অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা ১৭ জন কে, কোন দেশের নাগরিক— জানালেন জয়

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ‘বিদেশি এজেন্ট দ্বারা পরিচালিত’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যুক্ত ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে জয় দাবি করেছেন, এই ১৭ জনেরই বাংলাদেশ ছাড়া অন্য এক বা একাধিক দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে। তারা কে কোন দেশের নাগরিক, সেটিও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইল থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেছেন।
জয় লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি অনির্বাচিত, অসাংবিধানিক ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অধীনে চলছে, যা মূলত বিদেশি এজেন্টদের দ্বারা পরিচালিত। তারা তাদের বিদেশি প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এখানে এসেছে।
তিনি লিখেছেন, এরই মধ্যেই তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) আরাকান আর্মিকে আমাদের মাটিতে প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এখন তারা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলছে। এভাবে তারা বাংলাদেশকে আরেকটি আফগানিস্তান বা ইউক্রেনে পরিণত করবে।’
জয় তার স্ট্যাটাসে সরকারসংশ্লিষ্ট যে ১৭ জনের তালিকা তাদের ভিনদেশের নাগরিকত্বের তথ্যসহ তুলে ধরেছেন তারা হলেন—
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস মার্কিন নাগরিকত্ব (জার্মানি, ইতালি এবং ফ্রান্সেরও নাগরিক), পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকনবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান মার্কিন নাগরিকত্ব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী অস্ট্রেলীয় নাগরিকত্ব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সুফিউর রহমান সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মাইনু উদ্দিন মার্কিন নাগরিকত্ব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তাইয়্যেব নেদারল্যান্ডসের নাগরিকত্ব, প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ব্রিটিশ নাগরিকত্ব, সাংবিধানিক সংস্কার কমিটির প্রধান ও ঐক্যমত কমিশনের উপসভাপতি আলী রিয়াজ মার্কিন নাগরিকত্ব, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার মার্কিন নাগরিকত্ব, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ ব্রিটিশ নাগরিকত্ব, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সদস্য মোস্তাক হোসেন খান ব্রিটিশ নাগরিকত্ব, মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ পরিবারের সদস্যদের কানাডার নাগরিকত্ব, সিনিয়র সচিব মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার মার্কিন নাগরিকত্ব, সিনিয়র সচিব মর্যাদায় মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম মুশফিকুল ফজল আনসারী মার্কিন নাগরিকত্ব, যুগ্ম সচিব মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সচিব শাজিব এম. খায়েরুল ইসলাম মার্কিন নাগরিকত্ব।
তাৎক্ষণিকভাবে সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেওয়া এসব তথ্যের যথার্থতা যাচাই করা সম্তব হয়নি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারে বিদেশি পাসপোর্টধারীদের সংখ্যা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রশ্ন উঠেছে।