বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন

ইসরায়েলের সেনাঘাঁটিতে ভয়াবহ ড্রোন হামলা হিজবুল্লাহর

রিপোর্টার / ০ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

কয়েক স্তরের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে ইসরায়েল। আয়রন ডোম, ডেভিডস স্লিং ও অ্যারো সিস্টেম নিয়ে গঠিত এ ব্যবস্থাকে বিশ্বের শক্তিশালী প্রতিরক্ষাগুলোর একটি বিবেচনা করা হয়। তবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এবার হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা ঠেকাতেও ব্যর্থ হলো ইসরায়েল। সর্বশেষ রোববার দেশটির উত্তরাঞ্চলের একটি সেনাঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর ভয়াবহ ড্রোন হামলায় চার সেনা নিহত হয়েছে। এ হামলায় আহত হয়েছে ৬০ জনেরও বেশি সৈন্য। ইসরায়েল লেবাননে হামলা অব্যাহত রাখলে এর জবাবে দেশটিতে আরও হামলা চালানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা। খবর সিএনএন ও আলজাজিরার
হাইফা শহরের ২০ মাইল দক্ষিণের বিনইয়ামিনাসংলগ্ন একটি সামরিক ঘাঁটিতে ওই হামলায় সাতজন সৈন্য গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, আইডিএফের গোলানি ব্রিগেড এলাকার একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়েছে। এর অবস্থান তেল আবিব ও হাইফার মাঝামাঝি। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বৈরুত ও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলার জবাবে তারা এ হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস (এমডিএ) জানিয়েছে, হামলায় ৬১ জন আহত হয়েছে এবং এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের মধ্যে ৩৭ জনকে অ্যাম্বুলেন্স কিংবা হেলিকপ্টারে করে আটটি আঞ্চলিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে কতজন গুরুতর আহত সে বিষয়ে এমডিএ ও আইডিএফের তথ্যের অসংগতির কারণ জানা যায়নি। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরুর পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হলো ইসরায়েল।
বিবিসি জানিয়েছে, এ হামলায় পুরোনো প্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করেছে হিজবুল্লাহ। ফলে ড্রোনগুলো দেশটির সব ধরনের রাডার ও অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থাকে এড়িয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম হয়।
ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি জানায়, তারা বিনইয়ামিনা ক্যাম্পে ‘এক ঝাঁক সশস্ত্র ড্রোন’ পাঠিয়েছে। এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘আমাদের মহান ও প্রিয় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আগ্রাসন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিলে আপনাদের জন্য করুণ পরিণতি অপেক্ষা করছে। আজ (রোববার) আপনারা দক্ষিণ হাইফায় যা দেখেছেন, এটা তার তুলনায় কিছুই না।’
হিজবুল্লাহর বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, লেবাননের সশস্ত্র সংগঠনটি ইসরায়েলের গোলানি ব্রিগেডকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। গোলানি ব্রিগেড আইডিএফের একটি পদাতিক ইউনিট। এই ইউনিটের সদস্যদেরই মূলত দক্ষিণ লেবাননে মোতায়েন করেছে ইসরায়েল।
হামলার দায় স্বীকার করার আগে হিজবুল্লাহ তাদের প্রয়াত নেতা হাসান নাসরাল্লাহর একটি অডিও বার্তা প্রকাশ করে। এ বার্তায় তিনি হিজবুল্লাহর সদস্যদের নিজেদের লোকজন, পরিবার, জাতি, মূল্যবোধ ও মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানান। গত মাসের শেষ দিকে ইসরায়েলি হামলায় নাসরাল্লাহসহ সংগঠনটির বেশ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হন।
হিজবুল্লাহর এই ড্রোন হামলার সময় বিনইয়ামিনা এলাকায় কোনো সতর্কবার্তার খবর পাওয়া যায়নি। ফলে ড্রোন কীভাবে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের এতটা গভীরে প্রবেশ করতে সক্ষম হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হিজবুল্লাহ বলেছে, এই ড্রোনগুলো প্রতিরক্ষা রাডারগুলো ফাঁকি দিতে পেরেছে।
আইডিএফের শীর্ষ মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ ঘটনা তদন্ত করবে। কীভাবে ঘাঁটিতে ড্রোন প্রবেশ করল, কিন্তু সতর্কসংকেত বাজল না, তা খতিয়ে দেখা হবে। তাঁরা এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় উন্নতি দরকার।
এদিকে, ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। উত্তর লেবাননে জাঘর্তা অঞ্চলে একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া মধ্য গাজায় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় নেওয়া একটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় ২২ জন নিহত এবং ৮০ জন আহত হয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর