রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
দেশজুড়ে অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১৬০১ নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার তাগিদ বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশের মেয়েরা পদত্যাগ করলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক রাফিদ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহকদের জন্য সুখবর বড় ব্যবধানে হার: টাইগ্রেসেদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন অনিশ্চয়তায় ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে ইতিহাসের সর্বোত্তম নির্বাচন করব: প্রধান উপদেষ্টা একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে ক্ষমতায় বসাতে গণঅভ্যুত্থান হয়নি : নাহিদ প্যারিসে ‘সফল’ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ‘মধ্যস্থতা’য় ইউরোপ

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে : কলকাতা প্রেসক্লাবে তথ্যমন্ত্রী

ভয়েস বাংলা প্রতিবেদক / ৮১ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি যেমন মাথাচাড়া দেবে, জঙ্গিবাদও মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আজ দুপুরে কলকাতা প্রেসক্লাবে ‘সাংবাদিকদের মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে ভারতীয় সাংবাদিকদের উন্মুক্ত প্রশ্নের জবাব দেন ভারত সফররত মন্ত্রী । বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে, এখানে সাম্প্রদায়িকতা ফণা তুলবে কি না -এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর, সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ এ আয়োজনে অংশ নেন। এ সময় কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন একসঙ্গে বাংলাদেশে ৬৩ জেলায় বোমা হামলা হয়েছিল। শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাই, আফগানিস্তানের ট্রেনিং প্রাপ্তরা প্রকাশ্যে মহড়া দিতো। এই হচ্ছে বিএনপি সরকারের আমল। তিনি বলেন, যখন আমরা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করি, তখন বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে বলছেন- কিছু লোককে ধরে এনে আটকিয়ে রাখা হয়, চুল-দাড়ি লম্বা হলে তাদের জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়। বাংলাদেশে যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকে, তাহলে সেই সাম্প্রদায়িকতা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।
‘বাংলাদেশে ২০০১ সালের নির্বাচনে যখন বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তারপরই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন হয়েছে’ উল্লেখ করে হাছান বলেন, নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার অপরাধে মা-মেয়েকে এক রাতে ধর্ষণ করা হয়েছে, ১৪ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। গৃহহারাদের জন্য তখন ঢাকায় আমাদের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিসে লঙ্গরখানা ও আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছিল।
নিজদলের আদর্শ তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে যে দলটি প্রতিষ্ঠিত, সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর, সেই সাম্প্রদায়িকতাকে আবার ফিরিয়ে এনেছেন। আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর ধর্মীয় রাজনীতিটা বন্ধ করা হয়েছিলো, সেটি ‘৭৫ সালে আবার চালু করা হয়েছে। দু:খজনক হলেও সত্য, বিএনপি’র বহুদলীয় জোটের মধ্যেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আছে। সেখানে অনেক দল আছে, যেসব দলের নেতারা তালেবানের সাথে যুদ্ধ করেছে। এ সমস্ত অনেক নেতা প্রকাশ্যে ‘বাংলা হবে তালেবান’ শ্লোগান দিয়েছিল।
বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি না -এ প্রশ্নে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি’কে গণমানুষের দল বলে তারা দাবি করে। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন, এমন কি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তারা দলের সবাইকে অংশ নিতে বারণ করেছে। এ সত্ত্বেও তাদের অনেকেই কাউন্সিলর, মেম্বার এমন কি চেয়ারম্যান পদেও নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বেশিরভাগই নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তাদের নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত দিতে পারে না বিধায় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। যারা নিজেদের জনগণের দল হিসেবে দাবি করে বা গণমানুষের দল হিসেবে টিকে থাকতে চায়, তাদের জন্য ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করা অত্যন্ত ক্ষতির কারণ। আগামী নির্বাচনও যদি তারা বর্জন করে, তাহলে সেই ক্ষতিটা তারা আবারও টের পাবে।’
রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চট্টগ্রামের মানুষ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বহুবার গিয়েছি, আমার হিসেবে এখন প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশ। আমাদের দেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, কোনো রকমে আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আমাদের জন্য একটা চাপ, অর্থনীতির চাপ। তাদের খাওয়াতে হচ্ছে, পরাতে হচ্ছে, চিকিৎসাসহ সবকিছু দিতে হচ্ছে। এ জন্য ভারত সরকারের সাথে আমরা সবসময় আলাপ আলোচনা করছি।’
বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতার প্রশ্নে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমাদের সাথে ভারতের এবং অন্যান্য দেশের আন্তরিক সহযোগিতা আছে। আমাদের শুধু বাণিজ্যে সহযোগিতা নয়, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে নানাবিধ সহযোগিতা আছে। আমরা মনে করি আমাদের অঞ্চলকে নিরাপদ রাখা, এখানে শান্তি, স্থিতি বজায় রাখা আমাদের আন্তরিক দায়িত্ব। একইসাথে ভারতেরও দায়িত্ব। অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজন আমাদের দু’দেশের সহযোগিতা।
ইদানীং মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশে কূটনীতিকদের বিবৃতি দিতে দেখা যাচ্ছে –মন্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতে কিম্বা পশ্চিমা দেশেও কথায় কথায় কেউ বিবৃতি দেয় না। কারণ তাতে কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘন হয়। আমাদের এখানে এ ধরণের বিবৃতির কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইলিশ ও ভারতের সিনেমা নিয়ে প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, আমরা ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি করার অনুমতি দিয়েছি। আমাদের দেশে ‘পাঠান’ মুক্তি পেয়েছে, আরো কয়েকটি মুক্তির অপেক্ষায় আছে। আর আমাদের ইলিশ রপ্তানি বন্ধ নয়, মাঝে মধ্যে ধরা বন্ধ করা হয়, গত দু’মাস ইলিশ ধরা বন্ধ ছিলো। যখন বন্ধ থাকে তখন সবখানেই বন্ধ থাকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর