সরকারে থেকেই দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে: জি এম কাদের

বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, ধুমধাম করে দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচনের কাজ আগেও দেখেছি। ক্যাসিনো নিয়ে যাদের ধরা হয়েছিল, তারা এখন বহাল তবিয়তে আছে। শেষ পর্যন্ত কী হবে তা আমরা জানি না। সাধারণ মানুষের ধারণা, সরকারে থেকেই রাজনীতিবিদরা দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করে দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার এত ক্ষমতাবান হয়ে গেছে, তারা জবাবদিহির স্তম্ভগুলো পাশ কাটিয়ে যেতে পারছে। জবাবদিহি না থাকার কারণেই দেশে অর্থনৈতিক মন্দা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, নিরাপত্তার অভাব এবং ভালো দেশের আশা থেকে মানুষ নিরাশ হচ্ছে। তিনি বলেন, দুদকের কর্মকাণ্ড নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে। আমরা দেখেছি, দুদক সবসময় বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের দিকে বেশি দৃষ্টি দেয়। অনেক বড় রুই-কাতলা সরকারের সঙ্গে থাকছেন, সরকারের আনুকূল্য পাচ্ছেন, তাদের দিকে দুদকের দৃষ্টি কম। সাধারণ মানুষের ধারণা, দুদক ক্ষমতাসীনদের ধরে ধরে ক্লিন সার্টিফিকেট দেয়।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, রাজনীতিবিদরা দেশের সব কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। রাজনীতিবিদদের হাতেই দেশের স্টিয়ারিং হুইল থাকে। রাজনীতিবিদরা যেদিকে দেশকে নিয়ে যাবেন, দেশ সে দিকেই যাবে। রাজনীতিবিদরা চাইলেই আমলারা দুর্নীতিবাজ হতে পারে। রাজনীতিবিদরা চাইলেই ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদ হয়ে দুর্নীতিবাজ হতে পারে। এটা প্রতিদিন বেড়েই চলছে। তিনি বলেন, উদ্ধার পেতে হলে রাজনীতিবিদদের দিকেই দৃষ্টি দিতে হবে। কাউকেই আইনের ঊর্ধ্বে অবস্থান দেওয়া ঠিক না। আইনের শাসন অর্থ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সরকারের দায়িত্ব ছিল এটা নিশ্চিত করা, যত ক্ষমতাধরই হোক, সবাইকে আইনের আওতায় থাকতে হবে।
জিএম কাদের বলেন, দুর্নীতি হঠাৎ করে দেখা গেছে, হঠাৎ করে শুরু হয়নি। রাজনীতিবিদরাই দীর্ঘদিন ধরে দেশের দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। রাজনীতিবিদরাই দুর্নীতিকে সহায়তা করেছে। আমলাদের দুর্নীতি থেকে রাজনীতিবিদরাই মুনাফা নিয়েছে। তিনি মনে করেন, দুর্নীতি রোধ করতে হলে রাজনীতিবিদদের টার্গেট করতে হবে। কাউকেই আইনের ঊর্ধ্বে রাখা যাবে না। আইনের শাসন নিশ্চিত হলেই জবাবদিহি ও সুশাসন নিশ্চিত হবে। আইনের শাসন ও ন্যায়-বিচারভিত্তিক রাষ্ট্রের জন্যই দেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল। আমরা চাই, সরকার দুর্নীতি রোধ করতে কাজ করবে, এটাই স্বাধীনতার চেতনা।