রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন

বৃষ্টিতে ডুবলো রাজধানীর সড়ক-অলিগলি

ভয়েস বংলা প্রতিবেদক / ২১ বার
আপডেট : বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪

আজ (১২ আষাঢ়) সকাল থেকেই ঢাকার আকাশ ছিল মেঘলা। বৃষ্টি হবে- সেই পূর্বাভাস আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। পূর্বাভাস সত্যি করে নেমেছে বৃষ্টি। সকালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও বেলা গড়াতেই এর তীব্রতা বেড়েছে। একনাগাড়ে ঘণ্টা দুয়েকের মতো বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে। এই বৃষ্টিতেই ডুবেছে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলি।
বুধবার (২৬ জুন) বৃষ্টিতে রাজধানীর নয়াপল্টন, শান্তিনগর, মালিবাগ, সায়েদাবাদ, শনিরআখড়া, পুরান ঢাকার সদরঘাট, সূত্রাপুর, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট নতুন রাস্তা, ধানমন্ডি, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড, মোহাম্মদপুর ও বসিলার কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলি পানিতে ডুবে গেছে।
বৃষ্টি থামার পর সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর মানুষ। রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকা থেকে রিকশায় নয়াবাজার ব্যবসার কাজে আসেন শাহাদাত হোসেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, নয়াপল্টন এলাকায় বৃষ্টিতে প্রায় হাঁটু সমান পানি হয়েছে। জুতা হাতে নিয়ে প্যান্ট হাঁটুর ওপরে তুলে হাঁটতে হয়েছে। স্বাভাবিক সময় তো ওই এলাকা থেকে হেঁটে মোড়ে এসে বাসে উঠতাম। কিন্তু নোংরা পানির কারণে রিকশা নিতে হয়েছে। অন্যান্য সময় যে রিকশা ভাড়া ৮০ টাকা নিতো সেটা দে’ড়শ টাকা দিতে হয়েছে।
এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, নয়াপল্টন এলাকা পেরিয়ে যখন গুলিস্তান আসলাম তখন এদিকে তেমন পানি ছিল না। তবে বংশাল এলাকা আসতেই আবার সেই পানি। রিকশাচালক রিকশা চালাতে পারছিলেন না পানির কারণে। আরেকদিকে তীব্র জ্যাম। এদিকে বংশাল সড়কে আগে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছিল, সেটা এখনও শেষ হয়নি। জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় উঁচু নিচুতে একবার রিকশা থেকে পড়ে গিয়েছি। ঘণ্টাখানেকের এই বৃষ্টি সবাইকে একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে।
এদিকে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার অলিগলি ডুবে যাওয়ায় ড্রেনের ময়লা আবর্জনা সব ভেসে উঠেছে গলিতে। ময়লাযুক্ত পানি পেরিয়ে নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফরান। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, সকালের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ছাতা নিয়ে ক্লাসে গেলাম। ক্লাস শেষে বাসায় ফিরতে দেখি গলিতে পানি জমে গেছে। ড্রেনের সব ময়লা ওপরে ভাসছে। কোনোমতে নাক চেপে ধরে প্যান্ট উঁচু করে বাসায় ফিরলাম।
পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। বছরের পর বছর আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পত্রপত্রিকায় এই ঘটনার সব সময় দেখানো হয়, কিন্তু এর কোনও সমাধান হয় না। এক পশলা বৃষ্টিতেই অলি গলিতে পানি জমে যায়। সেখানে ঘন্টাখানেক বা দিনব্যাপী বৃষ্টি হলে ভোগান্তির সীমা থাকে না। এই ভোগান্তি থেকে কবে পুরান ঢাকাবাসী নিস্তার পাবে জানা নেই।
এদিকে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত পানি এড়াতে অনেকেই পায়ে হাঁটা বাদ দিয়ে রিকশায় গন্তব্য যাচ্ছেন। সেই সুযোগে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন রিকশাচালকরা। রিকশাচালকের দাবি, দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। রাস্তায় পানি জমে যাওয়ায় রিকশা চালাতে বেশি কষ্ট হয়। তাই বলে কয়ে ১০/২০ টাকা বাড়তি নেয়।
স্বল্প সময়ের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতার কথা বলা হয়েছে সেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা নয়, জলজট ছিল। ম্যানহোলের ঢাকনা ও ড্রেনে পলিথিন, প্লাস্টিক আটকে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করেছিল। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা এরইমধ্যে সেগুলো পরিষ্কার করেছেন। খোঁজ নিয়ে দেখেন সেখানে আর পানি নেই। তিনি বলেন, কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা যে সৃষ্টি হয়নি তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারণ ওসব এলাকায় উন্নয়নকাজ চলমান আছে। তাছাড়া ডিএসসিসি মেয়র কিন্তু নিজেই ওসব এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণ এর আগে জানিয়েছেন। আমরা আশাবাদী, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর