আ.লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে দ্বিমত নেই: আসিফ নজরুল

আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ৯ মাস পর কীভাবে তাদের মনোনীত সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দেশত্যাগ করতে পারলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের দায় দেখছেন অনেকেই। অনেকে দোষারোপ করছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের ভূমিকা নিয়ে। কেউ কেউ এটাও বলছেন, এতদিনেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা তার। যা নিয়েই এবার নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন আইন উপদেষ্টা।
শুক্রবার ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়েছেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। যেখানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন, আ.লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের দ্বিমত নেই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে আবদুল হামিদের ঘটনায় আইন উপদেষ্টাকে দায়ী করা নিয়ে আসিফ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ জঘন্য মিথ্যাচার ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করছে। আমি আপনাদের সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই খুনের মামলার আসামী সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনে বাধা দেয়ার দায়িত্ব পুলিশ ও গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর, যা কোনভাবেই আমার আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় নয়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে আছেন নিম্ন আদালতের বিচারকরা। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, আদালতের বিচারকদের দায়িত্ব বিমানবন্দর পাহারা দেওয়া না বা কারো চলাচলে বাধা দেওয়া না।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণের সুযোগ রাখার লক্ষ্যে আইসিটি আইনে সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার বিধান আইন মন্ত্রণালয়ের খসড়ায় ছিল। আইন উপদেষ্টা হিসেবে আমি নিজে এটা উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপন করেছি। আমার উত্থাপিত খসড়ার আমিই বিরোধিতা করবো এটা কিভাবে সম্ভব?’
আসিফ নজরুল আরও লিখেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কোন উপদেষ্টা কী ভূমিকা রেখেছেন এ নিয়ে আমাকে, ছাত্র উপদেষ্টাদের বা অন্য কাউকে দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকুন। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয় তার দায় দায়িত্ব আমাদের প্রতিটি উপদেষ্টার। আমাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশ্নে কোন দ্বিমত নেই। তবে পদ্ধতি নিয়ে সবার নিজস্ব মত থাকতেই পারে।’
আইনি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ কোনো সমস্যা নয়— জানিয়ে আসিফ নজরুল লিখেন, ‘আমাদের এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, আইসিটি আইন চাইলেই আমরা কয়েকদিনের মধ্যে সংশোধন করতে পারবো। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য সন্ত্রাস দমন আইনসহ অন্য আইনগুলোও আছে। কাজেই আইন কোনো সমস্যা না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ চাইলে বা বিচারিক আদালত এ সম্পর্কে কোনো পর্যবেক্ষণ বা রায় আসলে অবশ্যই আইনানুগভাবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে। আমরা সেই প্রত্যাশায় আছি। ইনশাল্লাহ।’