রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:১৮ অপরাহ্ন

মুখ থুবড়ে পড়া অর্থনীতিতে গাজার ৮০ শতাংশ বেকার: আইএলও

রিপোর্টার / ১২ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৪

ইসরায়েল ও হামাসের এক বছরের সংঘর্ষে গাজার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় বেকারত্বের হার এখন প্রায় ৮০ শতাংশ। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থাটি জানিয়েছে, ইসরায়েল ও হামাসের সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে উৎপাদন প্রায় ৮৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ফলে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ এখন দারিদ্রতায় নিমজ্জিত।
গাজা ও পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে আইএলও বলেছে, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডজুড়ে অর্থনীতি ও শ্রমবাজারের অকল্পনীয় ক্ষতি হয়েছে এই যুদ্ধে।
সংস্থাটি বলেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে পশ্চিম তীরে বেকারত্বের গড় হার ছিল ৩৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এর আগের ১২ মাসের তুলনায় অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
কিন্তু যুদ্ধ শুরুর আগে বেকারত্বের হার পশ্চিম তীরে ১৪ শতাংশ আর গাজায় ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে জেনেভা ভিত্তিক এই সংস্থা।
গাজাবাসী হয় তাদের চাকরি হারিয়েছে অথবা অত্যাবশকীয় দ্রব্য ও পরিষেবা ভিত্তিক অনানুষ্ঠানিক কাজের সঙ্গে অনিয়মিতভাবে জড়িত আছে বলে জানিয়েছে আইএলও।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে হামাস। এসময় প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের মধ্যে এখনও প্রায় শ’খানেক মানুষকে গাজায় আটকে রাখা হয়েছে বলে ইসরায়েলের ধারণা।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে গাজার ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ ও বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা হামাস গোষ্ঠীর সদস্যদের নির্মূল করতে সীমিত পরিসরে হামলা চালায় বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাদের দাবি অনুযায়ী, বেসামরিক নাগরিক কখনোই হামলার লক্ষ্য নয়।
জাতিসংঘের স্যাটেলাইট ডাটা অনুযায়ী, গাজার যুদ্ধপূর্ববর্তী অবকাঠামোর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংখ্যাটি ১ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি।
আইএলও বলেছে, গাজা সংকটের প্রভাব পশ্চিম তীরেও ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের চলাচল ও দ্রব্যের পরিবহনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাজারো বিধিনিষেধের বেড়াজালে সেখানকার সাপ্লাই চেইন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পশ্চিম তীরে অভিযান চালানোর পক্ষে সাফাই গেয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীদের প্রতিহত ও ইসরায়েলি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
আইএলও’র আরব দেশগুলোর আঞ্চলিক প্রধান রুবা জারাদাত বলেছেন, ‘গাজা যুদ্ধের প্রভাব প্রাণহানি, মারাত্মক মানবিক সংকট ও শারীরিক ক্ষতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এর করাল গ্রাস আরও ভয়ানক। এই যুদ্ধ গাজার আর্থ-সামাজিক ভিত্তি পুরো নাড়িয়ে দিয়েছে। আর এর প্রভাব পশ্চিম তীরে থেকেও বেশ তীব্রভাবে টের পাওয়া যাচ্ছে। অর্থনৈতিক এই ক্ষতির প্রভাব কয়েক প্রজন্ম ধরে বয়ে বেড়াতে হবে তাদের।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর