আ.লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু সম্ভব, সিটি নির্বাচন তারই প্রমাণ: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের ভোট চুরি করা লাগে না বলে দাবি করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ এমনিই ভোট পায়। যখনই মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছে, তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করে। সাম্প্রতিক সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছেন, তার সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বরিশাল, খুলনা, সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং উপনির্বাচনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ হতে পারে এবং এর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে পারে না। তিনি বলেন, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেছি। কক্সবাজার মেয়র নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচন…এই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনও কথা, কোনও অভিযোগ করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তাদের বলবো, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচন স্বচ্ছ হয়, নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা যে আমরা করতে পারি, সেটা কিন্তু আমরা প্রমাণ করেছি। কাজেই এটা নিয়ে আর কারও কোনও প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য রাজশাহী ও সিলেটবাসীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান দলটির সভাপতি।
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রশ্ন তোলা বিদেশি দেশগুলোকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যেসব দেশ আমাদের নির্বাচনের দিকে শ্যেনদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন, তাদেরও বলবো আমাদের যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা আমাদের যে উপনির্বাচনগুলো হলো, সেই নির্বাচনগুলো দেখেন কীভাবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। এরপর আবার কেন প্রশ্ন ওঠে?
বিএনপি আমলের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আমলে নির্বাচন মানে কী ছিল? প্রত্যেকটা উপনির্বাচন মানে ছিল আমরা যে বলতাম, ১০টা হুন্ডা, ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। তিনি বলেন, ভোট ডাকাতি করেই তাদের (বিএনপি) জন্ম, ভোট ডাকাতি করাই তাদের অভ্যাস। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি।
২০০১ সালের ক্ষমতায় না আসার কারণ দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটি মাত্র সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস বিক্রির করার মুচলেকা দিতে পারলাম না বলেই সরকারে আসতে পারেনি। চক্রান্ত করে আমাদের ক্ষমতা থেকে হটানো হয়। সরকার গঠন করে বিএনপি-জামায়াত জোট। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা এবং গণতান্ত্রিক চেতনায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সবসময় সংগ্রাম করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আর যখন বিরোধী দলে থাকে, সংগ্রাম করেছে আওয়ামী লীগ।
পঁচাত্তরের পরে বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন যারা মানবাধিকার নিয়ে এত সোচ্চার ও সচেতন, তারা তখন কেন এত নিশ্চুপ ছিল, সেটা আমার কাছে বোধগম্য নয়। কিন্তু আমরা কখনও মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, মানবাধিকার সুরক্ষা করেছি। কিন্তু আমাদের তো মানবাধিকার ছিল না, হারিয়েছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে দায়মুক্তি আইনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ আইন বাতিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছে।
রিজার্ভের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পাঁচ মাসের খাবার কেনার মতো সক্ষমতা এখনও আছে। আর খাদ্যের অভাবও নেই। রিজার্ভের টাকা দিয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয়ের ফান্ডের কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, সেটা রিজার্ভের হিসাবে আনা যায় না। সেটা আনলে আমাদের রিজার্ভ বেশি হয়। সেগুলো বাদ দিয়ে আমরা রিজার্ভ হিসাব করবো। তাতে কিছু আসে যায় না।