ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি পরিদর্শন করলেন কাদের সিদ্দিকী

সরকার পতনের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশে একটা বিপ্লব ঘটে গেছে। আমি ছাত্রদের আন্দোলনকে অভিনন্দন জানাই। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা কোনোমতেই এক কথা নয়। বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা, স্বাধীনতার মহানায়ক; আজ ৩২ নম্বরের বাড়ি যেভাবে জ্বলতে, পুড়তে, ধ্বংস হতে দেখলাম। তার আগেই আমার মৃত্যু হলে অনেক ভালো হতো।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে অনেক অন্যায় কাজ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু শেখ মুজিব তো কিছু করেননি। তিনি বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেছেন। আজকের এই ধ্বংসযজ্ঞ ভবিষ্যৎ ইতিহাসে বাঙালি জাতির জন্য একটি কলঙ্ক হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধু যুগ যুগ বেঁচে থাকবেন। তার সম্মান যুগযুগ অক্ষত থাকবে। যারা এই অপকর্ম করছে, তাদের বিচার একদিন হবেই হবে।
আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করুন, সংখ্যালঘুদের জীবন রক্ষা করুন। আওয়ামী লীগ করলেই দোষের কিছু নয়, কোনও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর গায়ে হাত দিবেন না। দেশে শান্তি স্থাপন করুন, আপনারা জয়ের তিলক কপালে পরুন। আমি চাই এখন থেকে দেশে শান্তি ফিরে আসুক। তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। আমি তাকে অভিনন্দন জানাই। তার এখন এক মুহূর্তও প্যারিসে বসে থাকার কোনও মানে হয় না। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা আনতে পারলে তারও পরিণতি এমন হবে।
সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী। তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা এখন তাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।’ সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, কাজটা মোটেই ভালো নয়। আন্দোলনকারীদের এটার দায়িত্ব নেওয়া দরকার। প্রশাসনে যারা আছেন, তাদেরও এর দায়িত্ব নেওয়া দরকার, বিশেষ করে সেনাবাহিনীর এর দায়িত্ব নেওয়া দরকার।
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে যেভাবে দেশ ত্যাগ করলেন, এখন দলটির নেতাকর্মীদের কী হবে— এ বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কিচ্ছু হবে না। বঙ্গব্ন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে বিপর্যয় এসেছিল, এটা তার চেয়েও বড় বিপর্যয় নয়। হ্যাঁ, কিছুটা সময় তাদের ভয় যাবে, কষ্ট যাবে। কিন্তু এটাতে একেবারে কেয়ামত হয়ে যাবে না।