শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০১:৩২ পূর্বাহ্ন

নারী কমিশনের সুপারিশ সমাজ-রাষ্ট্র ও ধর্ম-নারীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে: এনসিপি

রিপোর্টার / ১১ বার
আপডেট : সোমবার, ৫ মে, ২০২৫

প্রতিবেদন প্রকাশের দুই সপ্তাহ পর নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশসহ ওই প্রতিবেদন নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলছে, এই কমিশনের কিছু কিছু সুপারিশ সমাজ ও রাষ্ট্র এবং ধর্ম ও নারীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।

সোমবার (৫ মে) এনসিপির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন নিয়ে দলটির আনুষ্ঠানিক এই অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের সই করা বিবৃতিটি এনসিপির ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।

দলটি বলছে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করে। ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর গঠিত হয় ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’, যা ২০২৫ সালের ১৯ এপ্রিল প্রস্তাবনা পেশ করে। এর পাশাপাশি সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার জন্য গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’, যার আওতাভুক্ত ছয়টি সংস্কার কমিশন ইতোমধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন ঐক্যমত্য কমিশনের আওতায় ছিল না। ফলে এই বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দলগুলো পূর্ব আলোচনা বা মতামত প্রদানের সুযোগ পায়নি। আমরা লক্ষ্য করছি যে, এই কমিশনের প্রস্তাবনাকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন মাত্রার আলোচনা ও মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারী সংস্কার কমিশনের সদস্যবৃন্দের মধ্যে সমাজের সকল অংশের নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়েছে বলে এনসিপি মনে করে না। সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সকল সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অখণ্ডতাকে সম্মান জানিয়ে এবং সকল নাগরিকের বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নীতি প্রণয়ন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। নারী কমিশনের কিছু সুপারিশ বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে রাষ্ট্রের দ্বান্দ্বিক অবস্থান তৈরি করে সমাজ বনাম রাষ্ট্র এবং ধর্ম বনাম নারী মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, যেসব বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোতে সকল প্রতিনিধিত্বশীল অংশীজনদের সাথে গঠনমূলক আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন।

প্রস্তাবনার সমালোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন সমাবেশ থেকে নারীদের প্রতি প্রকাশ্যে যে শ্লেষাত্মক ও অমর্যাদাকর বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এনসিপি। বাংলাদেশের প্রতিটি সংগ্রামে তো বটেই বিশেষত জুলাই আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সকল শ্রেণি, পেশা, ধর্ম, বর্ণের নারীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ, নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের ফলে পনের বছরের জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদ থেকে জাতির মুক্তি ঘটেছে। এই ইতিহাসকে আমরা ভুলবো না।

এতে আরো বলা হয়, এনসিপি নারীদের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার ও সামাজিক সংগ্রামকে গভীরভাবে উপলব্ধি করে এবং নারীর মর্যাদা ও অধিকার বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। জাতীয় নাগরিক পার্টি নারীদের সাথে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর