সাবিনা-সানজিদারা সাফ জিতে দেশে উৎসবের উপলক্ষ এনে দিয়েছেন। তাদের কঠোর পরিশ্রমে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব জিতেছে বাংলাদেশ। এই সাফল্যের পেছনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বর্তমান কর্মকর্তাদের অবদানও অনেক। তাদের নিরলস প্রচেষ্টাতে মেয়েরা আজ সাফল্যে ভাসছে। বাফুফের নারী উইং কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ শোনালেন এই সাফল্যের পেছনের গল্প।
২০১২ সাল থেকে মেয়েদের আবাসিক ক্যাম্প শুরু হয়েছে। তখন থেকেই নানাভাবে তাদের সাহায্য করে আসছিলেন কিরণ। মেয়েদের ফুটবলের পেছনে নিজেদের আত্মত্যাগের ঘটনা তুলে ধরে বর্তমান ফিফা কাউন্সিল সদস্য বলেছেন, শুরু থেকে নিজেদের টাকায় মেয়েদের আবাসিক ক্যাম্প করেছি। প্রতিদিন লাখ টাকার ওপরে ব্যয় হতো। তখনও হতোদ্যম হয়নি। জানি একদিন সাফল্য আসবে। তাই কষ্ট হলেও নানাভাবে আমি ও আমাদের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলতে গেলে ব্যয় নির্বাহ করে গেছি।
২০১৪ সালের একটি ঘটনা এখনও মনে পড়ে মাহফুজার। শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে তার। চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে যেতে হয়েছিল। সেখানে কেমোথেরাপি দেওয়ার কথা। কিন্তু পরের দিনই জাপান যেতে হবে মেয়েদের ফুটবলের জন্য। কেমোথেরাপি দিয়েই তিনি ছুটলেন সেখানে।
কিরণ সেই সময়কার বর্ণনা দিলেন এভাবে, আজকের এই সাফল্য এমনিতে আসেনি। আমাদের অনেক ত্যাগ ও পরিশ্রম আছে। আমার যখন ক্যানসার ধরা পড়ে, ব্যাংককে কেমোথেরাপি নিয়ে কোনোমতে জাপান গেছি পরের দিন। সেখানে জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভা ছিল। সেখানে না গেলে মেয়েদের টুর্নামেন্টের জন্য অর্থ ছাড় হতো না। আমরা অনেক পিছিয়ে যেতাম। তখন আমার শরীর অনেক খারাপ। তারপরেও সেখানে গিয়েছিলাম শুধু মেয়েদের ভবিষ্যতের জন্য।
আজ মেয়েরা সাফল্য পেয়েছে। দেশবাসীকে আনন্দের জোয়ারে ভাসিয়েছে। এখন সেই কষ্ট অনেকটা সার্থক কিরণের, একজন ক্যানসার রোগীর দিনকাল কেমন যায় তা বুঝতে পারছেন। অসুস্থ থেকেও আমি কোনও সময় মেয়েদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য পিছপা হইনি। ব্যবসা করি বলেই নিজেদের থেকে তখন অর্থ দিতে পেরেছিলাম। জানতাম, লেগে থাকলে একসময় সাফল্য আসবে। বয়সভিত্তিকের পর এবার সিনিয়রদের আসরে এলো দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব।