আবাসস্থল ধ্বংস ও করিডোর বন্ধসহ নানা কারণে কক্সবাজার ও পার্বত্য বনাঞ্চলে সংকটাপন্ন এশিয়ান বন্য হাতি। এজন্য হাতির আবাসস্থল ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব হাতি দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিকালে কক্সবাজারের একটি হোটেলে এক সেমিনারে এ তাগিদ দেন তারা।
আইইউসিএন’ ‘ইউএনএইচসিআর’ সেমিনারে কক্সবাজারে বিপন্ন প্রাণী সংরক্ষণ এবং মানব-হাতি সংঘর্ষ প্রশমনের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।সেমিনার প্রধান অতিথি ছিলেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের (আরআরআরসি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন, বিশেষ অতিথি ছিলেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম, ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার সাব-অফিসের কর্মকর্তা লুয়ান ওসমানী ও আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মো. রাকিবুল আামিন। সেমিনারে সরকারি দফতর, কক্সবাজারে কর্মরত মানবিক সংস্থা এবং পরিবেশ বিষয়ক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কক্সবাজার অঞ্চলেও হাতির আবাসস্থল খণ্ডিতকরণ, বন উজাড় এবং বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে এই প্রাণী। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের আগমনের পর থেকে বনভূমি ধ্বংসের কারণে হাতির আবাসস্থল এবং আন্তঃসীমান্ত চলাচল ও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আবাসস্থলের ক্রমশ অবক্ষয় এবং চলাচলে বাধার কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় মানুষের সঙ্গে হাতি সংঘর্ষ শুরু হয়। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, মানব-হাতি সংঘর্ষে ১২ জন রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছে। মানব-হাতি সংঘর্ষ প্রশমিত করার জন্য, আইইউসিএন বাংলাদেশ, ইউএনএইচসিআর-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এবং এর আশপাশে ‘জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার জন্য মানবিক-সংরক্ষণ কর্ম’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এই হস্তক্ষেপের ফলে শরণার্থী ক্যাম্পের আশপাশে হাতির অনুপ্রবেশের প্রায় ৩৭৫টি ঘটনা ঘটলেও কোনও হাতি কিংবা মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে, হোস্ট এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা ২১১টি মানব-হাতি সংঘর্ষ প্রশমিত করেছে। সেমিনারে বাংলাদেশে এই প্রাণীদের অবস্থা, বণ্টন, আবাসস্থলের অবস্থা এবং বিদ্যমান হুমকির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এতে হাতিদের রক্ষায় সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়।