার। নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে ২৮ রানে হেরেছে তারা। সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে পরের দুই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। এমন সমীকরণ সামনে রেখেই আজ শনিবার শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের ময়দানে ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত জয়হীন বাংলাদেশ। তবে শনিবার ব্যাটিং-বোলিংয়ে ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’ পারফর্ম করে ইতিহাসটা পাল্টে দিতে প্রত্যয়ী নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়। ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে নাগরিক টেলিভিশনে।
ভারতের বিপক্ষে টিকে থাকার লড়াইয়ে বাংলাদেশের সামনে বড় দুশ্চিন্তার নাম ব্যাটিং। টুর্নামেন্টের একটি ম্যাচেও ভালো ব্যাটিং প্রদর্শনী ছিল না লাল-সবুজদের। সবশেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিং বান্ধব উইকেটেও বাংলাদেশের ব্যাটাররা প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাটে বাংলাদেশ দল কোন রকমে ১৪০ রান করতে পেরেছে। অজিদের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে অধিনায়ক শান্ত অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন। ব্যাটারদের ব্যর্থতার কারণ বুঝতেই পারছেন না তিনি।
সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ অবশ্য আশা করছেন ভারতের বিপক্ষে ভালো ব্যাটিংয়ের। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, (উইকেট) যদিও আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে তবু আসার পর থেকে আমেরিকা ও এখানে (উইন্ডিজ) শুরু দিকে তেমন ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে খেলতে পারিনি। একেক ভেন্যুতে একেক রকম উইকেট, এখানে চ্যালেঞ্জটা ভিন্ন রকম। এখানে ব্যাটারদের সুবিধা বেশি। আমরা আগে ব্যাটিং করলে অবশ্যই অন্তত ১৭০ করতেই হবে। দিনে খেলা, উইকেট ভালো থাকবে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চারবার দেখা হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের। এ চার ম্যাচের কোনওটিতেই বাংলাদেশ জিততে পারেনি। ২০০৯ সালের বিশ্বকাপে ২৫ রানে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আসরে ৮ উইকেটে, ২০১৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত আসরে ১ রানে ও ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত আসরে ডিএলএস মেথডে ৫ রানে হেরেছে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েও জিততে না পারাটা বাংলাদেশের জন্য ছিল বিশাল হতাশার। ওই হারের ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে মাহমুদউল্লাহরা। তাসকিন মনে করেন, বিশ্বের সেরা দলকে হারাতে বাংলাদেশকে করতে হবে বিশেষ কিছু।
এক প্রশ্নের জবাবে তাসকিন বলেছেন, বার্তা একটাই যে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই আমাদের এক্সট্রা অর্ডিনারি পারফর্ম করতে হবে, যদি সেমিফাইনাল খেলতে হয়। কারণ এই ম্যাচ হেরে গেলে তখন আর সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্নও থাকবে না। ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব ম্যাচেই তো সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করি, ভুলের পরিমাণ কম থাকলেই আশা করি ইতিবাচক কিছু হবে।
শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশকে সুপার এইটে নিয়ে এসেছে মূলত বোলাররা। কিন্তু সেই বোলাররাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন। ওই ম্যাচের পর অ্যান্টিগার ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে আরও একটি ম্যাচের আগে চিন্তায় বাংলাদেশের বোলিং। তবে বোলারদের লড়াই করার মতো রান স্কোরবোর্ডে জমা করে দিয়ে আসার দায়িত্বটা দিন শেষে ব্যাটারদেরই। যাদের নিয়ে এখন টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনা বেশি।
এই বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট ভারত দুদিন আগেই বার্বাডোজে আফগানিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়ে অ্যান্টিগায় এসেছে। আজ বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে নিজেদের রাস্তাটা পরিষ্কার রাখতে চায় শিরোপা প্রত্যাশী দলটি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ যদি ভারতকে হারাতে পারে, তাহলে বিশ্বকাপের আরও একটি অঘটনের জন্ম হবে। আর না পারলেও বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই। কেননা প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেতো বলেই দিয়েছেন, সুপার এইটে বাংলাদেশ যা পাবে সেটাই বোনাস!