মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন

দুই কন্যার মন্ত্রিত্বে উচ্ছ্বসিত বিলেতের বাংলাদেশিরা

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ২১ বার
আপডেট : বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিক ও রোশনারা আলী প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত বিলেতের বাঙালিরা। স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন তারা। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
নিউহাম কাউন্সিলের সিভিক মেয়র রহিমা রহমান ও কাউন্সিলার মুজিবুর রহমান জসীম বলেন, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য সত্যিই একটি গর্বের মুহূর্ত। কারণ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভায় দুজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এমপি নিয়োগ পেয়েছেন। রাজনীতির মূলধারায় তাদের নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রম আমাদের সবার জন্য অনুপ্রেরণা।
ক্রয়েডন কাউন্সিলের লেবার গ্রুপের লিডার ও কাউন্সিলার মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, আসুন আমরা এই মাইলফলকটি উদযাপন করি এবং টিউলিপ সিদ্দিক ও রোশনারা আলীর প্রতি আমাদের সমর্থন প্রদর্শন করি। কারণ তারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ইউকে বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় ও পাকিস্তানি কমিউনিটি বহু আগেই ব্রিটেনে মন্ত্রিত্ব পেয়েছে। রোশনারা আলী ও টিউলিপ সিদ্দিকের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া দেরিতে হলেও নিঃসন্দেহে ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের বড় অর্জন।
টিউলিপ ও রোশনারাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নেতারাও। ড্যাগেনহাম অ্যান্ড রেইনহামের কনজারভেটিভ পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান মাহদী বলেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুজন এমপিকে ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রিসভায় দেখে আমি ব্যক্তিগতভাবে আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত ও গর্ববোধ করছি। তিনি বলেন, আমরা এর আগে দেখেছি, লন্ডনের মেয়র পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত, প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত, যা সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য অনেক অনুপ্রেরণার উৎস ছিল। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনও এমপি কখনও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাননি। এ হিসেবে এটি আমাদের জন্য নতুন এক ইতিহাস। যদিও আমি কনজারভেটিভ পার্টির অ্যাক্টিভিস্ট। তারপরও আমি একইভাবে আনন্দিত বাংলাদেশিদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ায়। মনে হয় এই অনুপ্রেরণা বাকি সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
বাংলাদেশিদের দ্বারা পরিচালিত স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেইলি ডেজলিং ডনের কমিউনিটি এডিটর সাংবাদিক ফখরুল ইসলাম খসরু বলেন,সেই দিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন আমরা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লন্ডনের মেয়র দেখব, প্রধানমন্ত্রী দেখব। ছোট ছোট আশা ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন দিয়েই শুরু হয়। কখনও দেরিতে হয়, আবার কখনও তাড়াতাড়ি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়। আমরা সেই আশায় দিন গুনছি। যেদিন বাংলাদেশি রাজনীতিকদের ব্রিটিশ রাজনীতির উচ্চ আসনে দেখতে পাবো। রুপা হকের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে রাজনীতিতে আসা টানা চারবারের এমপিও আগামীতে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন বলে আমরা আশাবাদী।
রোশনারা আলী ও টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সরকারে স্থান পাওয়ায় তাদের অভিনন্দন জানিয়ে লন্ডনের ব্রিকলেনের বাংলাটাউনে বুধবার আনন্দসভার আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক দর্পণ সাময়িকীর সম্পাদক রহমত আলী ব‌লেন, রোশনারা আলী ও টিউলিপি সিদ্দিক মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়ার আনন্দে এই আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, লেবার পার্টির নেতৃত্বাধীন যুক্তরাজ্য সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় ট্রেজারি বিভাগের পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি (ট্রেজারি বিভাগের অর্থমন্ত্রী এবং সিটি মিনিস্টার) হয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। লেবার পার্টির টিকিটে টানা চতুর্থবার নির্বাচিত এই এমপি এবার হ্যামস্টেড ও হাইগেট আসন থেকে ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। এর আগে ২০১৫, ২০১৭ ও ২০১৯ সালে হ্যামস্টেড ও কিলবার্ন আসনে টানা তিন বার এমপি নির্বাচিত হন তিনি।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটে‌নের প্রথম ও পাঁচবারের এমপি রোশনারা আলীকে গৃহায়ন, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এবার তিনি লন্ডনের বাংলাদেশি-অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনি আসন থেকে ১৫ হাজার ৮৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর