মার্কিন শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়া দেশের শেয়ারবাজারেও

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে সরাসরি কিছুটা প্রভাব ফেলেছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার গত সপ্তাহে দাবি করে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে থাকে। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশকারী বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ ‘ছাড়কৃত পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপের ঘোষণা দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা এক ধরনের উদ্বেগের মধ্যে আছে। বিশ্ব শেয়ারবাজারের টালমাটাল অবস্থা দেখে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ-আতঙ্কে আছেন বলে জানান একাধিক বিনিয়োগকারী। নতুন শুল্ক ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজারে অস্থিরতা এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়।
বিবিসি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ২ এপ্রিল ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পরবর্তী দুই দিনে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারের সূচকগুলোর বড় পতন ঘটেছে। ব্যাপক দরপতনে মার্কিন শেয়ারবাজারের মূলধন ৫ লাখ কোটি ডলার কমেছে।
গত বুধবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর থেকে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৬ শতাংশের বেশি কমেছে। একই অবস্থা নাসডাক ও ডাও জোন্সের মতো সূচকের। ২০২০ সালের পর এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়নি মার্কিন বাজারে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময় অর্থাৎ ২০২০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির পুঁজিবাজারের জন্য এটিই ছিল সবচেয়ে খারাপ সপ্তাহ। রোববার ঢাকার বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, লেনদেন শুরুর পর ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ থেকে ৫০ পয়েন্টে ওঠানামা করে। কমেছে লেনদেন ও শেয়ারের দাম। কমেছে শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোরও সূচক।
টানা ৯ দিনের ছুটি শেষে আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) সরকারি আফিস-আদালত ব্যাংক-বিমা খুলেছে। দরপতনের মধ্যে লেনদেন হচ্ছে শেয়ারবাজারে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে নতুন করে শুল্ক আরোপের বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। আমদানি বৃদ্ধির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘাটতি কমানোর প্রচেষ্টাও চলবে। শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে জরুরি বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য আকস্মিক কোনো বিষয় নয়, ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা আমাদের যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সংযোগ করতে বলেছিলেন। সেই সূত্র আমি নিজে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ওয়াশিংটনে আমেরিকান পররাষ্ট্র দপ্তর, ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টিটিভ, ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার ও অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সুতরাং ব্যাপারটা আকস্মিক নয়, আমরা এর জন্য প্রস্তুত এবং আমরা শিগগিরই কিছু ব্যবস্থা নেব।’