নির্বাচন প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে ফরহাদ মজহারের দুই রোডম্যাপ

নির্বাচন প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুটি রোডম্যাপ দিয়েছেন কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, আগামী দিনে দুইটা নির্বাচন লাগবে। একটা হলো গণপরিষদ নির্বাচন। যেখানে আমরা নতুন রাষ্ট্র গঠন করতে পারি। আরেকটা হলো সরকার নির্বাচন। রাষ্ট্র গঠনের নির্বাচন আগে। তারপরে আসবে সরকার নির্বাচন। এ রোডম্যাপ জনগণের পক্ষ থেকে আপনাদের দেওয়া হলো। এ রোডম্যাপ যদি না মানা হয় তাহলে ভয়ানক বিপদে পড়ব। তবে এ সরকারকে টিকিয়ে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে প্রফেসর কে আলী ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ : বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দুটি রোডম্যাপ দেন। অধ্যাপক ড. শেখ আকরাম আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম।
ফরহাদ মজহার বলেন, জনগণকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র গঠন হতে পারে না। এই অন্তর্বর্তী সরকারকে টিকিয়ে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে আন্দোলন চলছে। এসব নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে এবং রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সংস্কার করতে হবে। তিনি বলেন, যখনই আমরা রাষ্ট্র গঠনের কথা চিন্তা করি তখন আমরা রাজনৈতিক দলের কথাও চিন্তা করি। রাজনৈতিক দল আমাদের দরকার। রাজনৈতিক দল ছাড়া আমাদের চলবে না। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো চায়, সে ক্ষমতায় যাবে ১৫ বছর ধরে লুটপাট করবে। এটাতো রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। আগামীদিনে আমরা বাংলাদেশকে সুন্দর করে গঠন করব, এমন একটি গঠনমূলক প্রস্তাবনা রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া দরকার। কিন্তু তারা কোনো প্রস্তাবনা দিচ্ছে না।
ফরহাদ মজহার বলেন, আজকে এতবড় একটি অভ্যুত্থান হয়ে গেছে। আমরা এত রক্ত দিলাম। কিন্তু আমরা দিনশেষে শেখ হাসিনারই সংবিধান পেলাম। এমনটি আমরা চেয়েছি! কী করে এ সংবিধান এখনো থাকে? যাদের উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে, তারা মূলত প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা। আর এই প্রেসিডেন্টকে শেখ হাসিনা নিয়োগ করে গেছে। তাকে একজন ফ্যাসিস্ট নিয়োগ করেছে। উপদেষ্টারা শপথ গ্রহণের সময় বলেছে আমরা সংবিধান সংরক্ষণ করবো। কিন্তু এ সংবিধান তো শেখ হাসিনার সংবিধান। তিনি বলেন, ড. ইউনূস সামাজিক ব্যবসা করেন বলে বিশ্বের সব রাষ্ট্র তাকে চিনে, সম্মান করে ও ভালোবাসে। যুক্তরাষ্ট্রও তাকে সেজন্যে সম্মান করে। তিনি যদি এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষা করেন, তাহলে তাকে সমর্থন করবে ও পাশে থাকবে। কিন্তু ড. ইউনূস দেশের স্বার্থ বিকিয়ে সে কাজ করবেন না। আর এজন্যই যুক্তরাষ্ট্র তার পাশে থাকবে না।