সার্চ কমিটির বৈঠক শেষে বিশিষ্টজনরা

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের অংশ হিসেবে রবিবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেস কনফারেন্স রুমে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে তৃতীয় বৈঠক করে সার্চ কমিটি। কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিশিষ্টজনেরা সংবাদ মাধ্যমে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে কোনও আপস নেই। আমাদের প্রত্যাশা যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে, তারা আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কাজ করবেন। সৎ, সাহসী ও দুর্নীতিমুক্ত হবেন এবং সাধারণ মানুষের চিন্তাভাবনা অর্থাৎ তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করতে হবে। তারা যেন নিরপেক্ষ ব্যক্তি হন। এসব ব্যাপারে কোনও আপস নেই।
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাদের সবার প্রস্তাব একটাই, আমাদের এমন একটা দেশ তৈরি হবে সে দেশে যারাই রাজনীতি করবে, তাদেরই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হতে হবে। যতদিন সেটা না হচ্ছে, ততদিন আমরা বুঝবো, আমাদের দেশে রাজনীতি সঠিকভাবে হচ্ছে না। আমরা প্রস্তাব করেছি, যিনি নির্বাচন কমিশনার হবেন, তাকে অন্যান্য গুণাবলির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ হতে হবে। আজ যারা উপস্থিত ছিলেন, সকলেই একবাক্যে এটাই বলেছেন। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি যে পরিশ্রম করছে, এটা দেখেও আমরা খুশি। ভালো লাগছে, এই প্রথম আমাদের দেশে এত সুন্দর একটি প্রক্রিয়ায় কাজটা হচ্ছে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে এখনও স্বাধীনতাবিরোধী লোক আছে। তারা কি একজন স্বাধীনতার পক্ষের মানুষকে গ্রহণ করবে? কাজেই সর্বজনগ্রহণযোগ্য কথাটা একটু জটিল। আমরা সার্চ কমিটিকে বলেছি, আপনারা ভয় পাবেন না। আপনারা বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকেন। কে কী বলছে, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব নেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তির কথা জানিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, যদি স্বাধীন নির্বাচনের কথা বলেন তাহলে দলের প্রস্তাব নিতে আমার আপত্তি আছে। কোনও দলের প্রস্তাব আমি নিতে চাই না। নতুন নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন বাছাই নিয়ে অনুষ্ঠিত অনুসন্ধান কমিটির সঙ্গে বৈঠক থেকে বের হয়ে আসবে বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি জানান।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, স্বচ্ছতার জন্য তিন ধাপে নাম প্রকাশ করতে হবে। সার্চ কমিটিতেও স্বচ্ছতা আনতে হবে।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে, তাদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হতে হবে। এ জন্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকা কী ছিল, তিনি কোথায় ছিলেন এবং ৭৫ পরবর্তী ভূমিকাগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। এটিই ছিল মূল কথা। এর সঙ্গে এটাও বলেছি, যাদের নাম প্রস্তাব করা হবে, তারা যেন সৎ, সাহসী হন এবং প্রভাবমুক্ত নির্বাচন উপহার দিতে পারেন। আর কমিশনে যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, সেই প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।