শনিবার, ০৮ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
হিজবুত তাহরীরের মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ নির্বাচন নিয়ে ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি হিজবুত তাহরীরের সব কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ: পুলিশ সদর দপ্তর তৌহিদী জনতার’ কাজ সমর্থন করছেন না দুই মাওলানা কলকাতায় বৈঠকে যৌথ নদী কমিশন, আলোচনায় গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির নবায়ন সিরিয়ায় আসাদপন্থি-সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ, প্রাণহানি ৪৮ পরীক্ষায় কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখার বিধান তুলে নিচ্ছে ঢাবি ঈদযাত্রার বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার তুর্ক: দমনপীড়নে অংশ না নিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিলাম

ঋণের জালে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ৪১ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৩

রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের সম্পদ। ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা ব্যবসায়ীরা সব সম্বল হারিয়ে এখন নিঃস্ব। এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশ বড় অঙ্কের বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে পুড়ে গেছে ব্যবসায়ীদের তিল তিল করে গড়ে তোলা দোকান। ঈদকেন্দ্রিক কেনাবেচা মুখর হয়ে ওঠার আগেই এই ক্ষতি তাদের আটকে দিল বড় ঋণের জালে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টায় বঙ্গবাজারে অন্তত ছয়টি মার্কেটে আগুন লাগে। এর মধ্যে শুধু বঙ্গ মার্কেটেই ২ হাজার ৯০০ দোকান এবং সেখানে কাজ করেন প্রায় দেড় লাখ মানুষ। বঙ্গবাজার মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ ১০ কোটি মার্কেট, আদর্শ মার্কেট— এই চারটি মার্কেট এক জায়গায় হওয়ায় সবগুলোকে বঙ্গবাজার মার্কেট হিসেবে ডাকা হয়। এখান থেকে রাস্তার উল্টো পাশে এনেক্সকো ও বঙ্গো হোমিও মার্কেটেও এই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

সরেজমিনে গেলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান তাদের অসহায়ত্বের কথা। বঙ্গবাজারের পাশে এনেক্সকো মার্কেটে টি-শার্টের দোকান ছিল শাহেদ আহমেদের। দোকানে আগুন লাগার পর মালামাল বের করতে পারেননি তিনি। চোখের সামনে পুড়তে দেখছেন বেঁচে থাকার অবলম্বন।

ঋণের জালে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা

কান্না জড়ানো কণ্ঠে শাহেদ আহমেদ বলেন, চোখের সামনে দেখতেছি সব পুড়ে ছাই হয়ে যাইতেছে। কিছুই করতে পারতেছি না। তাড়াহুড়া কইরা যতটুকু পারছি বের করছি। কিন্তু বেশির ভাগ মালই ভেতরে রইয়া গেছে। প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মাল ভেতরে রইয়া গেছে। ঋণ করে এসব কিনেছিলাম। তিনি বলেন, এখন আর ভেতরে ঢুকতে দিবে না। আর ভেতরে ঢুকলেও জান নিয়া ফিরা আসতে পারবো না। আর কিছু করার উপায় নাই আমার। কথা বলতে বলতে শাহেদের চোখ আটকে থাকে জ্বলতে থাকা আগুনের লেলিহান শিখার দিকে।

শুধু শাহেদ নন, সজোরে কাঁদতে থাকে নুর আলম মাহিন। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে এই বঙ্গবাজারে আইছি আমি। বিভিন্ন চাকরি কইরা ২০১১ সালে জিনস প্যান্টের পাইকারি দোকান শুরু করি। অনেক কষ্টের দোকান আমার। আমি কখনও রেস্ট করি নাই। শুক্রবারেও দোকানের মাল বাইর করে ফুটপাতে বিক্রি করতাম। অনেক কষ্টের প্রতিষ্ঠান আজ বাসা থেকেই পুড়তে দেখলাম।তিনি বলেন, আগুন লাগার সময় আমি বাসায় ছিলাম। আমার কাছে চাবি নাই বইলা বাইর হইতে পারতাছিলাম না। আইতে দেরি হইয়া গেছে। আজ চৌমুহনী থেকে পার্টি আইবো বইলা গতকাল রাতে আড়াই লাখ টাকার মাল কিনা আইনা রাখছি। অল্প কিছু মাল বাইর করতে পারছি আর সব ভেতরে রইয়া গেছে। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার মাল ছিল দোকানে। বড় ঋণ রইয়া গেছে আমার। সব শেষ, আমি শেষ হইয়া গেলাম।

ঋণের জালে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরা

মহানগর মার্কেটের নিচতলায় ট্রাউজারের দোকান ছিল দেলোয়ার হোসেনের। দোকানে আগুন লাগার পর অল্প কিছু মালামাল বের করতে পেরেছেন তিনি। বাকিগুলোকে আগুনে পুড়তে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না তার।

ভেজা চোখে দেলোয়ার বলেন, গতকাল রাতেও কিছু নতুন মাল কিনে দোকানে রাখছি। প্রায় তিন লাখ টাকার মাল ভেতরে রয়ে গেছে। এর মধ্যে ভোরে আগুন লাগার পর যে কয়টা মালামালের বস্তা বাইরে আনতে পারছি, তার মধ্যে একটা আবার চুরি হইয়া গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর