শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন

বাড়ছে আলু-পেঁয়াজ-রসুনের দাম, কমেছে সবজির

রিপোর্টার / ২১ বার
আপডেট : শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪

গত কিছুদিন সবজির বাজার ছিল লাগামহীন। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের জোরালো কোনও পদক্ষেপও চোখে পরেনি। এতে ভোগান্তিতে পরে স্বল্প আয়ের মানুষজন। নানা অজুহাতে বাড়ছিল সবজির দাম। সবজির দামের ঊর্ধ্বগতি হঠাৎ করেই যেন কিছুটা থেমেছে। কিন্তু খুব একটা কমেছে এ কথা বলা যাবে না। সবজির দাম কিছুটা কমতে না কমতেই বাড়তে শুরু করেছে পেঁয়াজ, আলু, রসুনের দাম। বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, যেভাবে দাম বাড়ছে, হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই দুই শ টাকায় পেঁয়াজ কিনে খাবো। পেঁয়াজ-রসুন-আলুর দাম বাড়া নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, সিজন শেষের দিকে বলেই এসবের দাম বাড়ছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। কোনও একটি পণ্যের দাম বাড়ছে তো অন্যটির কমছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে বেশিরভাগ সবজিরই দাম কমেছে। তবে দাম কমলেও এখনও সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। আজকের বাজারে ভারতীয় টমেটো ১৩০-১৫০ টাকা, চায়না গাজর ১৫০ টাকা, শিম ১৪০-১৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০-৮০ টাকা, সাদাগোল বেগুন ১০০ টাকা, কালো গোলবেগুন ১২০ টাকা, শসা ৬০-৮০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করল্লা ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মূলা ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৮০ টাকা, পটল ৬০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা করে।
এসব পণ্যের দাম বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতি কেজিতে ভারতীয় টমেটোর দাম কমেছে ৫০ টাকা, শিমের কমেছে ৮০-১০০ টাকা, কালো গোল বেগুনের ২০ টাকা, উচ্ছের ৪০ টাকা, করল্লার ৩০ টাকা, মুলার ৩০ টাকা, চিচিঙ্গার ১০ টাকা, ঝিঙার ২০ টাকা, কচুর লতির ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার ১০ টাকা, কাঁচামরিচের ৮০ টাকা দাম কমেছে। এছাড়া প্রতি পিসে চাল কুমড়ার দাম কমেছে ২০ টাকা, বাঁধাকপি দাম কমেছে ১০টাকা, ফুলকপির দাম কমেছে ১০ টাকা। আর হালিতে ১০ টাকা কমেছে কাঁচা কলার দাম। তবে কাঁকরোলের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা করে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
বাড়ছে আলু-পেঁয়াজ-রসুনের দাম
বাজারে বেড়েই চলেছে আলু-পেঁয়াজ-রসুনের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহেও সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল ১০ টাকা থেকে ২০। আর আজকে আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা করে। এছাড়া দেশি রসুনের দাম গত সপ্তাহে বেড়েছিল ১০-১৫ টাকা করে কেজিতে। এ সপ্তাহে আবারও বেড়েছে ২০ টাকা।
আজকের বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়। এরমধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১৪০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকা করে। এছাড়া লাল আলু ৬৫ টাকা, সাদা আলু ৬৫ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, দেশি রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ৩২০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব সবজির দাম বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আজ সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজের দাম ১০-২০ টাকা। আর আলুর দাম বেড়েছে ৫ টাকা করে কেজিতে। দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। আর ভারতীয় আদার দাম কমেছে যথাক্রমে ২০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম আছে আগের মতোই।
এদিকে বাজার করতে আসা ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেভাবে দাম বাড়ছে, আমরা হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই পেঁয়াজ দুই শ টাকা করে কিনে খাবো।
বাজার করতে আসা মো. সেলিম ক্ষোভ নিয়ে বলেন, আমাদের তো ৩০০ টাকা করেও খাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। এখন দেখি কত পর্যন্ত উঠে। আমরা আছি বিপদে। আমাদের তেমন কিছুই করার নেই। বিক্রেতারা যে দাম রাখবে সে দামে কিনে খাবো। বড় জোড় কেনার পরিমাণ কমিয়ে দেবো। এছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই।
কমেছে মুরগির দাম
আজকে বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আজকে ওজন অনুযায়ী, ব্রয়লার মুরগি ১৭৫-২০০ টাকা, কক মুরগি ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০-৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪৪-১৪৫ টাকা, সাদা ডিম ১৪৪- ১৪৫ টাকা।
এক্ষেত্রে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ১০ টাকা, কক মুরগির দাম কমেছে ৫ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম কমেছে ৮ টাকা এবং দেশি মুরগির দাম কমেছে ৩০ টাকা।
হেলাল ডিমের আড়ত’ নামে দোকানের বিক্রেতা মো. মনির হোসেন বলেন, আমরা এখন ডিম পাচ্ছি। কিন্তু ডিমের দাম আরও কমানো উচিত। এক্ষেত্রে যারা মূল তাদের ধরতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে। সেখানে ধরলেই বাজারে ডিমের দাম আরও কমে যাবে।
এছাড়া আজকের বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী, রুই মাছ ৩০০-৬০০ টাকা, কাতল মাছ ৪৫০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, কই মাছ ২০০-৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৮০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০-১৪০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪৫০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৫০০-১২০০ টাকা, কাজলী মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ টাকা, মেনি মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, চিতল মাছ ৪৫০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আজকে বাজারে ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১৪৫ টাকা, মাসকলাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৭৫ টাকা, ছোলা ১৩০ টাকা, প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর