ঝটিকা অভিযানে আফগানিস্তানের বেশিরভাগ এলাকা দখলে নিয়ে গত রোববার সকালে কাবুলের প্রবেশ পথগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান যোদ্ধারা। এরপর বিকালে প্রেসিডেন্ট গানির দেশত্যাগের খবর আসে এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদও তালেবানের দখলে চলে যায়।

প্রাথমিকভাবে সেদিন রয়টার্স খবর দিয়েছিল, আশরাফ গানি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের নিয়ে পালিয়েছেন প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে তার উজবেকিস্তান অথবা ওমানে যাওয়ারও খবর আসে।

বুধবার বিবিসির একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, আশরাফ গানিকে আবু ধাবিতে দেখা গেছে বলে কয়েকটি সূত্রে খবর এসেছে, যদিও তা যাচাই করা যায়নি।

দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর রোববার রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে প্রসিডেন্ট গানি বলেন, “রক্তপাত এড়ানোর জন্য আমার মনে হয়েছে দেশ ছেড়ে যাওয়াই ভালো হবে।”

২০১৪ সাল থেকে আফগানিস্তানের প্রসিডেন্ট হিসেব দায়িত্ব পালন করে আসা আশরাফ গানির এভাবে দেশ ছাড়া নিয়ে তার সহযোগীরাও তীব্র সমালোচনা করেছেন।

‘দেশ ছেড়েছেন’ আফগান প্রেসিডেন্ট গানি  

দেশ ছেড়েছি রক্তপাত এড়াতে: গানি  

‘চার গাড়ি ভর্তি অর্থ’ নিয়ে পালিয়েছেন গানি  

তালেবানের সঙ্গে সরকারের শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “আল্লাহর কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। পুরো জাতিই তার বিচার করবে।”

গানির মন্ত্রিসভার ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী বলেছিলেন, “আমাদের হাত পিছমোড়া করে বেঁধে দেশটা বিক্রি করে দিয়ে চলে গেল ওই ধনী লোক আর তার গ্যাং।”

আশরাফ গানি সঙ্গীসাথীদের নিয়ে দেশ ছেড়ে পালানোর সময় চারটি গাড়ি ও হেলিকপ্টারে করে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে গেছেন বলে খবর দেয় কাবুলে রাশিয়ার দূতাবাস।

দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশচেঙ্কোর বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ জানায়, “বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তি ছিল চারটি গাড়ি, তাছাড়া একটি হেলিকপ্টারেও অর্থের একটি অংশ তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জায়গা না হওয়ায় অনেক অর্থ টারমাকে ফেলে যায়।”

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর অভিযানে গোঁড়া ইসলামী দল তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন হামিদ কারজাই।

কারজাইর পর ২০১৪ সালে আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছিলেন আশরাফ গানি। সাত বছরের মাথায় তালেবান বাহিনী অনেকটা বিনা প্রতিরোধেই আবার দেশের দখল নিল।