কাশ্মির নিয়ে উত্তেজনা: পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর স্থগিত

কাশ্মির ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দারের বাংলাদেশে আসন্ন সফর স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে ইসাক দার নিজেই এই সফর স্থগিতের অনুরোধের কথা জানিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বার্তায় সফরটি স্থগিতের কথা বলা হয়েছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) দুই দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসাক দারের ঢাকায় আসার কথা ছিল। গত ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের ঢাকা সফরের সময় মন্ত্রী পর্যায়ের এ সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়।
কাশ্মির— দশকের পর দশক ধরে ভারত-পাকিস্তান সংকটের কেন্দ্রবিন্দু
কাশ্মিরের পহেলগাম হামলা নিয়ে ভারতের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও তার জবাবে পাকিস্তানের পালটা ব্যবস্থার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন ইসাক দার। চলমান পরিস্থিতির কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে বাংলাদেশ সফরের বিষয়টিও।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ইসাক দার বলেন, ভারতীয় কর্মকর্তাদের তলব করে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার বাংলাদেশ সফর পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যেন আমরা কূটনৈতিক তৎপরতায় মনোযোগী হতে পারি।
পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বার্তায় বলা হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দার আগামী ২৭-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করতে পারছেন না। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এ সফরের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বার্তায়।
এপ্রিলে ঢাকায় আসতে পারেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী: তৌহিদ হোসেন
এর আগে এ মাসের মাঝামাঝিতে ঢাকায় দেড় দশক পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক থেকেই ইসাক দারের ঢাকা সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছিল, তার ঢাকা সফরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা ছিল।
এদিকে পহেলগাম হামলা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছেই। ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত সিন্ধু চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা বাতিল, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার আদেশসহ নানা পদক্ষেপ নেয়।
পরে পাকিস্তানও বসে থাকেনি। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ, আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ ও ভারতীয় নগরিকদের জন্য ভিসা স্থগিতসহ নানা পদক্ষেপে ঘোষণা দিয়েছে তারাও। এর মধ্যে দুই দেশই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথাও জানিয়েছে।