মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন

শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ৩১ বার
আপডেট : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪

শেখ হাসিনা ভারতে দীর্ঘকাল অবস্থান করলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সোমবার (১২ আগস্ট) বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে নতুন সরকার সম্পর্কে ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই ব্রিফ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটি একটি হাইপোথেটিক্যাল প্রশ্ন। উনি যদি কোনও দেশে গিয়ে থাকেন, তবে সম্পর্ক নষ্ট হবে কেন। এর কোনও কারণ নেই। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অনেক বড় বিষয়, এটি স্বার্থের সম্পর্ক। বন্ধুত্বও কিন্তু স্বার্থের জন্য এবং স্বার্থ বিঘ্নিত হলে বন্ধুত্ব থাকে না। দুইপক্ষের স্বার্থ আছে। ভারতের স্বার্থ আছে এবং বাংলাদেশেরও স্বার্থ আছে। কাজেই আমরা স্বার্থ বজায় রাখবো এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করবো।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে বিদেশিরা প্রশ্ন করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ একটি প্রশ্নও করেননি। কোনও কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। ব্রিফিংয়ে ৬০ জনের বেশি কূটনীতিক অংশগ্রহণ করেন এবং উপদেষ্টার কাছে নতুন সরকার সম্পর্কে জানতে চান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদেরকে একটি ব্রিফিং নোট সরবরাহ করা হয়।
বিদেশিদের সামগ্রিক মনোভাব অত্যন্ত ইতিবাচক এবং তারাও জানে যে— আজকে, কালকে, সাত দিন, একমাসের মধ্যে এটি সমাধান করা সম্ভব নয় বলে জানান উপদেষ্টা। রাষ্টদূতদের ডাকা হয়েছিল এই সরকারের বিষয়ে ব্রিফ করার জন্য জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছি। তারা আসলে মোটামুটি স্বাগত জানিয়েছে, এগিয়ে এসেছে। তারপরেও আমরা বলেছি যে, আমরা অংশীদারত্ব চাই দ্বিপক্ষীয় ও বহপক্ষীয়ভাবে। এরমধ্যে জাতিসংঘও রয়েছে। তিনি বলেন, যারা এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে, তাদের কিছু দাবি আছে। বৈষম্যহীন একটি ব্যবস্থা তারা চেয়েছে এবং এই সরকারের উদ্দেশ্যও তাই।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকার অনেকের উদ্বেগের জায়গা। আমি বলেছি, বৈষম্য না থাকাটাই মানবাধিকারের অন্যতম উপাদান। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেন, এমন বেশকিছু প্রতিনিধি আছেন আমাদের উপদেষ্টা পরিষদে।’ এর থেকে বোঝাই যায়, মানবাধিকার নিয়ে আমরা অত্যন্ত সিরিয়াস বলে তিনি জানান। নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি শব্দও উচ্চারিত হয়নি। কারণ, আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি যে, এই সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচন করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
বিনিয়োগের বিষয়ে হতাশ না হওয়ার অনুরোধ করেছেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমরা বলেছি যে, তারা যেন হতাশ না হন। কারণ, এটি সাময়িক পরিস্থিতি। এতবড় একটি পরিবর্তনের পরে অল্প সময়ের জন্য এটি হতে পারে। সালেহউদ্দিন সাহেব একজন অত্যন্ত যোগ্য মানুষ এবং তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উনি ব্যাংকিং এবং অর্থনীতি, উভয়ক্ষেত্রে ওনার অভিজ্ঞতা আছে। অর্থনীতিকে তিনি লাইনে নিয়ে আসতে পারবেন বলে আমরা আশা করছি। কাজেই নিরাপত্তা ও লাভ, সবকিছু ভালো হবে। তারা যেন সাময়িক অসুবিধাকে গুরুত্ব না দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশ যে একটি ভালো বিনিয়োগের জায়গা, সেটি বিবেচনা করে।
উপদেষ্টা বলেন, একজন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যুব সম্প্রদায় এত বড় একটা কাজ করলো, আমরা আশা করবো— আগামিতে যে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আসবেন, সেখানে যেন যুবকরা আসেন। আসলেই তো আমাদের মতো পুরনো লোকদের চেহারা দেখতে দেখতে সবাই বিরক্ত হয়ে গেছে। সংসদের দিকে যদি তাকান, তারা ১৯৭০ সাল থেকে শুরু করেছেন এবং এখনও তিনি অবসরে যাবেন না। অনেক ক্ষেত্রে পার্টির ভেতরে ক্ষোভ আছে, জায়গা পাওয়ার জন্য। এটি থেকে মুক্তির প্রয়োজন বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমি আশা করবো, আগামীতে যখন একটি নির্বাচিত সরকার আসবে, সেখানেও যুবকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে, নারীদের প্রতিনিধি থাকবে, শুধু সংরক্ষিত আসনে নয়, বরং সাধারভাবে তারা যেন নির্বাচিত হতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর