গফরগাঁওয়ে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত বোরো ক্ষেত দিশেহারা কৃষক

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ৭ হেক্টর এর বেশি জমিতে ১৫ ইউনিয়নে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। প্রায় ১৫টি ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে এই ব্লাস্ট রোগ। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
দুর থেকে দেখলে মনে হবে ধান গাছ গুলো পেকে সোনালী রং ধারণ করেছে। কিন্তু কাছে গেলেই চোখ কপালে উঠে যায়। পাকা নয়, ধান গাছ গুলো যেন পুড়ে ঝলসে গেছে। গাছের সব ধানের শীষ সাদা হয়ে ধান চিটা হয়ে যাচ্ছে। এ রোগের নাম ‘নেক ব্লাস্ট’। ঘাড় পঁচা রোগের কারণেই এমনটা হচ্ছে বলে দাবি কৃষি কর্মকর্তাদের। অপরদিকে চাষিরা বলছেন বারবার কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। তাদেরকে কৃষকের কাছে পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ২০ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। গত বছর এর লক্ষমাত্রা ছিল ২০ হাজার ৮শ’ ৩৫ হেক্টর। এ বছর সেচ সংকট সহ ৫ শতাধিক হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ কম হয়েছে।
উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের ধোপাঘাট গ্রামের কৃষক নিজাম উদ্দিন, মাফুজ, কাশেম, সেলিম, পুইলাইদ গ্রামের দবির উদ্দিন, হারেজ, কাশেম, পাঁচুয়া গ্রামের জয়নাল ফকির, দুলাল, হায়দার, আমিরুল বলেন, পৌরশহরের ৪নং ওয়ার্ডসহ বোরো আবাদ শুরুর পর থেকেই কৃষি অফিসের কোনো লোক মাঠে আসেনা। তাদেরকে ফোন করেও মাঠে আনা যায় না। কোনো বাজারে বা চায়ের দোকানে বসেই তারা পরামর্শ দিতে চাই। জমি দেখতে বললে উত্তেজিত হয়ে যায়।
নিজাম উদ্দিন বলেন, ১০ কাঠা জমিতে ব্রি ২৮, ব্রি ৫৮ ধান চাষ করেছি কিন্তু কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে বারবার ধর্না দিয়েও কোনো সু-ফল না পাওয়ায় আমার প্রায় ৫০/৬০ মন ধান নষ্ট হয়ে গেল। মাঠের কৃষি অফিসাররা বেতন নেয় কিন্তু কৃষকের কাছে যায় না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা কৃষি অফিস থেকে ব্লাস্ট রোগের সতর্র্কীকরণের জন্য অনেক আগে থেকেই উঠান বৈঠক করে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। বলেছি যারা ব্রি ২৮, ব্রি ৫৮ ধান করেছেন তারা সতর্ক থাকবেন। তাদেরকে বিভিন্ন রকম পরামর্শ দিয়েছি। তারপরও যে সকল জমিতে এ রোগ দেখা যাচ্ছে তা তদারকির জন্য উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জনবল সংকট, যানবাহন সংকটের কারণেই ১৫টি ইউনিয়নে কৃষকদের জমি তদারকি করা সম্ভব হয় না।