রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

মিরাজের স্পিনে দ্বিতীয় দিনে পঞ্চম উইকেটে ২৭৪ রানে অলআউট পাকিস্তান

রিপোর্টার / ১১ বার
আপডেট : শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪

মিরাজের পঞ্চম উইকেটে ২৭৪ রানে অলআউট পাকিস্তান। টস জিতে বোলিং নিয়ে শুরুতেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদ একাদশে ঢুকে প্রথম ওভারেই আঘাত হেনেছেন। বোল্ড করেছেন ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে।
স্কোর: পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৮৬.১ ওভারে ২৭৪/১০ (মীর হামজা ০*, আগা সালমান ৫৪, আবরার ৯, আলী ২, খুররাম শাহজাদ ১২, বাবর আজম ৩১, মোহাম্মদ রিজওয়ান ২৯, আব্দুল্লাহ ০, শান মাসুদ ৫৭, সাইম আইয়ুব ৫৮, সৌদ শাকিল ১৬) বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২ ওভারে ১০/০ (সাদমান ৬*, জাকির ০*)
ইনিংসের প্রথম বলেই মীর হামজার শিকার হতে বসেছিলেন সাদমান ইসলাম। ফোর্থ স্টাম্প বরাবর করা বল আউটসাইড এজ হয়ে গালির দিকে ছুটলেন। দুই হাত দিয়ে বল ধরে রাখতে পারলেন না সৌদ শাকিল। জীবন পেয়ে গেলেও দিনের শেষ ১১ বল খেলতে বেশ ভুগেছেন সাদমান, তার সঙ্গে জাকির হাসান ৩ বল খেলেছেন। শেষ পর্যন্ত সবগুলো উইকেট হাতে রেখে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ, স্কোরবোর্ডে জমা পড়েছে ১০ রান। পাকিস্তানকে তারা অলআউট করেছিল ২৭৪ রানে। মেহেদী হাসান মিরাজ দশমবার পাঁচ উইকেট নিয়ে দিনটা রাঙান।
পাকিস্তানকে অলআউট করার সন্তুষ্টি পেলেও বাংলাদেশ চারটি ক্যাচ ফেলে দেওয়ার মাশুল গুনেছে। বিশেষ করে আগা সালমানকে ফেরাতে না পারায় স্বাগতিকরা শোভনীয় স্কোর জমা করেছে বোর্ডে। রানের খাতা না খুলে জীবন পাওয়া পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ৫৪ রান করেন। এছাড়া সাইম আইয়ুব সর্বোচ্চ ৫৮ ও শান মাসুদ ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন।
দুর্দান্ত বোলিং করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলায় পাঁচ উইকেট নিলেন এই অফস্পিনার। ৮৬তম ওভারের প্রথম বলে আবরার আহমেদ উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বল হাতে নিয়েই স্টাম্প ভেঙে দেন লিটন দাস। প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। মিরাজ ৬১ রান দিয়ে পান পঞ্চম উইকেট। এনিয়ে দশমবার ফাইফার পেলেন তিনি।
বাংলাদেশের পক্ষে তিনটি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। সাকিব আল হাসান ও নাহিদ রানা পান একটি করে উইকেট। তাসকিন আহমেদকে ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন আগা সালমান। চার বল পরই বাংলাদেশি পেসারের তৃতীয় শিকার হলেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। ৯৫ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৫৪ রান করে সাকিব আল হাসানকে ক্যাচ দেন তিনি।
মেহেদী হাসান মিরাজ তার স্পিন জাদু দেখিয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেললেও আগা সালমান একপ্রান্ত থেকে প্রতিরোধ গড়েছেন। তাসকিন আহমেদের বলে ছক্কা মেরে সপ্তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। রানের খাতা না খুলে জীবন পাওয়া পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ৯২ বলে ফিফটি করেছেন। আগের ওভারে মুমিনুল হকের হাত ফসকে জীবন পান মোহাম্মদ আলী। বোলিংয়ে ছিলেন সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি স্পিনার নিজে বল হাতে তাকে ফেরাতে ব্যর্থ হলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আলী। মেহেদী হাসান মিরাজের চতুর্থ শিকার হলেন তিনি, মাত্র ২ রান করে স্লিপ ফিল্ডার সাদমান ইসলামের ক্যাচ হন। ২৪৬ রানে ৮ উইকেট হারালো পাকিস্তান। সালমান আগা ও খুররাম শাহজাদের ছোটখাটো প্রতিরোধ ভেঙে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। নিজের তৃতীয় উইকেট পেলেন বাংলাদেশি স্পিনার। ২৩৬ রানে সাত উইকেট হারালো পাকিস্তান। ৪১ বলে ১২ রান করে সাকিব আল হাসানের ক্যাচ হন খুররাম।
বাবর আজমের পর মোহাম্মদ রিজওয়ানকেও হারালো পাকিস্তান। ২১১ রানে তাদের ষষ্ঠ উইকেট তুলে নেন নাহিদ রানা। ৬৩ বলে ২ চারে ২৯ রান করে শান্তকে ক্যাচ দেন পাকিস্তানি কিপার ব্যাটার। একবার জীবন পেয়েছিলেন সৌদ শাকিল। তার পর বাবর আজমকে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছিলেন। তাকে বেশিক্ষণ থাকতে দেননি তাসকিন আহমেদ। ৪৩তম ওভারে বাউন্সি এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়েছেন শাকিল। লাফিয়ে খেলার চেষ্টা করতে গেলে বল ইনসাইড এজ হয়ে আঘাত করে তার স্টাম্পে। তাতে ২৮ বল খেলা শাকিল ১৬ রানে ফিরেছেন। দ্রুত দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আরও চেপে ধরার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। সাইম আইয়ুবকে ফেরানোর পরের ওভারেই নাহিদ রানার বলে নতুন ব্যাটার সৌদ শাকিলের ক্যাচ উঠেছিল। দুর্ভাগ্য স্লিপে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ সেটা হাতে জমাতে ব্যর্থ হয়েছেন। শাকিল তখন ১ রানে ব্যাট করছিলেন।
৩৩তম ওভারে নাহিদ রানার বলে ক্যাচের আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। রিভিউ নিয়ে ব্যর্থও হয়েছে। তখন ব্যাটার ছিলেন ৯৪ বলে দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি পাওয়া সাইম আইয়ুব। পরের ওভারে সেই ব্যাটারকেই স্টাম্পড করিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পাকিস্তানি ব্যাটার অনেক এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনেন। ফেরার আগে ১১০ বলে ৫৮ রান করেছেন আইয়ুব। তাতে ছিল ২টি চার ও ২টি ছয়। লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে দ্বিতীয় সেশনের তৃতীয় ওভারেই পাকিস্তানের প্রতিরোধ ভাঙেন মিরাজ। শান মাসুদকে এলবিডাব্লিউতে বিদায় দিয়ে ১০৭ রানের জুটি ভেঙেছেন তিনি। প্রথম উইকেট পতনের পর এই জুটিই পাকিস্তানকে দিশা দেখাচ্ছিল। শান মাসুদ অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন। তাতে লাভ হয়নি যদিও। ৬৯ বলে ২ চারে ৫৭ রানে ফিরেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদের আঘাতে পড়লো একটি উইকেট। তার পর আর স্বাগতিক ব্যাটারদের কোনও পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং শুরুর ধাক্কা সামলে দুই ঘণ্টার মতো কর্তৃত্ব করেছে শান মাসুদ ও সাইম আইয়ুব জুটি। তাদের প্রতিরোধেই প্রথম সেশন নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিকরা। প্রথম সেশনে ২৫ ওভার খেলা হয়েছে ১ উইকেটের বিনিময়ে যোগ হয়েছে ৯৯ রান।
প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় দ্বিতীয় দিন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে মনোযোগী হন অধিনায়ক শান মাসুদ। লাঞ্চ বিরতির আগে ৫৪ বলে দশম টেস্ট ফিফটি তুলে নিয়েছেন তিনি। ব্যাট করছেন ৫৩ রানে। আরেক ওপেনার আইয়ুব অবশ্য ধীরে সুস্থে খেলছেন। ৪৩ রানে ব্যাট করছেন তিনি। প্রথম ওভারে বিনা স্কোরেই উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তার পর প্রতিরোধ গড়ে খেলছেন পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ ও সাইম আইয়ুব। ঘণ্টাখানেক ব্যাটিংয়ের পর ১৩তম ওভারে পঞ্চাশ রানের জুটিও পূরণ করেছেন তারা।
টস জিতে বোলিং নিয়ে শুরুতেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদ একাদশে ঢুকে প্রথম ওভারেই আঘাত হেনেছেন। বোল্ড করেছেন ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে। ওভারের শেষ ডেলিভারিটা ছিল দেখার মতো। তাসকিনের সুইং করা বল অনেক ভেতরে ঢুকে পড়েছিল। পা বাড়িয়ে খেলতে চাইলেও শফিক বলের লাইন মিস করেছেন। যা আঘাত করে স্টাম্পের ওপরে। তাতে রানের খাতা না খুলেই বিদায় নিয়েছেন পাকিস্তানি ওপেনার।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টস ছাড়াই প্রথম দিন বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। দ্বিতীয় দিন আগেভাগে শুরু হচ্ছে খেলা। টসও হয়ে গেছে। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টের মতো শুরুতে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে প্রথম দিন খেলা হয়নি বলে আজ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১৫ মিনিট আগে খেলা শুরু হবে। অর্থাৎ ম্যাচ শুরু পৌনে ১১টায়। শেষ দিকে ওভার পুষিয়ে নেওয়ার জন্য বাড়তি ৩০ মিনিট খেলা মাঠে গড়াতে পারে। টস জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত বলেছেন, উইকেট হালকা ভেজা থাকায় বোলিং নিয়েছেন তিনি। কারণ, পেসাররা সহায়তা পেতে পারেন। পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদও বলেছেন, টস জিতলে তিনিও বোলিং নিতেন। সিরিজের প্রথম টেস্টে ঐতিহাসিক এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে প্রথমবার লাল বলের ক্রিকেটে ১০ উইকেটে হারিয়েছে। এখন তাদের সামনে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের হাতছানি। সেটা করতে এই টেস্ট ড্র করলেই চলে সফরকারীদের। আর সমতায় ফিরতে পাকিস্তানের প্রয়োজন জয়।
বাংলাদেশ দলে প্রত্যাশিত একটি পরিবর্তন এসেছে। বাদ পড়েছেন শরিফুল ইসলাম। এসেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। পাকিস্তান একাদশে পরিবর্তন দুটি। পেসার শাহীন আফ্রিদিকে আগেই বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে পেসার নাসিম শাহকেও। তাদের জায়গায় এসেছেন লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ ও বামহাতি পেসার মির হামজা।
বাংলাদেশ একাদশ: সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুমিনুল ইসলাম, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা।
পাকিস্তান একাদশ: আব্দুল্লাহ শফিক, সাইম আইয়ুব, শান মাসুদ (অধিনায়ক), বাবর আজম, সৌদ শাকিল, মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), সালমান আলী আগা, আবরার আহমেদ, মির হামজা, মোহাম্মদ আলী, খুররাম শাহজাদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর