শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪০ অপরাহ্ন

এবছর বসবাসের জন্য বিশ্বের ১৭৩টি মধ্যে সেরা শহরগুলো

মো. আশরাফ আলী / ৩৮ বার
আপডেট : সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

করোনা মহামারির স্থবিরতার পরে বিশ্বের অনেক শহরে জীবনযাত্রার মান আবার উন্নত হতে শুরু করেছে। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বার্ষিক গ্লোবাল লিভেবিলিটি ইনডেক্স অনুযায়ী, অনেক শহরে সামগ্রিক জীবনযাত্রার মান গত ১৫ বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা এবং অবকাঠামোসহ নানা বিষয়কে সূচক ধরে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রতি বছর ১৭৩টি শহরের তালিকা তৈরি করে।
বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ এবং কিয়েভের মতো শহরগুলিতে ক্রমাগত সংঘাতে নাগরিক অস্থিরতার মুখে সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীলতার স্কোর অনেকখানিই কমে গেছে। কিন্তু এরপরও মূলত এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে কোভিড বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর সংস্কৃতি এবং পরিবেশের সূচকও উন্নত হয়েছে। কারণ, আবার নানা ধরনের ইভেন্টের আয়োজন শুরু হয়েছে। যদিও উপাত্ত দিয়ে এসব শহর কতখানি বাসযোগ্য তার একটা ছবি তুলে ধরা যায়, কিন্তু এসব শহরে যারা দিনের পর দিন বসবাস করছেন তারাই ভাল বলতে পারবেন কেন শহরগুলো তাদের এত পছন্দের।
বিবিসি জানায়, চলতি বছরের সেরা ১০টি শহরের মধ্যে কয়েকটি শহরের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হয়েছে-কেন তারা ঐ শহরগুলিকে বেছে নিয়েছেন।
সেরা ১০ বাসযোগ্য শহরের মধ্যে রয়েছে- অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা, ডেনমার্কর কোপেনহেগেন, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ও সিডনি, ক্যানাডার ভ্যাঙ্কুভার, সুইটজারল্যান্ডর জুরিখ, ক্যানাডার ক্যালগারি/সুইটজারল্যান্ডর জেনেভা, ক্যানাডার টরন্টো এবং জাপানের ওসাকা/নিউজিল্যান্ডর অকল্যান্ড।
স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, শিক্ষা আর অবকাঠোমো খাতে সর্বোচ্চ স্কোর নিয়ে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা এবছরও তার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।বাসযোগ্যতার সূচকে এক নম্বর স্থান পাওয়া অস্ট্রিয়ার রাজধানীর জন্য মোটেই নতুন কোন ঘটনা না। শুধুমাত্র ২০২১ সালে কোভিড মহামারিতে এই শহরের যাদুঘর এবং রেস্তোরাঁগুলি বন্ধ থাকায় স্বল্প সময়ের জন্য ভিয়েনার অবস্থান নীচে নেমে গিয়েছিল। বাসিন্দারা বলছেন- স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অবকাঠামোতে নিখুঁত স্কোর- সব মিলিয়ে ভিয়েনার আকর্ষণ সেরা। এখানে আপনি আপনার জীবনের বৃত্তটি সম্পন্ন করতে পারবেন,” ব্যাখ্যা করছিলেন ম্যানুয়েলা ফিলিপ্পো। তিনি দুটি মিশেলিন-স্টার পাওয়া রেস্তোরাঁ কনস্ট্যান্টিন ফিলিপ্পো এবং এর কাছাকাছি ওয়াইন বারের ম্যানেজার। তার বিখ্যাত শেফ স্বামীর সাথে মিলে তিনি এই দুটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।
ভিয়েনার সংরক্ষিত ঐতিহাসিক নিদর্শন, নির্ভরযোগ্য গণ-পরিবহন ব্যবস্থা, শিশুদের লালনপালনের সাশ্রয়ী ব্যয় এবং শহরের ক্যাফে, থিয়েটার ও এমনকি ওয়াইনারিগুলির সাথে সহজ যোগাযোগ– এসব নিয়ে ভিয়েনা সারা জীবনের জন্য থাকার মতো একটি জায়গা।
কখনও কখনও আমরা যখন খুব বেশি কাজ করি এবং দীর্ঘ সময়ের মধ্যে অন্য কোথাও যেতে পারি না, তখনও কিন্তু আমার বেশি কিছু টের পাইনা। কারণ আমরা এই শহরের সীমানার মধ্যেই আমাদের সব চাহিদা মেটাতে পারি, বলছিলেন ম্যানুয়েলা ফিলিপ্পো। হোটেল ডাস টিগ্রার বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের ম্যানেজার রিচার্ড ভসে’র মতে, শুধুমাত্র সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ইতিহাস আর নানা ধরনের অনুষ্ঠানের জন্যই ভিয়েনার বাসযোগ্যতা অনেক বেড়েছে। ভিয়েনায় শোনব্রুন প্যালেস, হফবার্গ এবং ভিয়েনা সিটি হলসহ অনেকগুলো ঐতিহাসিক ভবন রয়েছে। শহরটি তার সঙ্গীত ঐতিহ্যের জন্যও সুপরিচিত। মোৎসার্ট, বেঠোভেন এবং স্ট্রসের মতো বিখ্যাত সুরকাররা এই শহরে বসবাস এবং কাজ করেছেন।
মি. ভস বলছেন, অসংখ্য জাদুঘর, থিয়েটার এবং অপেরা হাউসের মাধ্যমে ভিয়েনার বাসিন্দারা সহজেই এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন। এছাড়াও তিনি ভিনার স্নিটজল এবং জাকার্টর্টের মতো ঐতিহ্যবাহী খাবার চেখে দেখা এবং তাজা খাবার ও রান্নার স্থানীয় বিশেষত্ব উপভোগ করতে নাশমার্কটের মতো বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস ঘুরে দেখার পরামর্শ দেন।
সংস্কৃতি এবং পরিবেশে সর্বোচ্চ স্কোর নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের অবস্থান এবার তৃতীয়। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ এবং মহামারির সময় দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন থাকার ফলে মেলবোর্ন এবং সিডনি- দুটি শহরের স্কোর একসময় নীচে নেমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা আবার শীর্ষ ১০-তালিকায় ফিরে এসেছে। (শহর দুটির র‌্যাঙ্কিং যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ)।
বিশেষ করে মেলবোর্ন শহর সারা দেশের সংস্কৃতি এবং পরিবেশ সূচকে সর্বোচ্চ স্কোর করেছে। এটি এমন বৈশিষ্ট্য যার জন্য শহরটির বাসিন্দারা খুবই গর্ব করেন। জেন মোরেল বলছেন, মেলবোর্নে রয়েছে খাবারদাবারের অবিশ্বাস্য সুব্যবস্থা, শিল্পকলা, নানা ধরনের ইভেন্ট এবং অ্যাট্রাকশন। সেইসাথে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ফর্মুলা ওয়ান গ্রাঁ প্রি এবং অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মতো আন্তর্জাতিক খেলা। প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে তিনি একজন আন্দোলনকারী এবং কেয়ার সলিউশন নামে এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী।
মিজ মোরেল জানান, মেলবোর্নে চলাফেরা করা বেশ সহজ, পুরো শহরে রয়েছে ট্রাম চলাচল ব্যবস্থা, যাতে ওঠা-নামা করা খুব সহজ। আর সামান্য একটা পথ গাড়ি চালিয়ে গেলেই রয়েছে মেলবোর্নের বিশ্ববিখ্যাত সমুদ্র সৈকত এবং ওয়াইন প্রস্তুতকারী আঙ্গুরের বাগান। ব্লগার কিমি কনর মূলত এসেছেন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে। তিনি বলছেন, অত্যাশ্চর্য সৌন্দর্য, সমুদ্র সৈকত এবং অনেকগুলো আইকনিক বিল্ডিং থাকার কারণে সিডনির মতো শহরগুলি এমনিতেই সুন্দর। মেলবোর্ন শহরে তেমন কোনও ল্যান্ডমার্ক নেই, কিন্তু এটি হচ্ছে সংস্কৃতির শহর; এবং এটা বুঝতে হলে আপনাকে একটু গভীরে যেতে হবে।
মেলবোর্নে জীবনের স্পন্দন আবিষ্কার করতে হলে আপনাকে গলির মধ্যে ছোট্ট একটি কফি-শপে যেতে হবে, যেখানে সেরা স্বাদের কফি পরিবেশন করা হয়। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষায়িত রেস্তোরাঁগুলিতে খাবারের স্বাদ পরখ করে দেখতে হবে এবং গোপন দরোজার আড়ালে লুকিয়ে থাকা ককটেল বারগুলি খুঁজে বের করতে হবে।
কিমি কনর মনে করেন, সিডনির তুলনায় মেলবোর্নের লোকেরা অনেক বেশি অতিথিপরায়ণ। জেন মোরেল শহরের বাসিন্দাদের এই ইতিবাচক মনোভাবকে একটি কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন যা শহরের জীবনযাত্রার মানকে বাড়িয়ে দিয়েছে। মেলবার্নিয়ানরা খুবই সহজ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ,” বলছিলেন মিজ মোরেল। এমন কিছু নেই এবং এমন কেউ নেই যার চাহিদা এই দারুণ শহরটি পূরণ করে না।
সৈকত, পাহাড় এবং বনের কাছাকাছি থাকার জন্য ক্যানাডা ভ্যাঙ্কুভারকে শহরের বাসিন্দাদের এত পছন্দ। ক্যালগারি এবং টরন্টোসহ তিনটি ক্যানাডিয়ান শহর এবছর বাসযোগ্যতার তালিকায় শীর্ষ ১০-এ জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু উন্নত সংস্কৃতি এবং পরিবেশের স্কোরের কারণে ভ্যাঙ্কুভার সর্বোচ্চ (পাঁচ নম্বরে) স্থান পেয়েছে। এ দুটি এমন বৈশিষ্ট্য যার কারণে ভ্যাঙ্কুভারের প্রতি শহরটির বাসিন্দাদের রয়েছে অনেক ভালবাসা। টনি হো বলেন, ভ্যাঙ্কুভার থেকে অরণ্য, সমুদ্র এবং আকাশে যাওয়া খুবই সহজ। তিনি ঐ শহরের একটি ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। আমাদের গণ-পরিবহনে চড়ে কিংবা বাস, বাইক, ট্রেন এবং নৌকা ব্যবহার করে আপনি একই দিনে নয়নাভিরাম ইংলিশ বে থেকে শুরু করে গ্রাউস মাউন্টেনে শহরের সর্বোচ্চ পয়েন্টে যেতে পারবেন। ভ্যাঙ্কুভারের বৈচিত্র্যময় সব খাবারও মি. হো’র খুব পছন্দ, যা শহরটির বহু-সংস্কৃতির প্রতিফলন।
ইথিওপিয়ান ইনজেরা শুরু করে থেকে তিব্বতি মোমো পর্যন্ত সবই আপনি খুঁজে পাবেন এখানে। ভ্যাঙ্কুভারের খাদ্য সংস্কৃতি এবং সেগুলি ভাগ করে নেয়ার লোক দিন দিন বাড়ছে। ছোট এক সন্তানের বাবা হিসেবে মি. হো শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে ২০ মিনিটেরও কম দূরত্বের মধ্যে অসংখ্য পার্ক এবং সমুদ্র সৈকতের প্রশংসা করেন। “এটি এমন কিছু যা আমি চাই আমার বাচ্চা তার বাকি জীবন ধরে উপভোগ করবে। সহজ অভিবাসন নীতির সুবাদে নানা দেশের ব্যবসায়ীরাও এখন ভ্যাঙ্কুভারের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।
মোবাইল প্ল্যাটফর্ম রকেটপ্ল্যানের মালিক জো টলজম্যান বলেন, ক্রোয়েশিয়া থেকে আসা একজন উদ্যোক্তা ও অভিবাসী হিসাবে আমি এমন একটি শহর খুঁজছিলাম যেখানে একদিকে যেমন ব্যবসায়িক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হবে, অন্যদিকে শহরটি হবে প্রাণবন্ত এবং থাকবে বিদেশিদের গ্রহণ করার মানসিকতা। ব্যবসা করার জন্য ভ্যাঙ্কুভারের লোকেরা খুব ভাল। ব্যবসার প্রতিটি পদক্ষেপে আপনি কারও না কারও সাহায্য পাবেন এবং নানা ধরনের পরিষেবা নিতে পারবেন। ব্যবসা বাণিজ্যের বাইরে, প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে প্রয়োজনীয় বিশ্রাম দেবে। “যখন আমার বিরতির প্রয়োজন হয় তখন একদিকে দেখা যায় সমুদ্র আর রাস্তার ওপারে দেখা যায় পাহাড়।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জীপনযাপনের জন্য ওসাকা জাপান, বেশ সাশ্রয়ী এবং অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ। বাসযোগ্যতার তালিকায় ১০তম অবস্থানে হলেও, শীর্ষ দশে পৌঁছানো এশিয়ার একমাত্র শহর ওসাকা কিন্তু স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সূচকে নিখুঁত ১০০ স্কোর করেছে।
বিশ্বজুড়ে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক পরিবারের আয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, কিন্তু জীবনযাত্রার নিচু ব্যয় ওসাকার বাসিন্দাদের জন্য একটি বিশাল প্লাস। একজন বাসিন্দা শার্লি ঝাং বলেন, জাপান এবং বিশ্বের অন্যান্য শহরগুলির তুলনায় ওসাকার বাড়িভাড়া তেমন ব্যয়বহুল না। যিনি মূলত এসেছেন ভ্যাঙ্কুভার থেকে।
পানি, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট এবং অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণ ফিসহ আমার বাড়ি ভাড়া ক্যানাডিয়ান ডলারের হিসেবে মাস প্রতি প্রায় ৭০০ ডলার। অ্যাপার্টমেন্টটি ছোট হলেও এটি নতুন এবং বেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। আপনি যদি ভ্যাঙ্কুভারে একই রকম একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিতেন, তাহলে খরচ পড়তো মাসে অন্তত ১২০০ ডলার।
হোটেল রেস্তোরাঁয় সস্তায় খাবারও ওসাকার বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয়। শহরের বাসিন্দা জেমস হিলস বলেন, আমি ব্রিটেন থেকে এসেছি যেখানে ঘরের বাইরে খেতে গেলে পকেট থেকে অনেকগুলো টাকা বেরিয়ে যায়। সেই তুলনায় ওসাকার মানসম্পন্ন রেস্তোরাঁগুলিতে আশ্চর্যজনক বাজেট-বান্ধব দামে খাবার পরিবেশন করা হয়। [ওসাকায়] আপনি প্রায় প্রতিদিনই রেস্টুরেন্টের সুস্বাদু খাবার খেতে পারবেন। একই মাপের অন্য শহরগুলির তুলনায় ওসাকার বাসিন্দা অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করেন। “মাঝরাতে পায়ে হেঁটে একা বাড়িতে ফিরতে আমার মোটেও ভয় করে না। যদি চোখের আড়ালও হয়, তবুও তার ব্যাগ কিংবা পার্স চুরি যাওয়া নিয়ে কখনই তার কোন রকম দুশ্চিন্তা হয় না।
ওসাকার গণ-পরিবহন ব্যবস্থা বেশ নির্ভরযোগ্য। ওসাকা ট্যুরিজম ব্যুরোর মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ জোনাথন লুকাস বলেন, শহর এবং আশেপাশের এলাকায় রয়েছে রেল যোগাযোগের একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। শহর থেকে দিনে দিনে বাইরে যাওয়া সহজ এবং কিয়োটো, নারা ও কোবের মতো শহরগুলি ঘুরে দেখা যায়।
সেরা ১০টি শহরের মধ্যে সংস্কৃতি ও পরিবেশ বিষয়ে নিউজিল্যান্ডের ন্ডঅকল্যান্ডকে সর্বোচ্চ স্কোর দেয়া হয়েছে। ওসাকার সাথে তালিকায় যৌথভাবে রয়েছে অকল্যান্ড। গত বছর থেকে শহরটি ২৫টিরও বেশি ধাপ পেরিয়েছে। শিক্ষা খাতে নিখুঁত স্কোরের পাশাপাশি, অন্যান্য শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে সংস্কৃতি এবং পরিবেশের ক্ষেত্রে অকল্যান্ড সর্বোচ্চ স্কোর করেছে। শহরটির বাসিন্দারাও একই কথা বলেন। শহরের একজন বাসিন্দা মেগান লরেন্স বলেন, অকল্যান্ডে যারা থাকেন তাদের বেশিরভাগই মাত্র ২০ মিনিট গাড়ি চালিয়ে একটি সুন্দর নির্জন সমুদ্র সৈকতে চলে যেতে পারবেন। তিনি মাই মোমেন্টস অ্যান্ড মেমোরিস শিরোনামে ব্লগ লেখেন। আমাদের দোরগোড়ায় রয়েছে একটি অত্যাশ্চর্য জলজ বিশ্ব, এবং এটি উপভোগ করার জন্য রয়েছে অনেক সুব্যবস্থা। একইভাবে শহরটির চারপাশে রয়েছে দেশীয় গাছের জঙ্গল, যেখানে হারিয়ে গেলে মনেই থাকবে না যে আপনি কোনও শহরের কাছাকাছি আছেন।
নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর হিসাবে অকল্যান্ডের বাসিন্দারা অনেক বিশ্বমানের ইভেন্ট উপভোগ করেন। এর মধ্যে রয়েছে চলমান ২০২৩ ফিফা নারী বিশ্বকাপ ফুটবল। অকল্যান্ডের বাসিন্দা এবং একটি ট্র্যাভেল কোম্পানির কর্মী গ্রেগ ম্যারেট বলেন, “সেরা সব কনসার্ট, শো এবং খেলাধুলার ইভেন্ট আমরা আমাদের দোরগোড়ায় দেখতে পাই। আগামী সপ্তাহে আমি অকল্যান্ড মিউজিয়ামে ‘ফারাওদের সময় মিশর’ নামের একটি শো দেখতে যাচ্ছি।
অকল্যান্ডের বিখ্যাত বন্দরের সৌন্দর্যের উপরও তিনি জোর দেন, যেখানে নোঙ্গর করে রয়েছে বহু ইয়ট এবং পালের নৌকা। এজন্য অকল্যান্ডকে “দ্য সিটি অফ সেইলস” নামে ডাকা হয়। একই সাথে, যারা প্রথমবারের অকল্যান্ডে যাবেন তাদের তিনি শহরটির সামুদ্রিক ইতিহাস এবং নিউজিল্যান্ডের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে অকল্যান্ড ম্যারিটাইম মিউজিয়াম ঘুরে দেখার পরামর্শ দেন।
অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং সাংস্কৃতিক-ভাবে বৈচিত্র্যময় একটি দেশ হিসেবে নিউজিল্যান্ড সারা বিশ্ব থেকে আসা খাবারের সাথে মানিয়ে নিয়েছে। তাই রেস্তোরাঁ এবং সুপারমার্কেটগুলিতে রয়েছে অনেক ধরনের অফার, বলছিলেন মিজ লরেন্স। কিন্তু যা সত্যিই অকল্যান্ডকে বাসযোগ্য করে তুলেছে তা হলো মানুষের বন্ধুত্ব। অধিকাংশ কিউইরা দয়ালু মানুষ, তারা অন্যকে সাহায্য করতে চান এবং আপনার সাথে পথে দেখা হলে তারা হাসিমুখে আপনাকে হ্যালো বলবেন। আমি পছন্দ করি তাদের দিলখোলা হাসি এবং কতটা খোলামেলাভাবে তারা অন্যকে হ্যালো বলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর