রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ভারতীয় সংস্থার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ভারতের ১৯টি সংস্থা ও দুই নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টায় সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। গত বুধবার ( ৩০ অক্টোবর) বিভিন্ন দেশের চার শতাধিক সংস্থার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার অবৈধ যুদ্ধ প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য প্রায় ৪০০ সংস্থা ও ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কোন কোন ভারতীয় সংস্থাগুলোকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এবং কেন?
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় একটি সংস্থা অ্যাসেন্ড অ্যাভিয়েশন ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত রাশিয়া ভিত্তিক সংস্থাগুলোতে ৭০০ টিরও বেশি চালান পাঠিয়েছে ভারতের ওই সংস্থাটি। এছাড়া অ্যাসেন্ড অ্যাভিয়েশনের দুই পরিচালককেও যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। তারা হলেন বিবেক কুমার মিশ্র ও সুধীর কুমার।
এছাড়া ভারতীয় সংস্থা মাস্ক ট্রান্স ২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত রাশিয়ান কোম্পানি এস সেভেন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডকে ৩ লাখ ডলারের বেশি মূল্যমানের যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ ও অন্য সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে।
এছাড়া আরও কিছু ভারতীয় কোম্পানি টিএসএমডি গ্লোবাল প্রাইভেট লিমিটেড ও ফুট্রেভো নামক একটি সংস্থাও রয়েছে। এদের বিরুদ্ধেও ইলেকট্রনিক পণ্য ও প্রযুক্তি এবং সমরাস্ত্র মেরামতের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম রাশিয়ার সংস্থাকে সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে।
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কি?
নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সাধারণত অর্থনৈতিক সম্পর্ক সীমাবদ্ধ বা পুরোপুরি বন্ধ করা হয়। এটি আমদানি-রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য অস্বীকার, সম্পদ স্থগিত, ব্যাংকিং সিস্টেম বা নির্দিষ্ট মুদ্রা ব্যবহারে বাধা ইত্যাদির মাধ্যমে কার্যকর করা হয়।
কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের মতে, নিষেধাজ্ঞা হতে পারে সামগ্রিক বা নির্দিষ্ট। ইরান, উত্তর কোরিয়া, চীন সহ আরও অনেক দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপিত দেশ হয়ে উঠেছে।
নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ও কার্যকারিতা
নিষেধাজ্ঞা সাধারণত একটি দেশ বা সংস্থার ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে। অর্থনৈতিক ক্ষতি তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করবে বলে মনে করা হয়। তবে অনেকেই মনে করেন নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা সীমিত। উদাহরণস্বরূপ: রাশিয়ার অর্থনীতি এখনো অচল হয়নি। কারণ ভারত ও চীনের মতো দেশ রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।