উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু-কে যা বললেন রোহিঙ্গারা

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুয়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলকে তারা জানিয়েছেন, তারা মিয়ানমারের নাগরিক অধিকার, নিরাপত্তা নিয়ে নিজেদের ভিটেমাটিতে ফিরে যেতে চান। তারা এখন বাংলাদেশের বোঝা। যত দ্রুত সম্ভব নিজ দেশে ফিরে যেতে এবং মিয়ানমারে তাদের ওপর করা গণহত্যার বিচার চান।
এ সময় উজরা জেয়া রোহিঙ্গাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানান। রোহিঙ্গাদের তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অবশ্যই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিচার হবে। রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে সম্মানের সঙ্গে নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে ফিরতে পারে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে।
উজরা জেয়ার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল বুধবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে ১১ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এই মতবিনিময় করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের এই কর্মকর্তা রোহিঙ্গারা বর্তমানে কী অবস্থায় আছেন তা জানতে চান। এ সময় ক্যাম্পে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তাদের প্রত্যাশার কথাও শোনেন। মতবিনিময়কালে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা কার্যক্রম, তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, স্বদেশে প্রত্যাবাসন ও ক্যাম্পে বিদ্যমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন। মতবিনিময়ে ১২ রোহিঙ্গা পুরুষ ও ১০ নারী উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মাস্টার জুবায়ের একটি অনুরোধপত্র দেন সেক্রেটারি উজরা জেয়াকে। পরে মার্কিন প্রতিনিধি দলটি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র ও ইউএনএফপিএ পরিচালিত নারী ও মেয়েদের নিরাপদ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এর আগে বুধবার সকাল ৯টা কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান উজরা জেয়া ও ডোনাল্ড লু। পৌনে ১১টার দিকে তারা উখিয়া বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসেন। সেখানে ইউএনএইচসিআর পরিচালিত রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন সেন্টার পরিদর্শন করেন। পরে সেখানে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন খাদ্য পণ্য সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ই-ভাউচার সেন্টার পরিদর্শন করেন। দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি আলাপচারিতার পাশাপাশি নিউট্রেশন সেন্টার, কালচারাল মেমোরি সেন্টার ঘুরে দেখেন ও কক্সবাজারে কর্মরত প্রায় সব আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বিকেলে কক্সবাজারে সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ঢাকা ফিরবেন। কক্সবাজার সফরে তাদের সঙ্গে রয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও দক্ষিণ এশিয়ায় শরণার্থী বিষয়ক সমন্বয়কারী ম্যাকেঞ্জি রোয়েসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।