এবার আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশের সামনে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রতিনিয়ত অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করা বাংলাদেশ মঙ্গলবার সফরকারীদের কোণঠাসা করে জিতেছে। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেনি। মাত্র ১০৮ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা, আর তাতেই ২৩ রানের ঐতিহাসিক জয় পায় স্বাগতিকরা। অজিদের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের প্রথম টি-টুয়েন্টিতে জয়।
আগের ম্যাচের আত্মবিশ্বাস নিয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টিতে আজ আবারও মাঠে নামছে দুই দল। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস।
প্রথম ম্যাচ জেতার পর মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছেন, প্রতিটি ম্যাচেই তারা জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত থাকে। আজও অজিদের ছেড়ে কথা বলবেন না, ‘ক্রিকেটারদের বাংলাদেশের হয়ে প্রতিটি ম্যাচই জেতার তাড়না থাকতে হবে। আমরা এখনই সবকিছু শেষ করেছি এমন নয়, এটা মাত্র একটা ম্যাচ ছিল এবং আমরা জিতেছি আর এটা এখানেই শেষ। আগামীকালের (বুধবার) দ্বিতীয় ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। আশা করি এই ম্যাচেও আমরা ভালো কিছু করতে পারবো।’
ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় না বাংলাদেশ দল। মঙ্গলবার ৫ বছর পর পাওয়া সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই জয়ের মাধ্যমে অনেক কিছুর প্রতিবাদ হয়তো করতে পেরেছে! টি-টুয়েন্টি ফরম্যাট প্রচলন হওয়ার পর কেটে গেছে ১৫ বছর। এবারই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে সিরিজগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়, এই অজুহাতে খেলতে চায় না অস্ট্রেলিয়া। এমনকি ভবিষ্যৎ সফরসূচিতে থাকা ম্যাচগুলোও নানা অজুহাতে অনেক সময় বাতিল করে দেওয়ার ইতিহাসও আছে তাদের। তবে বিশ্বকাপে চার বার মুখোমুখি হয়েছিল অজিরা, তবে সেটি আইসিসির ইভেন্ট।
সব মিলিয়ে তাই অস্ট্রেলিয়াকে হারানো বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিরও বটে। এবার সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার মিশন। বুধবার অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলে ৫ ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সিরিজ জেতার পাশাপাশি টি-টুয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। এমন লক্ষ্য নিয়েই বাংলাদেশ দল মাঠে নামবে।
তামিম, মুশফিক ও লিটনকে হারিয়ে কিছুটা হলেও খর্বশক্তির দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবারের প্রথম ম্যাচে তাদের অভাব স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের খানিকটা বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। বিশেষ করে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যানদের কাছে আরও বেশি প্রত্যাশা টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে ক্রিকেট ভক্তদের। প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে। হয়তো মিরপুরের টার্নিং উইকেটে বাড়তি কয়েকজন স্পিনারকে লেলিয়ে দেবে! অজিরা যাই করুক না কেন, প্রথম ম্যাচের পরিকল্পনা থেকে নিশ্চিত ভাবেই সরে আসবে!
বাংলাদেশে অবশ্যই একই পরিকল্পনায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান ঘায়েল করতে হবে। সেক্ষেত্রে একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তবে শেষ মুহূর্তে শরিফুলের বদলে হয়তো পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনকে দেখা যাওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ২ বিশেষজ্ঞ পেসারের সঙ্গে একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার, ৫ জন স্পিনিং অলরাউন্ডার নিয়ে একাদশ সাজাতে পারে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাইম শেখ, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, আফিফ হোসেন, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, নাসুম আহমেদ, শেখ মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান।