শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০১:১৬ অপরাহ্ন

সাংবাদিক অমিত হাবিবকে শেষ শ্রদ্ধা

ভয়েসবাংলা প্রতিবেদক / ৯২ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২

দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিবকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নবীন প্রবীণ সাংবাদিক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। তার সহকর্মীসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কর্মী, সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক ও ফুলেল শুভেচ্ছায় তাকে বিদায় জানানো হয়।

শুক্রবার সকালে তার কর্মস্থল দেশ রূপান্তর কার্যালয়ের সামনে ও জাতীয় প্রেস ক্লাবে কফিন নিয়ে আসার পর পুস্পস্তবক অর্পণ করে সবাই শ্রদ্ধা জানান। উভয় স্থানেই জানাজায় সাংবাদিক, শুভাকাঙ্খীরা অংশ নেন।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দেশ রূপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিব। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তিন দশকের কর্মজীবনে সম্পাদক হলেও বার্তা সম্পাদক হিসেবে দক্ষতার জন্য গণমাধ্যম জগতে খ্যাতি ছিল তার। বার্তা কক্ষে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তার দক্ষতার কথাও সহকর্মীদের মুখে মুখে ফেরে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে জাতীয় প্রেস ক্লাব, সম্পাদক পরিষদ, দৈনিক সমকাল, রূপায়ন গ্রুপ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন।

প্রেস ক্লাবে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত শ্রদ্ধার্ঘ অনুষ্ঠানে ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি কবি হাসান হাফিজ বলেন, অমিত হাবিব নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন শক্তিমত্তা, মেধা এবং একনিষ্ঠতা দিয়ে। আমরা তার মত একজন গুণি সাংবাদিককে হারিয়ে অত্যন্ত ব্যথিত, মর্মাহত এবং শোকহত। আমরা একটা শূণ্যতা অনুভব করছি। ফেইসবুকে আপডেডটা লক্ষ্য করছিলাম। আশা করছিলাম যে, উনি ফিরে আসবেন। আনফরচুটনেটিলি আমরা সেটা পাইনি। অকাল মৃত্যু এটা। তিনি গড় আয়ু স্পর্শ করতে পারেননি বাংলাদেশের। খুব দু:খজনক, খুব বেদনাদায়ক। তিনি বলেন, আমি অনুরোধ করব তিনি অনেক সাংবাদিককে প্রশিক্ষিত করেছেন, কাছে থেকে কাজ শিখিয়েছেন, তর্ক-বিতর্ক, আলাপ-আলোচনা- এসব নিয়ে তারা যদি একটা গ্রন্থ বের করে তাহলে তার সুন্দর স্মৃতিগুলো স্থায়ী হবে বলে আমি মনে করি

প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, তিনি অসামান্য ও দক্ষ সাংবাদিক ছিলেন। বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি কাজ করেছেন। চায়না রেডিও‘র চাকুরি ছেড়ে তিনি চলে এসেছিলেন শুধু মূলধারার সাংবাদিকতা করবেন বলে। তার সাথে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে। আজকে তার এই অকাল মৃত্যু, আমরা শোকাহত। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন রূপায়ন মিডিয়া কমিউনিকেশনের পক্ষে মাহির আলী খান রাতুল, অমিত হাবিবের ছোট ভাই ফায়েজুল হাবিব।

এরপর নামাজে জানাজায় অংশ নেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সমকালের মোজাম্মেল হোসেন, আবু সাঈদ খান, লোটন একরাম, ডিবিসির মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, প্রতিদিনের বাংলাদেশের মুস্তাফিজ শফি, বিএনপির জহির উদ্দিন স্বপন, আফজাল হোসেন ও সায়েম খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের হাসান হাফিজ, ইলিয়াস খান, মাইনুল আলম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জাকারিয়া কাজল, আবদুল জলিল ভুঁইয়াসহ অন্যারা অংশ নেন।

এর আগে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অমিত হাবিবের কফিন নিয়ে আসা হয় তার সম্পাদিত দৈনিক দেশ রূপান্তর কার্যালয়ের সামনে। সেখানে কফিন আনার পর সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের মধ্যে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অনেককেই তাদের প্রিয় মানুষটির বিদায়ে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। সেখানে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অপর্ণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুনসহ অন্যান্য সহকর্মী ও সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা অংশ নেন। প্রেস ক্লাবে জানাজা শেষে অ্যাম্বুলেন্সে করে অমিত হাবিবের মরদেহ দাফনের জন্য তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে নিয়ে যাওয়া হয়।

এক সপ্তাহ আগে কর্মস্থলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে লাইফ সাপোর্টে চলে গিয়েছিলেন তিনি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে সেই অবস্থায়ই বৃহস্পতিবার রাতে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। দৈনিক দেশ রূপান্তরের আগে অমিত হাবিব দৈনিক কালের কণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন। এর আগে তিনি যায় যায় দিন ও সমকালের প্রধান বার্তা সম্পাদক এবং ভোরের কাগজের বার্তা সম্পাদক ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর