মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

সাবেক এমপির বাড়ি দখল করা সেই সমন্বয়ক মুচলেকায় মুক্ত

রিপোর্টার / ৪ বার
আপডেট : রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের বাড়ি দখল করা সেই ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।
রোববার (৯ মার্চ) রাতে মিস্টি দায় নিয়ে প্রশাসনের কাছে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত হবেন না বলেও অঙ্গীকার করেন। এরপর তাকে ছেড়ে দেয় প্রশাসন।
মিস্টির মুচলেকাপত্রের একটি কপি এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। মিস্টি লিখেছেন, তিনি আইনি অধিকার ছাড়া অন্যের ব্যক্তিগত বাড়িকে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জন নারী-পুরুষের আবাসনে পরিণত করার চেষ্টা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পোস্টের কারণে ক্ষেত্রবিশেষে অস্থিতিশীলতাও তৈরি হয়েছে। এ ধরনের নেতিবাচক ও আইন বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের জন্য মানবিক বিবেচনায় ক্ষমাপ্রার্থী।

মিস্টি বলেন, তিনি নিঃশর্ত মুচলেকা দিচ্ছেন যে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয়— ভবিষ্যতে ফেসবুকে এমন কিছু পোস্ট করবেন না। কারও ব্যক্তিগত বা সরকারি কোনো সম্পদ দখল বা ভাঙচুরসহ অন্য কোনো অপরাধে লিপ্ত হবেন না। এই মুচলেকা ভঙ্গ করলে প্রচলিত আইনে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিলে এর বিপরীতে তার কোনো আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফ এ মুচলেকার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বেআইনি কোনো ধরনের কোনো কার্যক্রমকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে।

এর আগে শনিবার (৮ মার্চ) সকালে ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি সাবেক এমপি জোয়াহেরুল ইসলামের বাসার তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ওই ভবনে ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পুনর্বাসন করবেন বলে ঘোষণা দেন।

এ ঘটনা জানাজানি হলে তা জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা জন্ম দেয়। পরে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ভবনটি দখলমুক্ত করে। টাঙ্গাইল সদরের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান চালায়।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের ২০১৮ সালে টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন থেকে তিনি পলাতক। তার বাড়িটিও প্রায় ফাঁকা পড়ে ছিল। এর মধ্যে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাড়িটিতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। তারপর থেকে বাড়িটিতে আর কাউকে দেখা যায়নি।
এদিকে জুলাই আন্দোলন চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক হিসেবে মিস্টির নাম থাকলেও পরে সেই কমিটি বাতিল হয়েছে। টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে জায়গা হয়নি মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টির। কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, কারও ব্যক্তিগত কোনো অপরাধের দায় সংগঠন নেবে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর