জিআই পণ্যে স্বীকৃতি পেল টাঙ্গাইলের জামুর্কীর সন্দেশ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জামুর্কীর সন্দেশ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য তথা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রায় শত বছর আগে কালিদাস প্রথম এই সন্দেশ তৈরি ও বিক্রি শুরু করেছিলেন এই এলাকায়। তার পরিবার এই পণ্যটি এখনো বিক্রি করে যাচ্ছে।
গত ১৭ ডিসেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) প্রকাশিত জিআই জার্নালে জামুর্কীর সন্দেশকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বুধবার বিশ্ব মেধা সম্পদ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের হাতে জিআই সনদ হস্তান্তর করা হয়।
একই জার্নালে ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলার বীজ ও গাছকেও জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ডিপিডিটি। এই দুটি পণ্যের জিআই স্বীকৃতির ফলে দেশে এখন জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬টিতে।
স্থানীয়রা জানান, মির্জাপুর উপজেলার জামুর্কীতে প্রথমে কালিদাস সন্দেশের ব্যবসা শুরু করেন প্রায় শত বছর আগে। স্থানীয়ভাবে এটি ‘কালিদাসের সন্দেশ’ হিসেবে খ্যাতি পায়। গুণগত মান বজায় রাখায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এই সন্দেশের খ্যাতি ভারতের কলকাতাসহ উপমহাদেশে পরিচিতি পায়।
কালিদাস না থাকলেও এখনো কালিদাসের সন্দেশ নামেই এই সন্দেশ বিক্রি হয়ে আসছে জামুর্কীতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে সাদামাটাভাবে স্থাপিত দোকানটিতে। কালিদাসের প্রয়াণের পর তার ছেলে দোকান পরিচালনা করতেন। এখন দোকানটি পরিচালনা করছেন কালিদাসের নাতি সমর সাহা।
জামুর্কীর কালিদাসের সন্দেশ জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় সন্দেশ ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে। পাকুল্যা গ্রামের বাসিন্দা তপন কুমার শেঠ বলেন, আমাদের এলাকার পণ্য জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আনন্দিত।
মির্জাপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের চেষ্টায় মির্জাপুরবাসীর চাওয়াকে সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি এই এলাকার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান অতিথি শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের কাছ থেকে এই সন্দেশের জিআই নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শরীফা হক। তিনি বলেন, আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জিআই সনদ দেওয়া হয়েছে জামুর্কীর সন্দেশকে। এই স্বীকৃতি একটি বড় অর্জন।