রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন

আন্দোলনকারীদের যেসব দাবি-দাওয়া লিখে দিয়েছিলেন নুর

ভয়েস বংলা প্রতিবেদক / ১৩ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলমকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, ইন্টারনেট সচল করা, ছাত্রলীগ-যুবলীগে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, সরকারের পদত্যাগসহ নানা দাবি-দাওয়া লিখে দেন নুরুল হক নুর। গত ১৯ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি আন্দোলনকারীদের আহ্বান জানান এবং বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে নুরকে আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের পরিদর্শক আবু সাইদ মিয়া। এ সময় রিমান্ডে নুরুল হক এসব তথ্য দিয়েছেন বলে আদালতকে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নুরুল হককে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে বলেন, নুরকে আদালতের নির্দেশনা মেনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানান, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা সংক্রান্ত আদালতের রায়ের পর থেকেই নাহিদ ইসলাম, নাসানাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, আসিফ মাহমুদ, আক্তার হোসেন এবং আহনাফদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। পরে ১৮ জুলাই রাত ১০টায় নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে ও মেসেজে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার এবং বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। তখন নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলম দাবি-দাওয়াগুলো তাকে মেসেজ করে লিখে দিতে বলেন। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, ইন্টারনেট সচল করা, ছাত্রলীগ-যুবলীগে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, সরকারের পদত্যাগসহ নানা দাবি-দাওয়া লিখে দেন নুর। ১৯ জুলাই কর্মসূচিতে অংশ নিতে তিনি আন্দোলনকারীদের আহ্বান জানান এবং বর্তমান সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এদিন নুরকে প্রথমে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহাম্মদের আদালতে নুরের পক্ষে জামিন আবেদন করেন আইনজীবী বিপ্লব পোদ্দারসহ আরও অনেকে। নুরের উপস্থিতিতে জামিন শুনানি করার আবেদন করেন তারা। এতে আদালত নুরকে এজলাসে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন।
বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে নুরকে হাজতখানা থেকে এজলাসে নেওয়া হয়। তখন আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, নুর ডকে দাঁড়াতে পারছেন না। তার যেন বসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে তাকে বেঞ্চে বসার আদেশ দেন আদালত। শুনানিকালে পুরোটা সময় স্ত্রীর পাশে বসা ছিলেন নুর।
রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনায় এবং তার জামিনের বিরোধিতা করে। আদালতের কার্যক্রম শেষে নুরকে বিচারকের খাসকামরায় নেওয়া হয়। সেখানে বিচারক তার সঙ্গে কিছু সময় কথা বলেন। পরে আদালত কারাবিধি অনুযায়ী নুরকে চিকিৎসার নির্দেশ দেন এবং জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এদিন নুরের বাবা, স্ত্রী ও বোন আদালতে হাজির হন। কারাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্তের পর তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এর আগে গত ২১ জুলাই নুরুল হক নুরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন অন্য একটি আদালত।
গত ১৮ জুলাই সেতু ভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। সেতু ভবনের ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর