সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করল ভারত

রিপোর্টার / ৯ বার
আপডেট : বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫

তৃতীয় কোনো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। এই সুবিধা থাকায় ভারতের স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বাংলাদেশ গত পাঁচ বছর ধরে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানি করে আসছে। ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা না থাকলে এসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ২০২০ সালের ২৯ জুন এক পরিপত্রের মাধ্যমে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশকে।

সিবিআইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনের (এলসিএস) মাধ্যমে বন্দর বা বিমানবন্দরে কন্টেইনার বা বন্ধ ট্রাকে করে পণ্য পরিবহনের জন্য ২০২০ সালের ২৯ জুন জারি করা পূর্ববর্তী সার্কুলারটি বাতিল করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সংশোধিত এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে আগের সার্কুলারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী এরই মধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

৭ রাজ্য নিয়ে ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে প্রতিক্রিয়া

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মতো দেশে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রবাহ মসৃণ রাখতে ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেয় বাংলাদেশকে। তবে ভারতের ব্যবসায়ী, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকরা এই সুবিধা প্রত্যাহার করে নিতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ভারতের দেওয়া সেই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বাতিল করে দেওয়া হলো। তবে এ সিদ্ধান্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধানের অধীনে ভারতের প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। কারণ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিধানে স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নানা টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, আগরতলায় বাংলাদেশি সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে।

দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের নানা দিক তুলে ধরতে। সবকিছুর মধ্যেও থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যেকার বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ককে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাওয়ার আভাস দিচ্ছিল।

এর মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস চীন সফরে গিয়ে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেছিলেন বলে খবর দেয় ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। বলা হয়, অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, উত্তরপূর্বে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনো উপায় নেই। বাংলাদেশ এই অঞ্চলে সমুদ্রের দেখভাল করে।

তার এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান ভারতের রাজনীতিকরা। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা পর্যন্ত অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্যকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান। এর সপ্তাহখানেক যেতে না যেতেই এবার বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর