সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন

বেরিয়ে আসছে সব তথ্য! ঝাড়ুদারকে দিয়ে বের করা হতো প্রশ্ন

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ৩০ বার
আপডেট : শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্ন কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িতরা জিজ্ঞাসাবাদে নতুন নতুন তথ্য দিচ্ছেন। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রে পিএসসির সাবেক ও বর্তমান একাধিক সদস্য জড়িত বলে সন্দেহ করছে সিআইডি।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের মূলহোতা সৈয়দ আবেদ আলীর প্রধান সহযোগী ছিলেন অফিস সহায়ক সাদেজুল ইসলাম। তিনি উপপরিচালক জাফর ও সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে প্রশ্ন পেতেন।
সাজেদুলের প্ররোচনায় জাফর ও আলমগীর পিএসসির এক ঝাড়ুদারকে দিয়ে পিএসসি সদস্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের কক্ষের ট্রাংকের তালা ভেঙে প্রশ্নপত্র বের করে নিতেন। ট্রাংকের তালা খোলার পর নতুন তালা লাগিয়ে দিতেন তারা। ওইসব প্রশ্ন আসামি সাখাওয়াত ও সাইমের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বিক্রি করতেন। এ ছাড়া জাফরের মালিবাগে জ্যোতি কোচিং সেন্টার ও আলমগীরের মিরপুরের কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রশ্ন চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বিক্রি করতেন। সাজেদুল আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, তারা ৪৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার চার সেট প্রশ্ন ও রেলওয়ের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (নন-ক্যাডার) নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন।
গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের সব মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এতে তাদের লেনদেন, বিভিন্ন অ্যাপসে মেসেজ আদান-প্রদানের তথ্য পাওয়া যাবে। যার মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডি কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের বক্তব্যে অনেক ধরনের অসংগতি পাওয়া গেছে।
সেগুলো আবার যাচাই-বাছাই করার জন্য ১০ জনকে রিমান্ড চেয়ে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী জানিয়েছে, তিনি রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় ৮০ জনের কাছে প্রশ্ন বিক্রি করেছেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ লাখ করে টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া ৪৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার চার সেট প্রশ্ন পাওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীদের সেগুলো সরবরাহ করেন। তাদের একটি কোচিংয়ে ডেকে প্রশ্নগুলো দিয়ে মুখস্থ করান। পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তিনি সংগ্রহ করার জন্য উপপরিচালক মো. আবু জাফরকে ২ কোটি টাকা দিয়েছেন।
প্রশ্নপত্র ফাঁস করার পর বোর্ড বসাত ফাঁসকারী চক্র। বোর্ডে প্রধানের দায়িত্ব পালন করতেন সৈয়দ আবেদ আলী। তার নেতৃত্বে সিদ্ধান্ত হতো কাকে কোন পদ দেওয়া হবে। টাকার অঙ্কের ওপর নির্ভর করে প্রথম-দ্বিতীয়ও নির্ধারণ হতো পরীক্ষার্থীদের। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আবেদ আলী এমন তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে গত বছরের শেষের দিকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ৩ হাজার ১০০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের অনেকের কাছে ফাঁস করা প্রশ্ন বিক্রি করেছে আবেদ চক্র এবং তাদের চাকরিও হয়েছে বলে জানা গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর