অপকর্ম করবে, এমন ছাত্রলীগ দরকার নেই: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এমন ছাত্রলীগ আমরা চাই না। নিজেদের সুশৃঙ্খল করুন, সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না, এমন ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নেই। অপকর্ম করবে, এমন ছাত্রলীগ দরকার নেই। দুর্নামের ধারা থেকে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এটাই অঙ্গীকার।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১১টায় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার বার্ষিক যৌথ সম্মেলনে বিশৃঙ্খলাকে কেন্দ্র করে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে এসব কথা বলেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবু।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। সম্মেলন যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, দক্ষিণ শাখার সভাপতি মো. মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. জুবায়ের আহমেদ।
দুপুর ১২টার আগে মঞ্চে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তখনও ছাত্রলীগের মহানগরের এক নেতা বক্তব্য রাখছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগের চার নেতাসহ অন্যদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ না দিয়েই সোজা প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে তিনি বক্তব্য দিতে ডায়াসে এলে মঞ্চ থেকে নেমে যান জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বিএম মোজাম্মেল হক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা কি ছাত্রলীগ? কোনো শৃঙ্খলা নেই। পোস্টার নামাতে বললাম, তারা নামায় না। তারা কারা আমি খোঁজ নিচ্ছি। এতো নেতা স্টেজে, তাহলে কর্মী কোথায়? এই ছাত্রলীগ চাই না। মুজিব কোট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না। মুজিব সৈনিক হতে হলে মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ নানকের মতো আপনাদের (ছাত্রলীগ) দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সময়ের অভাবে বক্তৃতা করতে পারলেন না। আপনারা মাইক ধরলে ছাড়েন না। পরেও তো বলবেন খেয়াল থাকে না। আজ জুমার দিন, এটা খেয়াল থাকেনি?
সম্মেলনে আমন্ত্রিত চার নেতা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি উল্লেখ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, নেতারা বক্তৃতা করতে পারেননি, তাহলে দাওয়াত দিলেন কেন? একটু একটু করেও বলতে পারলেন না? আপনারা দুজনেই এক ঘণ্টা! মনে নেই আজ শুক্রবার? লেখকের (লেখক ভট্টাচার্য) না হয় মনে নেই, জয়ের কি মনে ছিল না? এটা কোন ছাত্রলীগ? এ সময় নেতাকর্মীরা স্লোগান দিতে থাকলে ওবায়দুল কাদের বলেন, যার নামে স্লোগান দেবেন, তাকে বানাবো না। নেত্রীকে বলে দেবো। স্লোগান যে দেবে, সে বাদ। বলে দিচ্ছি!
সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনাদের (বিএনপিকে) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আপনাদের পছন্দ নয়, পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে সেই জায়গা আপনাদের পছন্দ নয়। ১০ ডিসেম্বর থেকেই কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু হয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা বলেছি পরিবহন ধর্মঘট হবে না। নেতারা অনুরোধ রেখেছেন আপনাদের বিভিন্ন জায়গার সমাবেশে। তবে সমাবেশের নামে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা করা হয়, কোনো সহিংসতা করা হয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেবে। তারা এখন জঙ্গিদের মাঠে নামিয়েছে খবর আছে। অস্ত্রবাজদের মাঠে নামিয়েছে খবর আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক সিঙ্গাপুরে টাকা পাচার করেছে, খেলা হবে পাচারের বিরুদ্ধে, এখনো যারা পাচার করছে খবর আছে, যারা পাচার করছেন শেখ হাসিনা কাউকে ক্ষমা করবেন না, খবর আছে।