শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৬ অপরাহ্ন

সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর শঙ্কায় বিজেপি ॥ কংগ্রেসের নাটকীয় উত্থান লোকসভা নির্বাচনে চমক

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ২৯ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০২৪

মোদি ম্যাজিকে ধস। বুথফেরত সমীক্ষার ফলও মেলেনি। ভারতের অষ্টাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের চারশ’ আসনের স্বপ্ন অধরাই থাকছে। টানা দশ বছর পর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর শঙ্কায় গেরুয়া শিবির।
অপরদিকে নাটকীয় উত্থান কংগ্রেসের। গত লোকসভায় ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এই দল মাত্র ৪৪ আসন পায়। তবে এবার পাঞ্জা শিবির এককভাবে একশ’ আসন পাওয়ার পথে রয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটও অভাবনীয় সাফল্য পাচ্ছে।
লোকসভায় ৫৪৩ আসনের মধ্যে সরকার গঠনে দরকার ২৭২ আসন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১৬৮ আসনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে বিজেপি ৯৩ ও কংগ্রেস ৩৮ আসন পায়। আর বিজেপি ১৪৪ ও কংগ্রেস ৫৮ আসনে এগিয়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দম্ভ ধুলোয় মিশে গেছে। বুথফেরত সমীক্ষায় এ রাজ্যে বিজেপি অন্তত ২৭ আসন পেতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়।
তবে পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশিবির মাত্র ১২ আসন পেয়েছে। অপরদিকে মমতার জোড়া ফুল পেয়েছে ২৯ আসন। কংগ্রেস পেয়েছে একটি। উত্তর প্রদেশের বারাণসী কেন্দ্র থেকে বিপুল জয় পেয়েছেন মোদি। ২০১৪ সালে প্রথমবার বারাণসী কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন মোদি। অন্যদিকে গান্ধীনগর থেকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি বরাবরই কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এ নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। এ আসনে বিপুল ভোট পেয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, যা ছাড়িয়ে গেছে তার মা সোনিয়া গান্ধীর ২০১৯ সালের ভোট জয়ের রেকর্ডও। এবার ওয়েনাড আসনেও জয় পেয়েছেন এই কংগ্রেস নেতা। খবর আলজাজিরা, আনন্দবাজার ও এনডিটিভি অনলাইনের।
মোদিকে ২০১৬ সালে করা তারই এক মন্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে খোঁচা মেরেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার আভাস মেলায় তিনি বলেন, এখন ঝোলা গুটানোর সময় হয়েছে। ঝোলা গুটিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে এখন হিমালয়ের দিকে রওনা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর মোদি বলেছিলেন, ‘তারা আমার সর্বোচ্চ কি করতে পারে। আমি একজন গরিব মানুষ। প্রয়োজনে আমি আমার ব্যাগ গুটিয়ে যাব। নির্বাচনের যে ফল এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বিজেপি। এই ফলাফল প্রত্যামোদি ম্যাজিকে ধস। বুথফেরত সমীক্ষার ফলও মেলেনি। ভারতের অষ্টাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের চারশ’ আসনের স্বপ্ন অধরাই থাকছে। টানা দশ বছর পর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর শঙ্কায় গেরুয়া শিবির।
অপরদিকে নাটকীয় উত্থান কংগ্রেসের। গত লোকসভায় ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এই দল মাত্র ৪৪ আসন পায়। তবে এবার পাঞ্জা শিবির এককভাবে একশ’ আসন পাওয়ার পথে রয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটও অভাবনীয় সাফল্য পাচ্ছে।
লোকসভায় ৫৪৩ আসনের মধ্যে সরকার গঠনে দরকার ২৭২ আসন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ১৬৮ আসনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে বিজেপি ৯৩ ও কংগ্রেস ৩৮ আসন পায়। আর বিজেপি ১৪৪ ও কংগ্রেস ৫৮ আসনে এগিয়ে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দম্ভ ধুলোয় মিশে গেছে। বুথফেরত সমীক্ষায় এ রাজ্যে বিজেপি অন্তত ২৭ আসন পেতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়।
তবে পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশিবির মাত্র ১২ আসন পেয়েছে। অপরদিকে মমতার জোড়া ফুল পেয়েছে ২৯ আসন। কংগ্রেস পেয়েছে একটি। উত্তর প্রদেশের বারাণসী কেন্দ্র থেকে বিপুল জয় পেয়েছেন মোদি। ২০১৪ সালে প্রথমবার বারাণসী কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন মোদি। অন্যদিকে গান্ধীনগর থেকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি বরাবরই কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এ নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম দেখা যায়নি। এ আসনে বিপুল ভোট পেয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, যা ছাড়িয়ে গেছে তার মা সোনিয়া গান্ধীর ২০১৯ সালের ভোট জয়ের রেকর্ডও। এবার ওয়েনাড আসনেও জয় পেয়েছেন এই কংগ্রেস নেতা। খবর আলজাজিরা, আনন্দবাজার ও এনডিটিভি অনলাইনের।
মোদিকে ২০১৬ সালে করা তারই এক মন্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে খোঁচা মেরেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার আভাস মেলায় তিনি বলেন, এখন ঝোলা গুটানোর সময় হয়েছে। ঝোলা গুটিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে এখন হিমালয়ের দিকে রওনা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর মোদি বলেছিলেন, তারা আমার সর্বোচ্চ কি করতে পারে। আমি একজন গরিব মানুষ। প্রয়োজনে আমি আমার ব্যাগ গুটিয়ে যাব। নির্বাচনের যে ফল এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বিজেপি। এই ফলাফল প্রত্যাশিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজস্থান রাজ্যের প্রধান সিপি যোশি। তিনি বলেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট আবারও ক্ষমতায় আসবে। তবে এবারের এই ফল তাদের কাছে প্রত্যাশিত ছিল না। রাজস্থানের প্রাদেশিক রাজধানী জয়পুরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিপি যোশি। তিনি বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে আমরা যে ধরনের ফল প্রত্যাশা করেছিলাম, তা হয়নি। তবে আমরা এখনো চূড়ান্ত ফল পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। যত দূর পর্যন্ত ভোট গণনা হয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট, এনডিএ জোট আবারও কেন্দ্রে সরকার গঠন করছে।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে চমকের পর চমক আসছে। চমক থেকে বাদ যায়নি কাশ্মীরও।
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শেখ আব্দুল রশিদের কাছে হেরে গেছেন। যিনি নিরাপত্তা আইনে জেলে বন্দি রয়েছেন। রাজ্যটির বারামুল্লাহ আসনে তারা নির্বাচন করেন। তিনি ছাড়াও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও হেরেছেন।
আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগেই পরাজয় মেনে নেন ওমর আব্দুল্লাহ। ওমরের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া শেখ আব্দুল রশিদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। বর্তমানে তিনি দিল্লির কারাগারে বন্দি আছেন। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ড্যামোক্র্যাটিক পার্টির মেহবুবা মুফতিও অনন্তনাগ-রাজৌরি আসনে মিয়া আলতাফের কাছে পরাজিত হয়েছেন। ভারতের সব জায়গায় প্রার্থী দিলেও কাশ্মীরে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিজেপি।
বলা হয়ে থাকে-উত্তর প্রদেশ যার ভারত তার। এবার এই রাজ্যেও বড় চমক দেখিয়েছে কংগ্রেস জোট।
এ রাজ্যে ৮০ লোকসভা আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৫টিতে এগিয়ে আছে কংগ্রেস জোট। গত নির্বাচনে সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিজেদের দখলে রাখে ক্ষমতাসীনরা।
ভারতে ৪৭ দিন ধরে নির্বাচনী কর্মযজ্ঞ শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার ভোট গণনা শুরু হয়। এবার বিজয়ী হলে জওহরলাল নেহরুর পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসাবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার হ্যাটট্রিক সুযোগ পাবেন নরেন্দ্র মোদি।
ভারতে প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার রয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রায় দুই কোটি ভোটার প্রথমবারের মতো ভোট দেন।
এদিকে বিজেপির এই ফলে প্রথমবার মুখ খোলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পশ্চিমবঙ্গে তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালীঘাটে তার নিজ বাড়িতে গণমাধ্যমের সামনে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় মমতা বলেন, ‘মোদি আপনার ম্যাজিক শেষ। এবার পদত্যাগ করুন। তিনি বলেন, এবার মোদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে দেশ থাকত না।
এনডিএ জোট এখন ‘লস্ট কেস’। মমতা বলেন, ‘মোদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আরও অত্যাচার করত। আর এবার ওরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এবার কি আমরা ছেড়ে দেব? আশা করি ইন্ডিয়ার সদস্যরাও ছেড়ে দেবে না। বরং আমাদের টিম বাড়বে কমবে না।
কংগ্রেসের অধীররঞ্জনের হার প্রসঙ্গে মমতা বলেন, উনি কংগ্রেসের নেতা নন। উনি আসলে বিজেপি। আর বিজেপিকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। বহরমপুরে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের জয় প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘উনি আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন। ভোটে লড়ার ব্যাপারে। আমি পাঠানকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এবার বুথফেরত সমীক্ষা নিয়েও কথা বলেন তিনি। মমতা বলেন, তারা অনেকের মনোবল ভেঙে দিয়েছিল। ওই রিপোর্ট কোথা থেকে হয় জানি।
আমি নিশ্চিত বিজেপির দপ্তর থেকে মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্যই ওই রিপোর্ট তৈরি করেছিল। এবারের লোকসভায় তৃণমূলের ভালো ফল প্রসঙ্গে মমতা বলেন, এই জয় মানুষের জয়, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র জয়। আমি আমার সমস্ত ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গীদের সমর্থন জানাচ্ছি।
একই সময় দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে কংগ্রেস দেশবাসীকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে।
নির্বাচনে ভালো ফলের কথা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছেন।
গত লোকসভায় বিজেপি এককভাবে ৩০৩ আসনে জয় পেয়েছিল। সেবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ ৩৫২ আসনে জয় পায়। তবে ধারণা করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনে বিজেপি জিতলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।
সেক্ষেত্রে এনডিএ জোট শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে। এনডিএ জোটের শরিকদের প্রধান অন্ধ্র প্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম, যারা এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে ১৬ আসনে এবং বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডি-ইউ)। নীতিশ কুমার এ পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছেন ১২ আসনে। এই দুই দল ছাড়া আরও একাধিক এনডিএ শরিকের ওপরে নির্ভর করতে হবে বিজেপিকে।
বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক উৎসব অর্থাৎ ভারতের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শনিবার শেষ হয়। প্রায় দেড়শ কোটি ভারতবাসীসহ বিশ্বের নজর এখন আজকের ফলের দিকে। এই ফল প্রকাশ নিয়ে ভোট গণনা কেন্দ্রগুলোতে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। দিল্লির মসনদ নরেন্দ্র মোদির দখলেই থাকবে, নাকি পরিবর্তন আসছেÑ তা জানতে উদগ্রীব সবাই।
সপ্তম দফা ভোটগ্রহণের পর একাধিক বুথফেরত সমীক্ষার ফল অবশ্য ৭৩ বছর বয়সী মোদির পক্ষেই যায়। কিন্তু বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের নেতারা এসব ফল নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়। কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও দলটির বর্তমান সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে বলেন, এবারের নির্বাচনে বুথফেরত সমীক্ষার ফল মিথ্যা প্রমাণিত হবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি অবশ্য আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, নির্বাচনের পর এসব জরিপের কোনো গুরুত্ব নেই। সোনিয়া বলেন, বুথফেরত সমীক্ষার ফল সম্পূর্ণ বিপরীত হবে। শেষ পর্যন্ত তাই হতে চলেছে। সম্পূর্ণ ফল পেতে বুধবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটের বিশ্ব রেকর্ড করেছে ভারত। দেশটির নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোট দিয়েছেন ৬৪ কোটি ২০ লাখ ভোটার। এর মধ্যে নারী ভোটার ৩১ কোটি ২০ লাখ।
ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজিব কুমার এক ব্রিফিয়ে এসব তথ্য জানান। তার দাবি, এবারের নির্বাচনে যতসংখ্যক ভোটার ভোট দিয়েছেন, বিশ্বের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ইতিহাসে এর আগে কোনো দেশের একটি নির্বাচনে এত ভোট পড়ার রেকর্ড নেই। রাজিব কুমার বলেন, ‘চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৬৪ কোটি ২০ লাখ ভোটার।
এই ভোটারদের মধ্যে ৩১ কোটি ২০ লাখ নারী ভোটার। ভোটের সংখ্যার হিসেবে আমরা বিশ্বরেকর্ড করেছি। এবারের নির্বাচনে ভারতে যত ভোটার ভোট দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং কানাডা, অর্থাৎ জি ৭ জোটভুক্ত সাত দেশের সম্মিলিত ভোটারের চেয়েও বেশি। এই নির্বাচন ভারতীয় ভোটারদের অবিশ্বাস্য শক্তির বহিঃপ্রকাশ। বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো ভারতেও প্রতি পাঁচ বছর পর পর পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়।
চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলেছে সাত ধাপে। ১৯ এপ্রিল শুরু হয়ে ৩১ মে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। দীর্ঘ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এবার দেশটির ছয়টি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল ছাড়াও আড়াই হাজারের মতো প্রাদেশিক রাজনৈতিক দল নিজস্ব প্রতীকে লড়েছেন। নির্বাচনী যুদ্ধে শামিল হয়েছেন প্রায় ১৪ হাজার প্রার্থী।
১৭তম লোকসভা বা দ্বিতীয় মোদি সরকারের মেয়াদ শেষ হবে ১৬ জুন। এর মধ্যে নির্বাচিত জোট বা দলকে সরকার গড়তে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ১০ জুনের মধ্যেই নতুন সরকার শপথ নেবে।
বুথফেরত জরিপের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ॥ শেষ পর্যন্ত কারা বসতে যাচ্ছে ভারতের ক্ষমতায়? রাত ৮টায় এ খবর লেখার সময় ভোট গণনায় এগিয়ে ছিল বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ। তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু সময়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এনডিটিভির লাইভ আপডেট অনুযায়ী, এনডিএ জোট এগিয়ে ছিল ২৯৩ আসনে। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে ছিল ২৩১ আসনে। ইন্ডিয়া টুডের লাইভ আপডেটে দেখা যায়, এনডিএ জোট এগিয়ে ছিল ২৯৩ আসনে। আর ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে ছিল ২৩৩ আসনে।
ভোটের এই হিসাব এনডিএর পক্ষে থাকলেও তিনদিন আগে বুথফেরত জরিপগুলো যা প্রকাশ করেছিল তার সঙ্গে এই ফলের বিস্তর পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। জরিপগুলোতে এনডিএর সহজ জয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হলেও বাস্তবে তা হয়নি।
কাঁদলেন জরিপ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ॥ ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফল আসতে শুরু করার পর এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে কাঁদলেন ভারতীয় জরিপকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ গুপ্তা।
তাঁর প্রতিষ্ঠানের করা বুথফেরত জরিপে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, বিজেপি আবারও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না।
নির্বাচনের ফলাফল সরাসরি সম্প্রচার নিয়ে ইন্ডিয়া টুডের এক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রদীপ গুপ্তাকে। সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে তিনি কান্না শুরু করেন। এ সময় অনুষ্ঠানের উপস্থাপককে তাঁকে সান্ত¡না দিতে দেখা যায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ছড়িয়ে পড়েছে।
ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার বুথফেরত জরিপে বলা হয়েছিল, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এবার ৩৬১ থেকে ৪০১ আসনে জয়ী হতে চলেছে। আর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেতে পারে ১৩১ থেকে ১৬৬ আসন। এ ছাড়া অন্যান্য দল পাবে ৮ থেকে ২০টি আসন।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, এনডিএ জোট ২৯৩ আসনে এগিয়ে রয়েছে। এ ছাড়া ‘ইন্ডিয়া’ জোট এগিয়ে রয়েছে ২৩২ আসনে। অন্যান্য দল ১৮টি আসনে এগিয়ে।
তবে শুধু ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া নয়, প্রায় সব বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস ছিল আবারও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসছে এনডিএ। বিজেপিও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর