বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২১ অপরাহ্ন

মেট্রোর দুই স্টেশন মেরামতে যেভাবে খরচ হচ্ছে ১৯ কোটি টাকা

রিপোর্টার / ০ বার
আপডেট : বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৪

মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশনের পূর্ণাঙ্গ মেরামতে ১৮ কোটি ৮৬ লাখ খরচ হবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার জানিয়েছিল ৩৫০ কোটি লাগাবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর সচল করা হয় কাজীপাড়া স্টেশন। ৯৮ লাখ ৭৮ টাকা টাকা ব্যয়ে আজ মঙ্গলবার সচল হয়েছে মিরপুর-১০ স্টেশন।
৮৮ দিন পর সচল মিরপুর-১০ স্টেশন পরিদর্শনে গিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, দুই স্টেশন চালুতে সোয়া এক কোটি টাকা লেগেছে। আরও ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা লাগবে। মোট খরচ হবে ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
এ তথ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এক পক্ষের ভাষ্য, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে মেরামতে ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের নামে ৩৩১ কোটি টাকা লোপাট হতো।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার সমর্থকদের ভাষ্য, অন্যান্য স্টেশন থেকে যন্ত্রাংশ খুলে এনে সচল করা হয়েছে মিরপুর-১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশন। তাহলে ১৯ কোটি টাকা কেন ব্যয় হবে, এক স্টেশনের যন্ত্রাংশ অন্য স্টেশনে লাগাতে কেন কোটি টাকা লাগল-এসব প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
মেট্রোরেলের নির্মাণ এবং পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সরকারি কোম্পানি ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুর রউফ এর জবাবে সমকালকে বলেছেন, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও বিজয় সরণি স্টেশনে যাত্রী চাপ কম থাকায় সেখান থেকে কিছু যন্ত্রাংশ এনে মিরপুর-১০ নম্বর লাগানো হয়েছে। কিছু যন্ত্রাংশ ডিপো থেকে আনা হয়েছে। অগ্নিপ্রতিরোধী কাঁচসহ কিছু সরঞ্জাম থেকে স্থানীয় বাজার থেকে কেনা হয়েছে। এতে ৯৮ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ের মেরামতে ক্ষতিগ্রস্ত সব যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে এনে পুনরায় স্থাপন করা হবে। দুই স্টেশনের প্রথম পর্যায়ের মেরামত এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে বিদেশ থেকে মালামাল এনে স্থাপনে সর্বমোট ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। ১ কোটি ১৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ইতিমধ্যে ব্যয় হয়েছে প্রথম পর্যায়ে।
ডিপো এবং অন্যান্য স্টেশন থেকে যন্ত্রাংশ খুলে আনার সমালোচনায় আবদুর রউফ বলেছেন, বিদেশ থেকে মালামাল আনার পর সব আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। বাড়তি হিসেবে কিছু স্পেয়ার পার্টসও আসবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর হয়। ২০ জুলাই ডিএমটিসিএলে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেছিলেন, স্টেশন দুটি মেরামতে বছরখানেক লাগবে।
২৭ জুলাই তখনকার মন্ত্রী বিশেষজ্ঞদের বরাতে ওবায়দুল কাদের বলন, যন্ত্রপাতি এনে এক বছরেও সচল করা সম্ভব হবে না।
ফাওজুল কবির আজ বলেন, বিদেশি সহায়তা লাগেনি, মেট্রোরেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেষ্টায় তিন মাসেই সম্ভব হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্ভাবাসে চলতি অর্থবছরে জিডিপির ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। উপদেষ্টা বলেন, স্টেশন দুটি ৩৫০ কোটি টাকা খরচে বছর ধরে মেরামত করলে জিডিপি বাড়ত। এখন যে প্রবৃদ্ধির হার, তা প্রকৃত উন্নয়ন। সর্বোচ্চ যেখানে ১৮ কোটি টাকা খরচ করা হবে, বাকি টাকা যদি বিদেশে যেত, তখন কী উন্নয়ন হতো?
দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে ছিল দাবি করে ফাওজুল কবির বলেন, শর্ত ছিল সাবেক সচিবই মেট্রো এমডি হবেন। দেশ কি শুধুই সাবেক সচিবদের? এখন যোগ্য ব্যক্তি হলেই হবে।
স্টেশনে হামলাকারীদের বিচার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেছেন, এগুলো ছাত্ররা করেনি, অন্য দুষ্কৃতকারীরা করেছে। কিছু সিসিটিভি ফুটেজ আছে। সেগুলো পুলিশপ্রধানকে দেওয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর