আপাতত ইসির হাতেই থাকছে এনআইডি

জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি সেবা কার্যক্রম আপাতত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছেই থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ভবিষ্যতে স্বাধীন একটি ডেটা অথোরিটির কাছে এই সেবা যাবে বলে জানিয়েছে তিনি।
বুধবার (১২ মার্চ) আগারগাঁওয়ের আইসিটি ভবনে ‘এনআইডির ওনারশিপ’ শীর্ষক এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এ তথ্য জানান।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, কমিশনের অধীনে ৩৫ ধরনের তথ্য আছে। তারও বেশি আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে— ভোটের অধিকার ইমপ্লিমেন্টেশন করার জন্য ৩৫ ধরনের তথ্যের প্রয়োজন আছে কি? এই প্রশ্নটি যৌক্তিকভাবে এবং কারিগরিভাবে উপস্থাপন হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ডেটা অথোরিটির কথা বলছি। আমরা বলছি না যে নির্বাচন কমিশনের যে আইটি সেল আছে সেটাকে বন্ধ করে দেবো। এর যে সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার ও কারিগরি ক্ষমতা আছে, সেটা আমরা নিয়ে নেব।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বিশেষ সহকারী তৈয়্যব বলেন, আমরা যেটা বলছি— ডেটা অথোরিটির মাধ্যমে রেগুলেটেড হবে। যার কাছে যা আছে, তা আপাতত সেখানেই থাকবে। একটা পর্যায়ে এসে যখন এই সফটওয়্যারগুলোকে রূপান্তর করা দরকার, যখন এসব পুরোনো হবে, তখন একটি কেন্দ্রীয় অথোরিটির অধীনে সব নিয়ে আসব। আপাতত যা যেখানে আছে, সেখানেই থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, এটা কোনো মন্ত্রণালয়ের অধীনে যাবে না। এখনই যে সরিয়ে ফেলতে হবে, সেটিও আমরা বলছি না। আমরা বলছি, আমরা কর্মক্ষমতা আরও ভালো করতে চাইছি।
এর আগে বুধবার সকালে এনআইডি সেবাকে ইসির অধীন রাখার দাবিতে ‘স্ট্যাড ফর এনআইডি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ও উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, এনআইডি সেবা ইসির অধীনেই রাখার দাবি তারা অনেক আগে থেকে করে আসছেন।
তারা বলেন, এ বিষয়ে দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে ইসিকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। ইসি তাদের স্মারকলিপির সঙ্গে একমত হয়ে সরকারকে চিঠি দিলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হয়নি। এ কারণে তারা বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ‘স্ট্যান্ড ফর এনআইডি’ কর্মসূচিতে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন। এর মধ্যে কোনো সাড়া না পেলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।
জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়েও কথা বলেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, আমরা ইসির বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে সামনে আনলাম। কারণ ইসি থেকে কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, যেন এনআইডি সার্ভার তাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া না হয়। আমরা বলতে চাইছি, ইসি যে ডাটা রক্ষাণাবেক্ষণ করে, তারা সেটাই করবে। কিন্তু ধীরে ধীরে আমাদের একটি স্বাধীন ডেটা অথোরিটির দিকে যেতে হবে। এটি আমাদের লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক, অথেন্টিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক, ডেটা এক্সটেন্ট ফ্রেমওয়ার্কের জন্য জরুরি, যার ওপর ভিত্তি করে আমাদের ডিজিটাল সুযোগগুলো দাঁড়িয়ে আছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর এই ব্রিফিংয়ের পর অবশ্য ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাদের কর্মসূচি নিয়ে হালনাগাদ কোনো ঘোষণা পাওয়া যায়নি।