মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন

অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে সব মামলা চলবে ট্রাইব্যুনালে: হাইকোর্ট

ভয়েস বাংলা রিপোর্ট / ৪৫ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩

অর্পিত সম্পত্তি আইনের ধারা ৯, ১৩ ও ১৪-এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে সব মামলা এখন থেকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে। অন্য কোনও আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা চলবে না বলে জানিয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। মামলায় আইন মন্ত্রণালয় সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয় সচিব, খুলনা ও ডিসি চট্টগ্রামের ডিসিসহ ১২ জনকে বিবাদী করা হয়েছিল।

আদালতে দুটি রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট মো. ওমর ফারুক। ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ ও সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।

আদালত তার রায়ে বলেন, অর্পিত সম্পত্তি আইনের ৯, ১৩ এবং ১৪ ধারা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি নয়। অর্পিত সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকবে এবং জেলা প্রশাসক প্রয়োজনে লিজ দিতে পারবেন।

শুনানিতে রিটকারীদের আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী আদালতকে বলেন, সম্পত্তির অধিকার একটি মৌলিক অধিকার এবং তা সংবিধান কর্তৃক নিশ্চয়তাকৃত। সুতরাং রাষ্ট্র বা সরকারের কোনও কর্মকর্তা বা কোনও কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করতে পারবে না। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট সবসময়ই মৌলিক অধিকারের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১-এর ধারা ৯, ১৩ ও ১৪ দ্বারা পিটিশনার দ্বয়ের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সুতরাং আইনের ওই তিনটি ধারা বাতিলযোগ্য।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, রিটকারীদের বর্তমান মামলা দুটি করার কোনও আইনি কারণ নেই। কারণ, বর্ণিত সম্পত্তি দুটি অর্পিত সম্পত্তি। তারা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১-এর অধীন ট্রাইব্যুনালে মামলা করে তাদের প্রতিকার পেতে পারেন। ইতোমধ্যে তারা দুজনেই ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। সেখানে আইনের ২৫ ধারা অনুসারে তারা অগ্রবর্তীকালীন আদেশসহ ওই ভূমি সম্পর্কিত যেকোনও প্রতিকার পেতে পারেন। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ সালের জন্য ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এক বিশেষ প্রতিকারের ব্যবস্থা করেছে। ফলে আইনের ধারা ১৩ অনুসারে দেওয়ানি মামলা অ্যাবেটমেন্ট (বাতিল) হলে তাদের কোনও ক্ষতির কারণ নেই। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১-এর ‘ক’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তি ইজারা প্রদানে জেলা প্রশাসককে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, না হলে ওই সম্পত্তি নষ্ট, ধ্বংস ও বেহাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং সরকারের রাজস্বহানির আশঙ্কা রয়েছে। ওই আইনের অধীন প্রতিকারের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তারা কৌশলে আইন চ্যালেঞ্জ করে রিট মামলা দুটি করেন।

খুলনা ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত আদালতে বলেন, বর্ণিত সম্পত্তি দুটি অর্পিত সম্পত্তি। সুতরাং ‘ক’ তফসিলভুক্ত হওয়া আইনত হয়েছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, ২০০১ অনুযায়ী তাদের প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল দিতে পারেন, কিন্তু তারা সম্পত্তির অধিকার বলবৎ করণের জন্য কৌশলে জুডিসিয়াল রিভিউর অধীন আইন চ্যালেঞ্জ করছেন। সুতরাং মামলা দুটি খারিজযোগ্য। তারা বলেন, ধারা ১৩ অনুসারে দেওয়ানি মামলা অ্যাবেটমেন্ট হলে তাদের কোনও ক্ষতির কারণ নেই। কারণ, সব প্রতিকার ট্রাইব্যুনালই দিতে পারেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর